ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

নির্বাচন ও ইসি

ঢাকার দুই সিটিতে ভোটগ্রহণ শেষ, চলছে গণনা

বাংলানিউজ টিম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৪৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০১৯
ঢাকার দুই সিটিতে ভোটগ্রহণ শেষ, চলছে গণনা ভোটগ্রহণ শেষে এখন চলছে গণনা। ছবি: শাকিল/বাংলানিউজ

ঢাকা: বৈরী আবহাওয়ার মাঝে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র পদে উপ-নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। এ ছাড়া এ সিটির ১৮টি নতুন ওয়ার্ডের সাধারণ নির্বাচন, দুটি ওয়ার্ডে উপনির্বাচন এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটির (ডিএসসিসি) নতুন ১৮টি ওয়ার্ডের সাধারণ নির্বাচনে ভোট দিয়েছেন ভোটাররা। 

বৃহস্পতিবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়ে একটানা বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলে।

ডিএনসিসির রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আবুল কাসেম বাংলানিউজকে বলেন, কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার সম্মুখীন হওয়া ছাড়াই নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে।

কেন্দ্রে কেন্দ্রে ভোট গণনা শুরু হয়েছে। আমরা তাড়াতাড়িই ফল প্রকাশ করতে পারবো বলে আশা করি।

পড়ুন>>ঢাকার সিটি নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক নয়: মাহবুব তালুকদার

এদিকে ঢাকা উত্তরের মিরপুরের পল্লবী, কালশী, রূপনগর, কাফরুল, সেনপাড়াসহ মিরপুর-১ ও ২ নম্বর সেকশনের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ভোটকেন্দ্রগুলোতে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট দিতে দেখা যায় ভোটারদের। তবে সকাল থেকেই ভোটারদের উপস্থিতি তুলনামূলকভাবে কম ছিল।  

একই অবস্থা ছিল ঢাকা দক্ষিণের যাত্রাবাড়ী, ডেমরা, গোড়ান, মান্ডাসহ বিভিন্ন এলাকার।  

সরেজমিনে দেখা যায়, সকাল ১০টা নাগাদ প্রায় ভোটার শূন্য ছিল অনেক কেন্দ্র। এনিয়ে বেশ অবসর ও আলস্যে সময় কাটাতে দেখা যায় ভোটকেন্দ্রে কর্মকর্তাদেরও।

ভোটগ্রহণ কার্যক্রমের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ভোটার কম হওয়ার জন্য বৈরী আবহাওয়াই দায়ী। তবে সকাল ১১টার দিকে আবহাওয়া কিছুটা স্বাভাবিক হলে ভোটারদের উপস্থিতি বাড়তে দেখা যায়। কিন্তু দুপুর দুইটার দিকে আবারও ভারী বৃষ্টিপাত শুরু হলে ভাটা পড়ে ভোটার উপস্থিতিতে।
 
মিরপুর ১২ নম্বর সেকশনের সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজ ভোটকেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার গিয়াস উদ্দীন বাংলানিউজকে বলেন, আমার কেন্দ্রে ৮৬০ জন ভোটার আছেন। এখন পর্যন্ত (দুপুর আড়াইটা) প্রায় ৩০ শতাংশ ভোট কাস্ট হয়েছে। বৃষ্টি থামলে শেষ সময়ে ভোটারদের একটা চাপ পড়তে পারে। আমার কেন্দ্রসহ আশেপাশে কোনো কেন্দ্রে এখন পর্যন্ত কোনো ধরনের গোলযোগের খবর পাইনি।
 
কালশীর সাংবাদিক আবাসিক এলাকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার নির্মন চক্রবর্তী বলেন, আমার কেন্দ্রে মোট ভোটার সংখ্যা এক হাজার ৬৩১। এখন পর্যন্ত (বিকেল সাড়ে তিনটা) প্রায় অর্ধেক সংখ্যক ভোটার তাদের ভোট দিয়েছেন।

কম ভোটার উপস্থিতির মধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে ভোটগ্রহণ।  ছবি: শাওন/বাংলানিউজ ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিরপুর বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার কামাল আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, সকাল থেকে এখন পর্যন্ত সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহণ হয়েছে। কোথাও কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা বা অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। আমরাও পুরোটা সময় কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা বজায় রেখেছি।  

‘ফলাফল ঘোষণার আগে বা পরেও যেন আইনশৃংখলা ব্যবস্থা স্বাভাবিক থাকে সে ব্যাপারেও আমরা সতর্ক আছি। ’
 
এবার ঢাকা উত্তরের মেয়র পদে উপ-নির্বাচনে ৫ জন প্রার্থী অংশ নেন। তারা হলেন- নৌকা প্রতীকে আতিকুল ইসলাম, লাঙ্গল প্রতীকে শাফিন আহমেদ, বাঘ প্রতীকে শাহীন খান, আম প্রতীকে আনিসুর রহমান দেওয়ান ও ঘড়ি প্রতীকে মো. আব্দুর রহিম (স্বতন্ত্র প্রার্থী)।  

সকালে উত্তরার একটি কেন্দ্রে ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আতিকুল ইসলাম জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী বলে জানান।  

তবে জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী শাফিন আহমেদ অভিযোগ করেন, সাম্প্রতিককালের নির্বাচনে অনিয়মের কারণে ভোটাররা আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন। এ কারণে ডিএনসিসি নির্বাচনেও ভোটাররা ভোট দিতে আসছেন না।  

এদিকে ভোটার উপস্থিতির হারের দিকে একই অবস্থা ঢাকা দক্ষিণেও। সেখানকার নতুন ১৮ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নির্বাচনে ভোট শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সম্পন্ন হয়েছে। এখন চলছে গণনা।  

ফলাফল গুলিস্তানে ঢাকা মহানগর নাট্যমঞ্চ থেকে ঘোষণা করা হবে। এজন্য সেখানে একাধিক বুথ তৈরি করা হয়েছে।   এ বিষয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা রকিব উদ্দিন মন্ডল বলেন, ভোটকেন্দ্র থেকে  ফলাফল এলে  মঞ্চ থেকে প্রকাশ করা হবে।

ঢাকা দক্ষিণের ভোটের ফল এখান থেকেই ঘোষণা করা হবে।  ছবি: তামিম/বাংলানিউজ এদিকে সকালে উত্তরার একটি কেন্দ্রে ভোট দেয়ার পর ভোটার উপস্থিতির কম হওয়ার বিষয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদা বলেন, দুই সিটির নির্বাচনে ভোটারের উপস্থিতি যে কম, এর দায় ইসির না। দায় প্রার্থী ও রাজনৈতিক দলগুলোরই।  

নির্বাচনের পরিবেশ স্বাভাবিকই আছে বলে মনে করেন তিনি।  

তবে ভোট শেষ হওয়ার ঘণ্টাখানেক আগে এক সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার বলেন, রাজনৈতিক পরিচয়ে মেয়র পদে নির্বাচন হচ্ছে। কিন্তু প্রধান বিরোধী দলগুলো এতে অংশগ্রহণ না করে এটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নয়। নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক না হলে তাতে ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে যেতে উৎসাহ দেখা যায় না।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০১৯
আরএম/ইইউডি/টিএম/এসএইচএস/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।