ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

নির্বাচন ও ইসি

তফসিল নিয়ে ঐক্যফ্রন্টের পাল্টা দাবি যুক্তফ্রন্টের

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০১৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ৭, ২০১৮
তফসিল নিয়ে ঐক্যফ্রন্টের পাল্টা দাবি যুক্তফ্রন্টের বৈঠক থেকে বেরিয়ে কথা বলছেন মেজর (অব.) মান্নান/ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সঙ্গে বৈঠক করে সংলাপের ফলাফল জেনে তফসিল ঘোষণার দাবি জানিয়েছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। আর তফসিল না পেছানোর দাবি করেছে ঐক্যফ্রন্ট গঠনের প্রক্রিয়া থেকে সরে আসা একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর যুক্তফ্রন্ট।

মঙ্গলবার (৬ নভেম্বর) সন্ধ্যায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নূরুল সঙ্গে বৈঠকে লিখিতভাবে এ দাবি উপস্থাপন করে যুক্তফ্রন্টের প্রতিনিধি দল।

বিকল্প ধারা বাংলাদেশের মহাসচিব মেজর (অব.) আব্দুল মান্নানের নেতৃত্বে ওই প্রতিনিধি দলে রয়েছেন বিকল্প ধারার প্রেসিডিয়াম সদস্য গোলাম সরোয়ার মিলন, বাংলাদেশ ন্যাপ চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি, মাজহারুল হক শাহ চৌধুরী, ব্যারিস্টার ওমর ফারুক ও মাহমুদা চৌধুরী।

 

সিইসির কাছে যুক্তফ্রন্ট লিখিত আকারে যেসব দাবির কথা বলেছে, তার মধ্যে রয়েছে- সমস্ত জাতি অবাধ ও সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। এজন্য নির্বাচন কমিশনকে সাংবিধানিক ক্ষমতা প্রয়োগ করতে হবে। এতে ব্যর্থ হলে জাতি ক্ষমা করবে না। সংসদ নির্বাচনের তফসিল অকারণে বিলম্ব হলে জাতির মধ্যে সংশয়, বিভ্রান্তি ও হতাশার সৃষ্টি হবে- যা কোনোভাবেই কাম্য নয়।
 
আরও বলা হয়, জাতির প্রত্যাশা যাতে কোনো রকম অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির উদ্ভব না হয়- সেটা দেখা নির্বাচন কমিশনের সাংবিধানিক ও নৈতিক দায়িত্ব। এই সময়ে জনগণের অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবির প্রতি যুক্তফ্রন্টের সমর্থন রয়েছে। সরকার বা অন্য কোনো জোটের চাপ বা ভয়-ভীতি প্রদর্শন করলে যুক্তফ্রন্ট ও জনগণের প্রত্যাশা এতে নির্বাচন কমিশন মাথানত করবে না।
 
লিখিত দাবিনামায় আরো বলা হয়েছে- নির্বাচন কমিশনা তফসিল ঘোষণার পর শতভাগ রাষ্ট্রপতির অধীন। নির্বাচনের সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত কর্মচারীদের নির্বাচন কমিশনের অধীন করতে হবে। তফসিল ঘোষণার পর সংসদ সদস্যরা যেন সংশ্লিষ্ট এলাকায় কোনো প্রকল্পের উদ্বোধন বা প্রতিশ্রুতি দিতে না পারেন সে বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে হবে। সংসদ সদস্যদের সুযোগ-সুবিধা ও সরকারি দলের প্রার্থীদের বিলবোর্ড, ব্যানার, পোস্টার অবিলম্বে অপসারণ করতে হবে।
 
বৈঠক থেকে বেরিয়ে আব্দুল মান্নান সাংবাদিকদের বলেন, কোনো দল বা কারো দাবির পরিপ্রেক্ষিতে অকারণে যাতে তফসিল পেছানো না হয় আমরা সে দাবি করেছি। জবাবে সিইসি জানিয়েছেন, তফসিল পেছানো হবে না।
 
মান্নান বলেন, দু’চারটা কেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন ব্যবহার করে অযথা প্রশ্ন সৃষ্টি করার মানে হয় না। অল্পকিছু কেন্দ্রে ব্যবহার করে কেন নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ করবেন। আমরা রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাতেও ইভিএম ব্যবহার না করার অনুরোধ করবো।
 
সেনা মোতায়েনের বিষয়ে তিনি বলেন, স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে না দিয়ে সেনাবাহিনীকে মোবাইল টিম বা পুলিশের মতো করে মাঠে নামাতে বলেছি। সিইসি বলেছেন, প্রতি কেন্দ্রে একজন করে হলে ৪০ হাজার আর পাঁচজন করে হলে ২ লাখ সেনা সদস্য নিয়োজিত করতে হবে। সেটা সম্ভব নয়।
 
বৈঠকে চার নির্বাচন কমিশনার, ইসি সচিব ও সংস্থাটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও অংশ নেন।
 
৮ নভেম্বর সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবে নির্বাচন কমিশন।
 
রাজনৈতিক দলগুলো সরকার ও ইসির সঙ্গে ধারাবাহিক আলোচনায় বসছে। ৭ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দ্বিতীয়বারের মতো জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে সংলাপে বসবেন। আর সিইসির সঙ্গে এদিন বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে জাতীয় পার্টির।
 
ইতোমধ্যে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ৭ নভেম্বরের পর আর সংলাপ হবে না। আর প্রধানমন্ত্রী সংলাপ শেষে সংবাদ সম্মেলনে ফলাফল জানাবেন।
 
নির্বাচন ও তফসিল পেছানো বা না পেছানোর এ আলোচনার মধ্যে সিইসি কেএম নূরুল হুদা মঙ্গলবার সকালে সাংবাদিকদের বলেন, দলগুলোর মতামতের ভিত্তিতে নির্বাচন পেছাতে পারে। কিন্তু নির্বাচনের তফসিল পেছাবে না।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৯১০ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৬, ২০১৮
ইইউডি/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।