ঢাকা, শনিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

নির্বাচন ও ইসি

সংসদ নির্বাচনের আগেই আসছে ৮০ হাজার ইভিএম

ইকরাম-উদ দৌলা, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫১২ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৯, ২০১৮
সংসদ নির্বাচনের আগেই আসছে ৮০ হাজার ইভিএম ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: সংসদ নির্বাচনে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারের সব প্রস্তুতি নিয়ে রাখছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। যার ধারাবাহিকতায় ৮০ হাজার মেশিন প্রস্তুত করছে সংস্থাটি।
 

সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের জন্য বর্তমানে কোনো আইন ইসির নেই। যে কারণে ইতিমধ্যে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ সংশোধনের জন্য পাঠিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

সংসদের চলতি অধিবেশনে আইনটি পাস না হলে অধ্যাদেশের মাধ্যমে আরপিও সংশোধনের সুযোগ থাকছে বলে বাংলানিউজকে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম। সেক্ষেত্রে সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে ইভিএম ব্যবহার করা হবে।

সূত্রগুলো জানিয়েছে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যবহারের জন্যই ৮০ হাজার ইভিএম প্রস্তুত করা হচ্ছে। শিগগিরই মেশিনগুলো প্রস্তুত করে করে দেবে বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরি।

 

ইসির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ভোটগ্রহণের জন্য এবার ৪২ হাজার ২শ ভোটকেন্দ্র নির্ধারণ করা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে ১০ শতাংশ কেন্দ্রে ইভিএম দিয়ে ভোট নেওয়া যাবে।

প্রস্তুতি এমন থাকলেও কর্মকর্তা বলছেন, ১০ শতাংশ কেন্দ্রে ব্যবহারের মতো সক্ষমতা নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নেই। কেননা, এজন্য যত লোকবলের প্রয়োজন তার যোগান দেওয়া যাবে না।

এদিকে নির্বাচনে ইভিএমের সঠিক ব্যবহারের জন্য ইতিমধ্যে প্রশিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া শেষ করেছে ইসি। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর প্রশিক্ষকরা মাঠ কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দেবেন।

দেড় লাখ ইভিএম কেনার জন্য একটি প্রকল্প নিতে পরিকল্পনা কমিশনে ইসি দেওয়া প্রস্তাব প্রক্রিয়াধীন। এখনো অর্থছাড় হয়নি। নির্বাচন কমিশন সংসদ নির্বাচনে ব্যবহারের জন্য তার আগেই বিএমটিএফ থেকে ইভিএম প্রস্তুত করে নিচ্ছে। যে বিষয়টিই নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের বিষয়ে ইসির দৃঢ়তাকে নির্দেশ করে বলেও কর্মকর্তাদের অভিমত।

বিএমটিএফ এরইমধ্যে ৫শ’র মতো ইভিএম প্রস্তুত করে দিয়েছে। প্রতিটি মেশিনের দাম পড়ছে ২ লাখ ১০ হাজার টাকা। যে মেশিনগুলো এটিএম শামসুল হুদা কমিশনের সময়কার ইভিএমের চেয়ে অনেক বেশি সুরক্ষা নিশ্চিত করবে বলে দাবি করছে নির্বাচন কমিশন।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদা ইতিমধ্যে গণমাধ্যমকে বলেছেন, আগের চেয়ে বর্তমানের ইভিএম অনেক বেশি উন্নতমানের। এর মাধ্যমে ভোটে কারচুপি করা সম্ভব নয়।

২০১০ সালে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের মাধ্যমে বড় পরিসরে ইভিএম ব্যবহারের দিকে যায় নির্বাচন কমিশন। তবে এর ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে পারেনি কাজী রকিবউদ্দীন আহমদের কমিশন। ২০১৩ সালে রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে একটি মেশিন বিকট হলে তার কারণ উদ্ধার এবং সমস্যা সমাধানও করতে পারেনি। ফলে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের তৈরি করে দেওয়া সম্পূর্ণ দেশীয় ওই ইভিএমগুলো আর ব্যবহার করেনি তারা। তবে ২০১৬ সালে মেয়াদ পূর্তির আগে রকিব কমিশন উন্নতমানের ইভিএম ব্যবহারের পরিকল্পনা হাতে নেয়। যার ধারাবাহিকতায় কেএম নূরুল হুদা কমিশন বিএমটিএফের কাছ থেকে অধিকতর উন্নত ইভিএম প্রস্তুত করে নিচ্ছে। এক্ষেত্রে চিন থেকে যন্ত্রাংশ এনে বাংলাদেশ প্রস্তুত করা হচ্ছে মেশিনগুলো।

আগামী ডিসেম্বরে দ্বিতীয়ার্ধে অনুষ্ঠেয় একাদশ সংসদ নির্বাচনে সেই মেশিনগুলো দিয়েই নূরুল হুদা কমিশন ভোটগ্রহণের চিন্তা করছে। ২০১০ সালে যখন শামসুল হুদা কমিশন ইভিএম ব্যবহারের প্রচলন শুরু করে, তখন ২০১৯ সালের সাধারণ নির্বাচনে তথা একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের পরিকল্পনা করেছিল। তবে তার আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে এটি ব্যবহারের মাধ্যমে রাজনৈতিক দল ও ভোটারদের আস্থা তৈরির ওপর জোর দেওয়া হয়েছিল।

নতুন এই ইভিএম দিয়ে রংপুর, খুলনা, রাজশাহী, সিলেট, বরিশাল ৩০টির মতো কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ করা হয়েছে। এতে ভোটারদের স্বতস্ফূর্ততা লক্ষ্য করা গেছে।

বাংলাদেশ সময়: ০১০৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৯, ২০১৮
ইইউডি/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।