ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

ভোটের-কথা

খুলনা আসন দুই, মিজান-মঞ্জু কাতলা-রুই

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩১৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০১৮
খুলনা আসন দুই, মিজান-মঞ্জু কাতলা-রুই মিজানুর রহমান ও নজরুল ইসলাম (ফাইল ফটো)

খুলনা: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সারা দেশে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বিএনপিতে সম্ভাব্য প্রার্থীর ছড়াছড়ি। যার ব্যতিক্রম খুলনা-২ (খুলনা সদর ও সোনাডাঙ্গা) আসনে। এ আসনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপিতে সম্ভাব্য বা অনেকটা চূড়ান্ত প্রার্থী একজন করে।

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য খুলনা মহানগর আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মিজান। সংসদের বাইরে থাকা বিএনপির প্রার্থী কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও খুলনা মহানগর বিএনপির সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু।

প্রচার-প্রচারণায়ও এ দুজনের বাইরে আর কারও দেখা মিলছে না। যে কারণে অনেকে বলছেন, ‘খুলনা আসন দুই, মিজান-মঞ্জু কাতলা-রুই। ’

বিভিন্ন সময় মিজান ও মঞ্জুর স্থানে কেউ আসতে চাইলেও দলীয় সিদ্ধান্তে তাদের সরে যেতে হয়েছে। বিগত দিনে মঞ্জুর বিকল্প বিসিবির সাবেক চেয়ারম্যান আলী আসগর লবী আসতে চাইলেও দল তাকে সে সুযোগ দেয়নি। অনুরূপভাবে চলতি বছরের শুরুতে মিজানের জায়গায় তারকা ফুটবলার বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফেকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) সাবেক সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদীর আসার গুঞ্জন শোনা যায়। কিন্তু খুলনা-৪ আসনের সংসদ সদস্য এস এম মোস্তফা রশিদী সুজার মৃত্যুর পর ওই আসনের সম্প্রতি উপ-নির্বাচনে সালাম মুর্শেদীকে আওয়ামী লীগ মনোনয়ন দেয়। তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ধারণা করা হচ্ছে তাকেই একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও ওই আসন থেকে মনোনয়ন দেওয়া হবে।

আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে খুলনা-২ আসনে আ’লীগ ও বিএনপির একক প্রার্থী মিজান ও মঞ্জুর নাম আলোচিত হচ্ছে শহরজুড়ে।

পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, এ আসনটি বলা যায় বিএনপির ঘাঁটি। স্বাধীনতার পরবর্তী বিএনপির দখলে রাখা এ আসনটি পুনরুদ্ধারে মরিয়া তারা। আবার ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ আসনটি ধরে রাখতে চাইছে।

আওয়ামী লীগের নির্বাচিত সংসদ সদস্য বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে বিভিন্ন সভা ও অনুষ্ঠানে যোগদান করছেন। তবে বিএনপির প্রার্থী বেশি ব্যস্ত রয়েছেন দলের চেয়রাপারসনের মুক্তির আন্দোলনে।

স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে মাত্র দুই বার এ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বিজয়ী হয়েছে। বিগত দিনে এ আসনে বিএনপিরই প্রাধান্য দেখা গেছে। ১৯৭৩ সালে আওয়ামী লীগের এম এ বারী, ১৯৭৯ সালে মুসলিম লীগের খান এ সবুর, ১৯৮৬ সালে জাতীয় পার্টির মো. মহসীন সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯১ ও ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে শেখ রাজ্জাক আলী (বর্তমানে মৃত) বিএনপির টিকিটে নির্বাচন করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। ১৯৯১ সালে জয়ী হওয়ার পর তাকে জাতীয় সংসদের স্পিকার করেছিলো বিএনপি সরকার। ২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া নির্বাচন করে বিজয়ী হন। এরপর তার ছেড়ে দেওয়া আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন মহানগর বিএনপির তৎকালীন মহানগর আহবায়ক আলী আসগর লবী।

আর ২০০৮ সালের নির্বাচনে বিএনপির নজরুল ইসলাম মঞ্জু ৯০ হাজার ৯৫০ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের মিজানুর রহমান মিজান পেয়েছিলেন ৮৯ হাজার ২৮০ ভোট। ভোটের ব্যবধান ছিল মাত্র ১ হাজার ৬৭০। সবশেষ ২০১৪ সালের নির্বাচন বয়কট করে বিএনপি, সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের মিজানুর রহমান মিজান।

আওয়ামী লীগ নেতা মিজানুর রহমান মিজান বাংলানিউজকে বলেন, আমি আশা করি এ আসনে আমি প্রার্থী হতে পারবো। আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি আছে। আমাদের পক্ষ থেকে জাতীয় নির্বাচনে যে যে কার্যক্রমগুলো করতে হবে তা প্রধানমন্ত্রীর দিক নির্দেশনা অনুযায়ী এবং আমাদের দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা সেই কাজগুলো শুরু করেছি। এবং আমরা সেটা সম্পন্ন করবো, আমরা অবশ্যই বিজয় অর্জন করবো।

এ সরকারের খুলনাঞ্চলের উন্নয়ন মানুষ অনুধাবন করে আবার আমাদের ভোট দেবে বলে আশা করেন মিজান।

বিএনপি নেতা নজরুল ইসলাম মঞ্জু বাংলানিউজকে বলেন, বিএনপির দাবি অনুযায়ী যদি নির্বাচন না হয় সে ক্ষেত্রে নির্বাচনে যাওয়ার কোনো আগ্রহ নেই। নির্বাচনের প্রস্তুতি ও প্রক্রিয়া চলছে। বিএনপি নির্বাচনে গেলে আমাকে মনোনয়ন দেবে ও আমি নির্বাচন করবো।

এদিকে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির বাইরে চরমোনাই পীরের নেতৃত্বাধীন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী হিসেবে আরিফ বিল্লাহ এর নাম শোনা যাচ্ছে।

অন্যদিকে জাতীয় পার্টি, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), ওয়ার্কার্স পার্টি, জাসদ, বাসদ, ন্যাপ, খেলাফত মজলিস, জেপির কোনো প্রার্থীর নাম শোনা বা প্রচার-প্রচারণা দেখা যাচ্ছে না।
 
খুলনা জেলা নির্বাচন অফিসের তথ্যানুযায়ী, খুলনা-২ (সদর-সোনাডাঙ্গা) আসনের সদর থানায় মোট ভোটার ১ লাখ ৬৮ হাজার ৮১০ জন। সোনাডাঙ্গা থানায় মোট ভোটার ১ লাখ ২৫ হাজার ২৭৯ জন।

বাংলাদেশ সময়: ০৯১৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০১৮
এমআরএম/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।