ঢাকা, শুক্রবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

নির্বাচন ও ইসি

খুলনায় নির্বাচন কমিশন ব্যর্থ: সুজন

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬৫৫ ঘণ্টা, মে ২২, ২০১৮
খুলনায় নির্বাচন কমিশন ব্যর্থ: সুজন সুশাসনের জন্য নাগরিকের অনুষ্ঠানে বক্তারা

ঢাকা: খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে নির্বাচন কমিশন (ইসি) ব্যর্থ হয়েছে বলে মনে করে বেসরকারি গবেষণাসংস্থা সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)। কয়েকটি ভালো নির্বাচনের পর খুলনায় একটি অস্বচ্ছ ও ত্রুটিপূর্ণ নির্বাচনের দৃষ্টান্ত স্থাপিত হয়েছে বলে দাবি সংস্থাটির।

মঙ্গলবার (২২ মে) রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে 'খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিজয়ীদের তথ্য উপস্থাপন ও সুজন-এর দৃষ্টিতে নির্বাচন' শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিমত তুলে ধরে সুজন।  

সংবাদ সম্মেলনে সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, খুলনা সিটি নির্বাচনে ইসি ব্যর্থ হয়েছে।

নারায়ণগঞ্জ, রংপুর, কুমিল্লার অর্জন খুলনায় ম্লান হয়ে গেছে। ইসি প্রার্থীদের হলফনামা পর্যবেক্ষণ করেনি। রিটার্নিং কর্মকর্তাকে ক্ষমতাহীন করেছে। পুলিশবাহিনী ইসির অধীন, এটাই তো তারা জানে না। এমন ধরপাকড় কেউ আগে কখনো দেখেনি।

সুজনের লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, সর্বশেষ তিনটি সিটি নির্বাচন অর্থাৎ নারায়ণগঞ্জ,  কুমিল্লা ও রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের সঙ্গে তুলনা করলেও বলা যায় যে, কয়েকটি ভালো নির্বাচনের পর খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের মধ্য দিয়ে একটি অস্বচ্ছ ও ত্রুটিপূর্ণ নির্বাচনের দৃষ্টান্ত স্থাপিত হলো।

সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচনকালীন নেতিবাচক চিত্র তুলে ধরে লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, কিছু কিছু ক্ষেত্রে অনেক ভোটার ভোট দিতে পারেননি। কোনো কোনো কেন্দ্রে প্রতীকে সিল দেয়া কিন্তু উল্টো দিকে সিল-স্বাক্ষর বিহীন ব্যালটকে বৈধ ভোট হিসেবে গণনা করা হয়েছে। একই সাথে পুরো নির্বাচনপ্রক্রিয়া স্বচ্ছ, কারসাজিমুক্ত ও বিশ্বাসযোগ্য ছিল না। এই নির্বাচনে দৃশ্যত বড় কোনো অঘটন ও সহিংসতা ছাড়া অনুষ্ঠিত হলেও নির্বাচনের স্বচ্ছতা ও সুষ্ঠুতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।  

লিখিত বক্তব্যে আরো বলা হয়, অনেক ভোটকেন্দ্রে বিরোধী দলের পোলিং এজেন্ট না থাকা, কেন্দ্র দখল, জাল ভোটদান, সিল-স্বাক্ষরবিহীন ব্যালটে প্রদত্ত ভোটকে বৈধ ভোট হিসেবে গণ্য করা, কেন্দ্রের সামনে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীর কর্মী কর্তৃক জটলা সৃষ্টি করে কোনো কোনো ভোটারের জন্য প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা, অনেক ভোটারের ভোট দিতে না পাড়া, নির্বাচনের আগে থেকেই বিরোধী দলের প্রার্থী সমর্থকদের গ্রেফতার ও হয়রানি করা, রিটার্নিং অফিসারের ওপর যুগ্ম সচিব পদ মর্যাদার একজন কর্মকর্তাকে সহায়তাকারী হিসেবে নিয়োগ করা, নির্বাচন পর্যবেক্ষণ নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তার ওপর চড়াও হওয়া ইত্যাদি ঘটনা এ নির্বাচনকে প্রশ্নের মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে।  

নির্বাচন কমিশনের ভূমিকার বিষয়ে বলা হয়েছে, কমিশনের প্রস্তুতি ভালো ছিল বলা হলেও এক পর্যায়ে এসে রিটার্নিং অফিসারের বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপিত হলে রিটার্নিং অফিসারকে সহায়তার জন্য যুগ্ম সচিব পদমর্যাদার একজনকে খুলনা পাঠানো হয়। বিষয়টি একদিকে যেমন নজিরবিহীন, পাশাপাশি তা কতটুকু যৌক্তিক ও আইনসম্মত তা নিয়ে বিস্তর প্রশ্ন রয়েছে। এর মাধ্যমে রিটার্নিং কর্মকর্তাকে নিষ্ক্রিয় করে ফেলা হয়েছে।  

সুজনের সভাপতি এম হাফিজ উদ্দিন খানের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার, নির্বাহী সদস্য ড. তোফায়েল আহমেদ, সৈয়দ আবুল মকসুদ। লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সুজনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী দিলীপ কুমার সরকার।

বাংলাদেশ সময়: ১২৫০ ঘণ্টা, মে ২২, ২০১৮/আপডেট: ১৩১৯ ঘণ্টা
আরএম/এমজেএফ/জেএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।