ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

নির্বাচন ও ইসি

নির্বাচনী প্রচারণায় শিশু!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৫৩ ঘণ্টা, মে ১, ২০১৮
নির্বাচনী প্রচারণায় শিশু! শিশুদের হাতে ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে হ্যান্ড মাইক এবং প্রার্থীর হ্যান্ডবিল। ছবি: বাংলানিউজ

খুলনা: ‘এই, মার্কা কি আছে?’ ‘আছে।’ ‘কোন সে মার্কা?’, ‘লাটিম!’ ‘এবার ভোটে জিতবে কে’, ‘রশিদ ভাই ছাড়া আবার কে?’ তপ্ত রোদে গলা ফাটিয়ে এভাবেই স্লোগান দিচ্ছিলো একদল, সাধারণ রাজনৈতিক কর্মী নয়, কোমলমতি শিশু। যাদের সবার বয়স ১০ বছরের নিচে। সামনে হ্যান্ড মাইক হাতে একজন স্লোগান তুলছে। পেছন পেছন সারিবদ্ধভাবে কয়েক জন হাঁটছে আর বিলি করছে পোস্টার-লিফলেট। এদের কারও কারও শরীরের সামনে পেছনেও ঝুলছে পোস্টার।

শ্রমিক দিবসের দিন মঙ্গলবার (১ মে) বিকেলে খুলনা মহানগরীর সোনাডাঙ্গার বয়রা ক্রস রোডে কাউন্সিলর প্রার্থী মো. আব্দুর রশিদের সমর্থনে এ শিশুদের নির্বাচনী প্রচারণায় দেখা যায়। আসন্ন খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ১৭ নং ওয়ার্ডে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত প্রার্থী হিসেবে লড়বেন আব্দুর রশিদ।

অনুরূপভাবে ১ নং ওয়ার্ডের রানার মাঠের বস্তির শিশুদেরও হাতে হাতে দেখা যায় বিভিন্ন প্রার্থীর নির্বাচনী হ্যান্ডবিল। তাদের দেখা যায় এসব হ্যান্ডবিল বিতরণ করতে।

নির্বাচনী কাজে হ্যান্ড মাইকসহ শিশুদের এ প্রচারণাকে ভালো চোখে দেখছেন না সচেতন মহল। তারা নির্বাচনী কর্মকাণ্ডে শিশুদের ব্যবহারের সমালোচনা করে বলছেন, রাজনৈতিক দলগুলো মিছিলসহ বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে শিশুদের ব্যবহার করছে। বিশেষ করে বস্তিতে বসবাস করা শিশুদের ব্যবহার করা হচ্ছে বেশি। সামান্য কিছু অর্থের বিনিময়ে তাদের দিয়ে প্রার্থীরা প্রচারণার কাজ করছে। যা কোনওভাবেই কাম্য নয়।

বয়রা ক্রস রোডের বাসিন্দা নাসির উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, লাটিম প্রতীকের প্রার্থী ছেলে ও মেয়ে শিশু দিয়ে নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে সমালোচিত হয়েছেন। জাতীয় শিশুনীতিতে এ ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে শিশুদের ব্যবহার পুরোপুরি নিষিদ্ধ। তারপরও খাবার/টাকা দিয়ে প্রলুব্ধ করে কেবল স্বার্থ হাসিলের জন্য শিশুদের ব্যবহার করা হচ্ছে। এতে শিশুদের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।

এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কাউন্সিলর প্রার্থী আব্দুর রশিদ বাংলানিউজকে বলেন, বিষয়টি আমি জানি না। খোঁজ নিয়ে দেখছি।

বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থা খুলনা ইউনিটের সমন্বয়কারী অ্যাডভোকেট মোমিনুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, শিশুদের রাজনৈতিক কাজে বিশেষত নির্বাচনকালীন প্রচারণায় ব্যবহার করা ঝুঁকিপূর্ণ। এটি শিশুদের অধিকারের লঙ্ঘন। এছাড়া মিছিলের অগ্রভাগে মানবঢাল হিসেবে শিশুদের ব্যবহার করলে যে কোনও হামলার শিকার হয় শিশুরা।

নির্বাচনী প্রচারণাসহ রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে শিশুদের ব্যবহার বন্ধে কঠোর আইন করার দাবি জানান তিনি।

আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ও রির্টানিং অফিসার মো. ইউনুচ আলী বাংলানিউজকে বলেন, নির্বাচনী প্রচারণায় শিশুদের ব্যবহার সম্পর্কে স্পষ্ট কিছু না থাকলেও শিশুনীতিতে এ ধরণের কাজ বেআইনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৮ ঘণ্টা, মে ০১ , ২০১৮
এমআর/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।