ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

নির্বাচন ও ইসি

বয়কট আর দেখতে চান না নির্বাচন বিশেষজ্ঞরা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪১৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ৬, ২০১৮
বয়কট আর দেখতে চান না নির্বাচন বিশেষজ্ঞরা নির্বাচন বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় মতামত দেন বিশেষজ্ঞরা

ঢাকা: চলতি বছরের শেষ দিকেই শুরু হবে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কর্মযজ্ঞ। আর এ নির্বাচন কোনো দল বয়কট করুক তা আর দেখতে চান না নির্বাচন বিশেষজ্ঞরা।

তাদের মতে, নির্বাচন বয়কট বা বর্জন করে কেউ কখনো সফল হতে পারেনি। এটা রাষ্ট্রের জন্য ক্ষতিকর।


 
শুক্রবার (০৬ এপ্রিল) প্রেস ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ (পিআইবি) আয়োজিত নির্বাচন বিষয়ক এক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় অংশ নিয়ে এমন মন্তব্য করেন সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার এটিএম শামসুল হুদা।  

বাংলাদেশের নির্বাচনের ইতিহাসে বেশ কিছু ইতিবাচক পরিবর্তন তার হাত ধরে হয়েছে। অনেক আইনি সংস্কার, নির্বাচন কমিশনের (ইসি) প্রশাসনিক সংস্কারসহ নানা কর্মযজ্ঞের জন্য তার কমিশন আজও প্রশংসিত।
 
এটিএম শামসুল হুদা বলেন, সবগুলো দলকেই নির্বাচনে আসতে হবে। নির্বাচন হতে হবে অংশগ্রহণমূলক। সবাই অংশ না নিলেই বরং লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড বিঘ্নিত হবে। সরকারেরও এমন কিছু করা উচিত হবে না, যাতে কেউ নির্বাচনে অংশ নেওয়া থেকে বিরত থাকে। আমরা নির্বাচন বর্জনের পুনরাবৃত্তি দেখতে চাই না। নির্বাচন কমিশন ‘গুড এনাফ’। নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণ করা উচিত। নির্বাচন বর্জন করার একটা ফেনোমেনা তৈরি হয়েছে। এটা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।
 
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের সময়কার প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ বলেন, নির্বাচন বর্জন করে জনগণের কাছে যাওয়া যায় না। রাজনৈতিক দলের কাজ হলো জনগণের কাছে যাওয়া। তাদের সঙ্গে থাকা। তাই সবাইকে নির্বাচনে অংশ নিতে হবে। আর অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের দায়িত্ব সবার। সব স্টেকহোল্ডারের।
 
সাবেক আরেক নির্বাচন কমিশনার আবদুল মোবারক বলেন, নির্বাচন বর্জন করে আজ পর্যন্ত কেউ সফল হতে পারেনি। ভারত বর্ষের ১৯২০ সালের নির্বাচনে মহাত্মা গান্ধী ও মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ নির্বাচন বয়কট করেছিলেন। সে নির্বাচনে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় ১৮৮ জন প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছিলেন। ৭০ সালের নির্বাচন বর্জন করেছিলেন মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী। ২০১৪ সালেও একটি বড় দল নির্বাচন বয়কট করেছিল। তারাও সফল হতে পারেনি। তাই সব দলের উচিত নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা। অন্যথায় অনেক ক্ষতি হয়ে যায়।
 
পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (পিএসসি) বর্তমান চেয়ারম্যান ও সাবেক নির্বাচন কমিশন সচিব ড. মোহাম্মদ সাদিক বলেন, সব দল নির্বাচনে এলে ইসির পক্ষে দায়িত্ব পালন করা সহজ হয়ে যায়। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে সময় যে সহিংস কর্মকাণ্ড চালানো হয়েছিল, সে অবস্থায় সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল ১৮ হাজার ৫০০ কেন্দ্রে নির্বাচনী উপকরণ পৌঁছানো।
 
‘ইসির সদিচ্ছার কোনো অভাব নেই। আইন ও বিধি ছাড়া এই সংস্থাটির কোনো কিছু করারও নেই। হ্যাঁ, দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করলে একটা ভেন্টিলেশন হয়। কিন্তু কোনো কনক্লুশনে আসা যায় না। রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত রাজনৈতিকভাবে আসলেই ভালো হয়। একটি নির্বাচনে ৭ লাখ লোকের প্রয়োজন হয়। এতো নিরপেক্ষ লোক খুঁজে বের করতে কেউ পারবে না। ইসি তার চেষ্টাটা করে থাকে। তাই দলগুলোর দায়িত্ব ইসিকে সহায়তা করা। ’
 
তিন দিনব্যাপী এ কর্মশালার নির্বাচন কমিশনে কর্মরত ৩৫ জন সাংবাদিক অংশগ্রহণ করেছেন। যাদের মধ্যে শনিবার (০৭ এপ্রিল) সমাপনী অনুষ্ঠানে সনদ তুলে দেবেন বর্তমান প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদা।

বাংলাদেশ সময়: ২০১৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৬, ২০১৮
ইইউডি/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।