ঢাকা, শনিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

নির্বাচন ও ইসি

স্বতন্ত্র প্রার্থী পবনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ইসিতে রিটার্নিং কর্মকর্তার সুপারিশ 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৪০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩১, ২০২৩
স্বতন্ত্র প্রার্থী পবনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ইসিতে রিটার্নিং কর্মকর্তার সুপারিশ 

লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুর-১ (রামগঞ্জ) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী কেন্দ্রীয় যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মো. হাবিবুর রহমান পবনের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক ও জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা সুরাইয়া জাহান নির্বাচন কমিশন বরাবর লিখিত দিয়েছেন।

 

রোববার (৩১ ডিসেম্বর) বিকেলে জেলা প্রশাসক সুরাইয়া জাহান হুমকি এবং অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে শনিবার (৩০ ডিসেম্বর) ইসি বরাবর স্বতন্ত্র প্রার্থীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে সুপারিশ করেন।  

সুপারিশ পত্রে বলা হয়, নির্বাচন কার্যক্রম শুরু থেকে লক্ষ্মীপুর-১ আসনের ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. হাবিবুর রহমান পবনের আচরণের বিষয়ে সময়ে সময়ে মৌখিকভাবে অবহিত করা হয়। কিন্তু এ স্বতন্ত্র প্রার্থী রিটার্নিং অফিসারকে হোয়াটসঅ্যাপে হুমকি প্রদানের ঘটনায় নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সব কর্মকর্তা উৎকণ্ঠা প্রকাশ করেছেন। নির্বাচনী দায়িত্ব পালনে তাদের মধ্যে ভয়-ভীতি ও শঙ্কা কাজ করছে।

সুপারিশ পত্রে আরও বলা হয়, ১৯৭২-এর ৮৪ক অনুচ্ছেদ অনুসারে লক্ষ্মীপুর-১ সংসদীয় আসনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান পবন (প্রতীক-ঈগল) অপরাধ করেছেন। তার অপরাধের গুরুত্ব বিবেচনায় এবং নির্বাচনের সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ অবস্থা বজায় রাখাসহ মাঠ পর্যায়ে নির্বাচনের দায়িত্বপালনকারী কর্মকর্তাদের মনোবল অক্ষুণ্ন রাখার স্বার্থে ব্যবস্থা নেওয়া হোক।

জানা গেছে, লক্ষ্মীপুর-১ (রামগঞ্জ) আসনের স্বতন্ত্র পদপ্রার্থী মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান পবন শনিবার (৩০ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা সাতটা ২২ মিনিটে লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক সুরাইয়া জাহানকে হোয়াটসঅ্যাপে ফোন করেন। এ সময় তিনি ফোন কলে নির্বাচনী বিভিন্ন অভিযোগের বিষয়ে আলোচনার উচ্চবাক্য শুরু করেন। এক পর্যায়ে তিনি বিভিন্ন বিষয় নিয়ে অকথ্য ভাষায় আপত্তিকর বক্তব্য দেন।

লক্ষ্মীপুর-১ আসনের নির্বাচনের সার্বিক পরিস্থিতি ইসি বরাবর জেলা প্রশাসক পক্ষ থেকে বলা হয়, চলমান দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জেলা প্রশাসক রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। রিটার্নিং কর্মকর্তার নেতৃত্বে নির্বাচনী এলাকায় পুলিশ, এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট, বিজিবি, র‍্যাব, আনসার, কোস্টগার্ডসহ জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা, প্রিসাইডিং অফিসার, পোলিং অফিসার ও অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নির্বাচনী দায়িত্ব পালন কাজে নিয়োজিত রয়েছে। সবার সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে লক্ষ্মীপুর জেলার চারটি সংসদীয় আসনে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন আয়োজনের যথাযথ প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। এ ছাড়াও জেলার আইনশৃঙ্খলা ও নির্বাচনী পরিবেশ এখন পর্যন্ত স্বাভাবিক রয়েছে। প্রার্থীদের সহাবস্থান নিশ্চিতে নির্বাচনী এলাকায় জেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যৌথ টহল চলমান রয়েছে।

ইসি বরাবর জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে আরও বলা হয়, স্বতন্ত্র প্রার্থী তার বক্তব্যে রিটার্নিং অফিসার ও পুলিশ সুপারকে তিন দিনের মধ্যে বদলিসহ বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে মন্তব্য করেন ও হুমকি দিয়ে বলেন, ‘আপনার সব কথা রেকর্ড হচ্ছে। আমি বুঝে গেছি আপনারা থাকলে আমি নির্বাচন করতে পারব না। আপনি যা যা বলেছেন কিছুই করেননি। আমি (স্বতন্ত্র প্রার্থী) আপনাকে (২৮ ডিসেম্বর) ১২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছিলাম। দৃশ্যমান কিছুই করেন নাই, কোনো আসামি গ্রেপ্তার হয়নি। কোনো অভিযোগ দিলে আপনি পাঠান এসপির কাছে, এসপি পাঠায় আপনার কাছে। এসপি আমাকে আইন দেখায়। আপনি আর এসপি এখানে কীভাবে কাজ করেন তা আমি দেখে নিব। আপনি আর এসপি আগামী তিন দিনের মধ্যে এর ফলাফল জানতে পারবেন। আপনারা জানেন না আমি কোথায় যেতে পারি। আগামীকাল নির্বাচন কমিশনে যাবো, আপনারা কীভাবে এখানে থাকেন তা আমি দেখবো।  

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক ও জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা সুরাইয়া জাহান বলেন, বিষয়টি আমি নির্বাচন কমিশনকে জানিয়েছি। এর বেশি কিছু বলতে চাচ্ছি না। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশন ব্যবস্থা নেবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩১, ২০২৩
এসএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।