ঢাকা, সোমবার, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫

নির্বাচন ও ইসি

বরিশালের দুটি আসনে অর্ধেক প্রার্থীরই সম্পদ কোটি টাকার ওপরে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৩৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৫, ২০২৩
বরিশালের দুটি আসনে অর্ধেক প্রার্থীরই সম্পদ কোটি টাকার ওপরে রাশেদ খান মেনন ও তালুকদার মো. ইউনুস

বরিশাল: বরিশাল জেলার ৬ আসনে ৪৫ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে এরই মধ্যে।  যারমধ্যে ১-২ আসনে ১৪ জন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ হয়েছে।

মনোনয়নপত্রের সঙ্গে জমা দেওয়া হলফনামা অনুসারে, বরিশাল-১ ও বরিশাল-২ আসনের মধ্যে ধনী প্রার্থী রয়েছেন অনেকেই। এর মধ্যে আবার অর্ধেক প্রার্থীরই সম্পদ কোটি টাকার ওপরে।  

রিটার্নিং কর্মকর্তার দপ্তরে দাখিলকৃত হলফনামার তথ্যানুযায়ী, বরিশাল-১ (গৌরনদী-আগৈলঝাড়া) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহর দুটি জিপ গাড়ি, ৫০ ভরি স্বর্ণালংকারসহ ৩৩ কোটি ৫২ লাখ টাকার ওপরে অস্থাবর সম্পদ রয়েছে। এদিকে ১৭ একর কৃষি জমি, ৪১.০৪৯ একর অকৃষি জমি, ঢাকায় টি দালানসহ ১ কোটি ৮০ লাখ টাকার ওপরে স্থাবর সম্পদ রয়েছে। সেই সঙ্গে এই প্রার্থীর ৫ কোটি ৬০ লাখ ৯০ হাজার টাকার জামানত বিহীন ঋণও রয়েছে।  

এ আসনে জাতীয় পার্টির সেরনিয়াবাত সেকান্দার আলীর নৌযানসহ ৫৫ লাখ ৩১ হাজার টাকার ওপরে অস্থাবর সম্পদ রয়েছে এবং ৩১২.২৭ শতাংশ কৃষি জমি, ৩টি দালান ও দুটি ফ্ল্যাটসহ ৪ কোটি ৭৬ লাখ টাকার ওপরে স্থাবর সম্পদ রয়েছে। সেই সঙ্গে ব্যাংক ও জমির বায়না বাবদ প্রায় সোয়া কোটি টাকার দায়ও রয়েছে তার। এছাড়া এনপিপির মো. তুহিনের স্থাবর কোনো সম্পদ নেই, অস্থাবর সম্পদেও মোটরসাইকেল ও এক ভরি স্বর্ণালংকার ছাড়া উল্লেখযোগ্য কিছুই নেই।  

বরিশাল-২ (উজিরপুর-বানারীপাড়া) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী তালুকদার মো. ইউনুসের একটি প্রাডো গাড়িসহ অস্থাবর সম্পদের মূল্য দেখানো হয়েছে ৯৩ লাখ ৪৪ হাজার টাকা। এর বাইরে অস্থাবর ৩০ ভরি স্বর্ণালংকার, আসবাবপত্র ও ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী হলফনামায় দেখানো হয়েছে। আর তার স্ত্রীর প্রায় ৮৬ লাখ টাকা, ৪০ ভরি স্বর্ণ, আসবাবপত্র ও ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী হলফনামায় অস্থাবর সম্পদ হিসেবে দেখানো হয়েছে। স্থাবর সম্পদে তালুকদার মো. ইউনুসের প্রায় সাড়ে ৭৫ লাখ টাকার বরিশালের উজিরপুর ও ঢাকার উত্তরায় কৃষি জমি এবং একটি ফ্ল্যাটের হিসাব হলফনামায় উল্লেখ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে ৪৩ লাখ টাকার দায়ও রয়েছে তার।

এ আসনে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির প্রার্থী রাশেদ খান মেননের গাড়িসহ এক কোটি ৮৯ লাখ টাকার ওপরে অস্থাবর সম্পত্তি রয়েছে। আর তার স্ত্রীরও গাড়িসহ রয়েছে ১ কোটি ৫৭ লাখ টাকার ওপরে অস্থাবর সম্পদ। স্থাবর সম্পদে রাশেদ খান মেননের ৩৭ লাখ ২০ হাজার টাকা কৃষি জমি ও তার স্ত্রীর প্রায় দেড় কোটি টাকার বাড়ি/অ্যাপার্টমেন্ট রয়েছে। সেই সঙ্গে বন্ধুর কাছ থেকে ২ কোটি ঋণের দায় রয়েছে মেননের।  

অপর প্রার্থী মো. জহুরুল ইসলামের ফ্রিজ, টিভি, ফার্নিচারসহ ৫৩ লাখ টাকার ওপরে অস্থাবর সম্পদ এবং তার স্ত্রীর ৯ লাখ টাকার ওপরে স্বর্ণ রয়েছে। আর স্থাবর সম্পদে কিছুই নেই তাদের।  

কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের প্রার্থী কণ্ঠশিল্পী নকুল কুমার বিশ্বাসের ১ লাখ ৩৮ হাজার টাকার ওপরে অর্থসম্পদ এবং ১০ ভরি স্বর্ণসহ ইলেকট্রিক সামগ্রী ও ফার্নিচার রয়েছে অস্থাবর সম্পদে। আর তার স্ত্রীর রয়েছে ১০ ভরি স্বর্ণ। স্থাবর সম্পদে ১০ লাখ টাকার একটি ফ্ল্যাট, ৫০ লাখ টাকার একটি মৎস্য খামার, মূল্য অজানা একটি দ্বিতল বিল্ডিং, একটি টিনের ঘর, ১২ শতাংশ অকৃষি জমি, ১.২ একর কৃষি জমি রয়েছে নকুলের। তবে যৌথ মালিকানায় আরও কিছু অকৃষি জমিসহ সম্পদ রয়েছে। ব্যাংকে ৫ লাখ টাকার ঋণ রয়েছে তার।

জাতীয় পার্টির ইকবাল হোসেনের ইলেকট্রিক সামগ্রী ও ৬০ তোলা স্বর্ণালংকার ছাড়া ৬ কোটি ৮৩ লাখ টাকার ওপরে অস্থাবর সম্পদ রয়েছে, এছাড়া স্ত্রী ও নির্ভরশীলদের সোয়া ১১ লাখ টাকার অর্থ ব্যাংকে রয়েছে। আর স্থাবর সম্পদে কিছু কৃষি জমি ও বরিশাল নগরের একটি দালানের অংশ পাবেন তিনি। সেই সঙ্গে ব্যাংক থেকে তিনি একটি গৃহ সংস্থান ঋণও নিয়েছেন।  

জাতীয় পার্টির অপর প্রার্থী রজিত কুমার বাড়ৈর ইলেকট্রিক সামগ্রী, ফার্নিচার ছাড়া প্রায় ১৭ লাখ টাকার ওপরে অস্থাবর সম্পদ রয়েছে। আর স্ত্রীর কিছু স্বর্ণালংকার রয়েছে। তবে স্থাবর সম্পদ বলতে কিছুই নেই।

জাকের পার্টির প্রার্থী স্বপন মৃধার বিবাহের সময় উপহার পাওয়া ২৫ ভরি স্বর্ণ, ইলেকট্রিক সামগ্রী, ফার্নিচার ছাড়া সোয়া ৫ লাখ টাকার অস্থাবর সম্পদ এবং স্থাবর সম্পদে ১ লাখ ৬ হাজার টাকা মূল্যের কৃষি জমি রয়েছে। তৃণমূল বিএনপির মো. শাহজাহান সিরাজের ইলেকট্রিক সামগ্রী, ফার্নিচার ছাড়া প্রায় সাড়ে ৭ লাখ টাকার ওপরে অস্থাবর সম্পদ রয়েছে, আর স্ত্রীর ৭ ভরি স্বর্ণালংকার রয়েছে। সেই সঙ্গে কৃষি জমি, দালানসহ ১ কোটি ৮৫ লাখ টাকার স্থাবর সম্পদ রয়েছে তার।  

এনপিপির সাহেব আলীর অলংকার ছাড়া ইলেকট্রিক সামগ্রী, ফার্নিচারসহ ২ লাখ টাকার অস্থাবর সম্পদ রয়েছে, তবে তার স্ত্রীর কিছু অলংকার রয়েছে। স্থাবর সম্পদে প্রার্থী ও প্রার্থীর স্ত্রীর ১০৫ শতাংশ কৃষি জমি, যৌথ মালিকানায় প্রার্থীর আরও কিছু কৃষি জমি ও ৪ লাখ টাকা মূল্যের একটি বাড়ি রয়েছে।

স্বতন্ত্র প্রার্থী এ.কে ফাইয়াজুল হকের ৬ কোটি ৮ লাখ টাকার অস্থাবর সম্পদ ও তার স্ত্রীর বিবাহকালীন উপহার ১০০ তোলা স্বর্ণ ছাড়া প্রায় ৬ কোটি টাকার অস্থাবর সম্পদ রয়েছে। এছাড়া স্থাবর সম্পদে ২৮ একর কৃষি জমি, প্রায় ৭০ লাখ টাকা মূল্যের ১৪ কাঠা অকৃষি জমি ও ওয়ারিশ সূত্রে ঢাকায় তিনটি ফ্ল্যাট দেখিয়েছেন ফাইয়াজুল। এছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. মনিরুল ইসলামের ২ কোটি ৬৭ লাখ টাকার ওপরে অস্থাবর সম্পদ ও তার স্ত্রীর প্রায় ৮০ লাখ টাকার অস্থাবর সম্পদ রয়েছে, আর স্থাবর সম্পদে বরিশালের চারতলা বাড়ি, ঢাকার ছয়তলা বাড়িসহ ২ কোটি টাকার সম্পদ রয়েছে এই প্রার্থীর। আর তার স্ত্রীর নামে আছে ১৩ লাখ ১০ হাজার টাকা মূল্যের ৩ ডেসিমাল অকৃষি জমি। এছাড়া এই প্রার্থীর হাউজ বিল্ডিং করপোরেশনের কাছে সাড়ে ৭ লাখ টাকার ওপরে দায় রয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৫, ২০২৩
এমএস/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।