ঢাকা, রবিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫

শিক্ষা

বিএম কলেজের চিকিৎসাকেন্দ্র বন্ধ থাকায় সেবা বঞ্চিত হাজারো শিক্ষার্থী

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৩, ২০২২
বিএম কলেজের চিকিৎসাকেন্দ্র বন্ধ থাকায় সেবা বঞ্চিত হাজারো শিক্ষার্থী

বরিশাল: চিকিৎসাকেন্দ্র বন্ধ থাকায় বরিশাল সরকারি ব্রজ মোহন (বিএম) কলেজের শিক্ষার্থীরা সেবা বঞ্চিত হচ্ছেন অভিযোগ উঠেছে। অথচ চিকিৎসা খরচ বাবদ শিক্ষার্থীরা প্রতি সেশনে টাকা দিয়ে আসছেন।

কলেজের শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, কোনো শিক্ষার্থী হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে নিয়ে সদর হাসপাতাল নয়তো বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ‍ছুটতে হয়। কলেজের চিকিৎসাকেন্দ্রটি চালু থাকলে এ ভোগান্তি হতো না।

শিক্ষার্থীরা বলছেন, দক্ষিণাঞ্চলের অন্যতম সেরা বিদ্যাপিঠ বিএম কলেজ। যেখানে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা পটুয়াখালী প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের থেকেও বেশি শিক্ষার্থী রয়েছে। আর এসব শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে চিকিৎসাসহ ১০টি বেশি খাতে অর্থ নেয় কলেজ প্রশাসন। কিন্তু আদতে চিকিৎসা খাতে কোনো সেবাই পাচ্ছে না শিক্ষার্থীরা।

এদিকে কলেজ প্রশাসনিক শাখা সূত্রে জানা গেছে, প্রতি সেশনে ২৫ টাকা করে চিকিৎসা খাতে একজন শিক্ষার্থীর অনুকূলে আদায় করা হয়ে থাকে। যা শিক্ষার্থী হিসেবে বাৎসরিক সাত লাখ টাকার বেশি। আর এ অর্থ ব্যয় করে শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা ব্যবস্থা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে চিকিৎসক এবং ওষুধ সরবরাহের কথা রয়েছে। কিন্তু করোনার সময় লকডাউনের কথা বলে মৌখিক নির্দেশনায় চিকিৎসকের সঙ্গে চুক্তি বাতিল করা হয়। কলেজে পাঠদান, পরীক্ষাসহ স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরু হলেও নতুন করে কোনো চিকিৎসক নিয়োগ দেয়নি কলেজ প্রশাসন।

শিক্ষার্থীরা আরও বলছেন, করোনার কারণে দুই বছরের বেশি সময় ধরে চিকিৎসাকেন্দ্রটি বন্ধ রয়েছে, অথচ চিকিৎসা খাতে কোনো সেশনে অর্থ আদায় বন্ধ হয়নি।

বিএম কলেজের ছাত্র ইমরান জানান, কলেজ ক্যাম্পাসের ভেতরে থাকা এ চিকিৎসাকেন্দ্রে ডা. দেলোয়ার হোসেন নামে একজন ছিলেন। তিনি কলেজেই আসতেন না, আর বাইরে দেখাতে গেলে তাকে ৫০ টাকা ভিজিট দিতে হতো। পরে ডা. মনীষা চক্রবর্তীকে নিয়োগ দেওয়া হয়। তিনি নিয়মিত কলেজে এলেও তাকে কি কারণে বাদ দেওয়া হয়েছে তা জানি না।

কলেজের সর্বশেষ দায়িত্বপালনকারী চিকিৎসক ডা. মনীষা চক্রবর্তী জানান, ২০১৫ সালে খণ্ডকালীন চিকিৎসক হিসেবে তাকে নিযুক্ত করে কলেজ প্রশাসন। সপ্তাহে তিন দিন কলেজে যাওয়ার কথা থাকলেও পাঁচদিন যেতেন তিনি। তবে ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকে চিকিৎসাকেন্দ্রটি বন্ধের সিদ্ধান্তের কথা তাকে জানানো হয়। এরপর কলেজ প্রশাসন পুনরায় তলব না করায় তিনি আর চিকিৎসাকেন্দ্রটিতে যাননি, তবে এখনো চিকিৎসাকেন্দ্রে ও তার নাম সংবলিত সাইনবোর্ডটি কলেজে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে।

এ বিষয়ে বিএম কলেজের শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আলামিন সরোয়ার বাংলানিউজকে বলেন, করোনাকালে বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীরা কলেজে আসেননি। তাই তখন চিকিৎসাকেন্দ্রটিও বন্ধ রাখা হয়েছিল। তবে সর্বশেষ একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় নতুন চিকিৎসক নিযুক্ত করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে চেষ্টা চলছে দ্রুতই চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়া হবে।

বিএম কলেজের অধ্যক্ষ ড. গোলাম কিবরিয়া বাংলানিউজকে বলেন, করোনার পরে নতুন কোনো চিকিৎসক নেওয়া হয়নি। বিধায় চিকিৎসাকেন্দ্রটি বন্ধ ছিল। এখন নতুন করে চিকিৎসক নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আশা করি অল্প সময়ের মধ্যে চিকিৎসক নিয়োগ দিয়ে কলেজের শিক্ষার্থীদের চিকিৎসাসেবা কার্যক্রম চালু করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬২৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৩, ২০২২
এমএস/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।