ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

শিক্ষা

চুল কেটে নেয়া শিক্ষিকার অপসারণ দাবিতে আমরণ অনশনে শিক্ষার্থীরা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৯, ২০২১
চুল কেটে নেয়া শিক্ষিকার অপসারণ দাবিতে আমরণ অনশনে শিক্ষার্থীরা

সিরাজগঞ্জ: শিক্ষার্থীর মাথার চুল কেটে দেওয়া সেই শিক্ষিকার অপসারণ দাবিতে এবার আমরণ অনশন শুরু করেছে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের (রবি) শিক্ষার্থীরা।  

বুধবার (২৯ সেপ্টেম্বর) দুপুর থেকে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের রবির অস্থায়ী ক্যাম্পাসের প্রধান ফটকের সামনে অবস্থান নিয়ে অনশন শুরু করেছে শিক্ষার্থীরা।

এ সময় তারা সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যায়ন বিভাগের শিক্ষক ফারহানা ইয়াসমিন বাতেনকে স্থায়ী বহিষ্কারের দাবি জানান।

এদিকে অস্থায়ী ক্যাম্পাসে বিক্ষুদ্ধ ছাত্র-ছাত্রীরা দিনভর মিছিল ও সমাবেশ করেছে। সমাবেশ থেকে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে অভিযুক্ত শিক্ষককে চাকরিচ্যুত ও বহিষ্কার না করা পর্যন্ত তাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ৩ মুখপাত্র নাজমুল হাসান পাপন, শামীম হোসেন ও আবু জাফর হোসাইন সাংবাদিকদের বলেন, ফারহানা ইয়াসমিন বাতেন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করার যোগ্য নন। তিনি ১৪ শিক্ষার্থীর চুল কেটেই ক্ষান্ত হননি, উপরন্ত আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের নানাভাবে ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়ে আসছেন। মানসিক বিকারগ্রস্ত ও উগ্রমেজাজী ওই শিক্ষকের কাছে কোন শিক্ষার্থীই নিরাপদ নয়।  

এদিকে ১৪ শিক্ষার্থীর মাথার চুল কেটে দেওয়ার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অভিযুক্ত শিক্ষক ফারহানা ইয়াসমিন বাতেনকে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যায়ন বিভাগের চেয়ারম্যান, সহকারী প্রক্টর ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য পদ থেকে অব্যাহতি দিয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা ট্রেজারা বলেন, ঘটনা তদন্তের রবীন্দ্র অধ্যয়ন বিভাগের বিভাগীয় চেয়ারম্যান লায়লা ফেরদৌস হিমেলকে প্রধান করে ৫ সদস্যের বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণ হলে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে চাকরিচ্যুত বা অপসারণ করার এখতিয়ার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নেই। তবে বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে জানানো হয়েছে।  

রোববার (২৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যায়ন বিভাগের প্রথম বর্ষের রাষ্ট্রবিজ্ঞান পরিচিতি বিষয়ে ফাইনাল পরীক্ষার হলে প্রবেশের সময় অন্তত ১৩-১৪ জন শিক্ষার্থীর চুল কেটে দেন বিভাগের চেয়ারম্যান সহকারী প্রক্টর ফারহানা ইয়াসমিন বাতেন। চুল কেটে দেওয়ায় অপমান সহ্য করতে না পেরে সোমবার (২৭ সেপ্টেম্বর) রাতে নাজমুল হাসান তুহিন এক ছাত্র অতিমাত্রায় ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। তাকে মুমূর্ষ অবস্থায় এনায়েতপুর খাজা ইউনুস আলী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এ ঘটনার প্রতিবাদে মঙ্গলবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে শিক্ষার্থীরা ক্লাস ও সকল পরীক্ষা বর্জন করে একাডেমিক এবং প্রশাসনিক ভবনে তাল ঝুলিয়ে দেয়। বুধবার (২৯ সেপ্টেম্বর) ওই শিক্ষকের স্থায়ী বহিস্কার দাবি করে আমরণ অনশন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা।  

>>১৪ জনের চুল কেটে দিয়েছেন শিক্ষক, একজনের আত্মহত্যার চেষ্টা
>>>ছাত্রদের চুল কেটে দেওয়া শিক্ষিকার পদত্যাগ, তদন্ত কমিটি
  
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৯, ২০২১
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।