ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

শিক্ষা

গণনিয়োগকে যৌক্তিক বললেন অধ্যাপক আবদুস সোবহান

রাবি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০২৬ ঘণ্টা, মে ৮, ২০২১
গণনিয়োগকে যৌক্তিক বললেন অধ্যাপক আবদুস সোবহান

রাবি: মেয়াদের শেষ দিনে অ্যাডহকে ১৪১ জনকে নিয়োগ দিয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) সদ্য বিদায়ী উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহান। এই নিয়োগ যৌক্তিক ও মানবিক কারণে দিয়েছেন বলে দাবি করেছেন তিনি।

শনিবার (৮ মে) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের গঠিত তদন্ত কমিটির সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে গণমাধ্যমের সঙ্গে ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান তিনি।

অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহান বলেন, আমি গোড়া থেকেই বলেছি এই নিয়োগগুলো হওয়া দরকার ছিল। ২০১৩ সালের পর ২০২১ এই ৮ বছরে কোনো নিয়োগ হয়নি। আমরা নিয়োগ দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছিলাম। হঠাৎ করে এর মধ্যে করোনা চলে আসে। আমরা তখন নিয়োগ বন্ধ করে দিই। এরপর ক্যাম্পাসে গুঞ্জন শোনা যায় কিছু শিক্ষকের মুখে, তারা বলতে থাকেন, এ নিয়োগ দেওয়া যাবে না, মন্ত্রণালয় থেকে নিষেধাজ্ঞা আসবে। সেটা অবশেষে সত্যি হলো। ডিসেম্বরের ১৩ তারিখ সকালে আমার কাছে ইমেইল আসে। আমি বিষ্মিত হলাম। যারা ক্যাম্পাসে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করছিল তারা কীভাবে জানলো যে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হবে? গুঞ্জন সত্যে পরিণত হলো।

তিনি বলেন, আমরা যখন নিয়োগের ভাইভা নিবো তখন নিষেধাজ্ঞা আসে। করোনা ভাইরাসের জন্য স্থগিত রাখি। ২০০টি পদে আমরা বিজ্ঞাপন করেছিলাম, যারা প্রার্থী ছিলো তাদের সমস্ত কিছু হয়ে গিয়েছিল। শুধু ভাইভা বাকি ছিল। সুতরাং তারা ডিজার্ব করে এটা। আমি মনে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক কার্যক্রমের জন্য শুধু এ নিয়োগ না, আরও নিয়োগ না দিলে স্বাভাবিক কাজকর্ম ব্যহত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের মুখ থুবড়ে পড়বে।  

মানবিক কারণে নিয়োগ দিয়েছেন জানিয়ে সদ্য সাবেক এ উপাচার্য বলেন, যারা এ নিয়োগ ডিজার্ব করে তারাই পেয়েছে। আমি মানবিক কারণে নিয়োগ দিয়েছি। কারণ তাদের জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছিল। তাদের প্রত্যেকেই অনার্স-মাস্টার্স পাস। তারা তৃতীয় শ্রেণির একটা চাকরি করবে আমি মনে করি এটা যৌক্তিক। আমি মানবিক বোধ করেছি তাদের চাকরি পাওয়া উচিত।

এদিকে সাংবাদিকদের সঙ্গে ব্রিফিংয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ও ইউজিসির সদস্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীর বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে যে তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে আমরা সে তদন্তে এখানে এসেছি। আমরা চাই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় হবে শিক্ষা এবং গবেষণার কেন্দ্রবিন্দু। আমরা চেয়েছি যেন স্বল্প সময়ের মধ্যে পুরো বিষয়টি তদন্ত করে একটা পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়ে জমা দিতে পারি। এই নিয়োগ প্রক্রিয়ার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলের সঙ্গে আমরা কথা বলেছি ও সকল তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করেছি। আমরা বিষয়গুলো বিশ্লেষণ করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জমা দিবো।

তিনি আরও বলেন, আমরা তদন্ত রিপোর্ট জমা দেওয়ার জন্য সাতদিন সময় পেয়েছি। আশাকরি এই সময়সীমার মধ্যেই সেটা দিতে পারবো।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, শনিবার দুপুরে তদন্ত কমিটির সদস্যরা রাজশাহী আসেন। এরপর তারা ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহার কার্যালয়ে যান। সেখানে একে একে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় রেজিস্ট্রার অধ্যাপক আব্দুস সালাম, সিনেট ভবনের পরিষদ শাখার সহকারী রেজিস্ট্রার মামুন অর রশীদ, সংস্থাপন শাখার ডেপুটি রেজিস্ট্রার ইউসুফ আলী, রেজিস্ট্রার দফতরের সহকারী রেজিস্ট্রার তরিকুল আলম ও সঙ্গীত বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক দীনবন্ধু পাল। পরে উপাচার্য অধ্যাপক আবদুস সোবহানকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।  

গত বৃহস্পতিবার (৬ মে) উপাচার্য হিসেবে শেষ কার্যদিবস পালন করেন অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহান। মেয়াদের শেষ দিনেই অ্যাডহকে নিয়োগ দেন ১৪১ জনকে। এর মধ্যে ৯ জন শিক্ষক, ২৩ জন কর্মকর্তা, ৮৫ জন নিম্নমান সহকারী এবং ২৪ জন সহায়ক কর্মচারী হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন। বিতর্কিত এই নিয়োগকে অবৈধ উল্লেখ করে সেদিন সন্ধ্যায় একটা তদন্ত কমিটি গঠন করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৭ ঘণ্টা, মে ০৮, ২০২১
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।