ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

শিক্ষা

ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীদের ঘরে ফেরার অনুরোধ কারিগরি সচিবের

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪১৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৭, ২০২১
ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীদের ঘরে ফেরার অনুরোধ কারিগরি সচিবের

ঢাকা: কারিগরি ডিপ্লেমা ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষার্থীদের চার দফা নিয়ে প্রশ্ন তুলে শিক্ষার্থীদের রাজপথ ছেড়ে ঘরে ফেরার আহ্বান জানিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। অন্যথায় অযৌক্তিক আন্দোলন নিয়ে রাজপথে থাকলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।


 
ডিপ্লেমা ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষার্থীদের চার দফা নিয়ে রোববার (১৭ জানুয়ারি) সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে সংবাদ সম্মেলনে একথা জানান কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান।
 
শিক্ষার্থীদের দাবির মধ্যে অনেকগুলোই পূরণ করা হয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানান কারিগরি শিক্ষা সচিব।
 
সচিব বলেন, আমরা মনে করছি তারা ফিরে আসবে। অথবা তারা যদি অসত্য, বিভ্রান্তিকর অপতৎপরতা অব্যাহত রাখে তাহলে আমাদেরকে ধরে নিতে হবে তাদের উদ্দেশ্য শিক্ষা নয়। শিক্ষার বাইরেও তাদের অন্য কোনো উদ্দেশ্য রয়েছে। একটা অস্থিতিশীলতা, একটা বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা তাদের অপচেষ্টা রয়েছে। সেক্ষেত্রে সরকার যথা নিয়মে মোকাবেলা করবে।
 
ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীরা এক বছরের ইয়ার লস; স্থগিত হওয়া দ্বিতীয়, চতুর্থ ও ষষ্ঠ পর্বের তাত্ত্বিক পরীক্ষায় অটোপাস ও প্রথম, তৃতীয়, পঞ্চম ও সপ্তম পর্বের ক্লাস চালু করে শর্ট সিলেবাসে পরীক্ষা নেওয়া, অতিরিক্ত ফি প্রত্যাহার এবং প্রাইভেট পলিটেকনিকের সেমিস্টার ফি মওকুফ এবং সব প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে ডিপ্লোমা ছাত্রদের আসন বরাদ্দের দাবি জানিয়ে আন্দোলন করছে।

সংবাদ সম্মেলনে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সচিব মো. জাহেদুল হাসান বলেন, ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন পর্বের পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়ে অধ্যক্ষ ও পরিচালকদের সঙ্গে মতবিনিময় করে পরিস্থিতি বিবেচনায় একটি যৌক্তিক ও গ্রহণযোগ্য পরীক্ষা পদ্ধতি নির্ধারণ করা হয়েছে।
 
‘পরীক্ষার্থীদের প্রশ্নপত্রে মুদ্রিত মোট নম্বরের ৫০ শতাংশ নম্বরের উত্তর দিতে হবে। এক্ষেত্রে ৩ ঘণ্টার পরীক্ষা ২ ঘণ্টা এবং ২ ঘণ্টার পরীক্ষা ১ ঘণ্টা ৩০ মিনিটে অনুষ্ঠিত হবে। পরীক্ষার্থীদের প্রাপ্ত নম্বরকে দ্বিগুণ করে ফলাফল প্রস্তুত করা হবে। ’

কারিগরি শিক্ষা সচিব বলেন, দুঃখের সঙ্গে লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষার্থীদের একটি অংশ চার দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে বিভিন্ন স্থানে মানববন্ধন, সমাবেশ ও সড়ক অবরোধ করেছেন এবং বিভিন্ন স্থানে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অপপ্রয়াসে লিপ্ত রয়েছেন। তারা সম্পূর্ণ অযৌক্তিকভাবে সাধারণ ছাত্র ও জনগণকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা করছেন। এর মাধ্যমে বিভিন্নভাবে উস্কানি দিচ্ছেন যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
 
‘এক বছরের ইয়ার লস’ নিয়ে সচিব বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের একটি সেমিস্টার নষ্ট হয়েছে। সেটি পূরণে কৌশলগত পরিকল্পনা নিয়ে আগামী সেমিস্টারগুলো পরিমার্জিত সিলেবাস প্রণয়নের মাধ্যমে ছয় মাসে পরিবর্তে চার মাসে সম্পন্ন, ন্যূনতম সময়ের মধ্যে পরীক্ষা নেওয়া ও ফলাফল ঘোষণা, অতিরিক্ত সেশন পরিচালনা করা হবে।  আশা করা যায়, এসব প্রচেষ্টায় ক্ষতি কাটিয়ে উঠা সম্ভব হবে।
 
অটোপাসের দাবি নিয়ে সচিব বলেন, কারিগরি শিক্ষায় অটোপাস দেওয়া হলে তা শিক্ষার্থীদের যোগ্যতার বিষয়ে ভবিষ্যতে চাকরিদাতাদের কাছে গ্রহণযোগ্যতা হারাতে পারে। এর সুদূর প্রসারী নেতিবাচক ফলাফল থেকে রক্ষার জন্যই শিক্ষামন্ত্রী সীমিত প্রস্তুতি বিবেচনায় রেখে বিকল্প পদ্ধতিতে পরীক্ষা নেওয়ার ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন। এজন্য সংক্ষিপ্ত নেওয়া হচ্ছে। আর প্রথম, তৃতীয়, পঞ্চম ও সপ্তম পর্বের জন্য পরিমার্জিত সিলেবাস প্রণয়ন করে সেমিস্টারের মেয়াদ কমিয়ে এরই মধ্যে লস হয়ে যাওয়া সময় কাটিয়ে উঠার পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

অতিরিক্ত ফি প্রত্যাহারের বিষয়ে সচিব জানান, কোভিড পরিস্থিতি বিবেচনা করে পরীক্ষার জন্য যৎসামান্য ফি নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে, যা বিগত বছরগুলোর নির্ধারিত ফি এর অর্ধেকেরও কম। কোনো প্রতিষ্ঠান এ নিয়মের বাইরে ফি আদায় করলে অবশ্যই যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে ফি এর বিষয়ে অনুরোধ করা হয়েছে।

প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে ডিপ্লোমা ছাত্রদের আসন বরাদ্দ নিয়ে সচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী কারিগরি শিক্ষাকে প্রাধান্য দিয়ে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের উচ্চ শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টির দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। এ লক্ষ্যে প্রায় এক হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ঠাকুরগাঁও, নওগাঁ, নড়াইল ও খাগড়াছড়িতে চারটি সরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ স্থাপনের প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। এ প্রকল্পটির বাস্তবায়ন শেষ হলে প্রতিবছর আরও ৩৬০ জন ডিপ্লোমা প্রকৌশলী নয়টি স্নাতক ডিগ্রি কোর্সে কয়েক হাজার ডিপ্লোমা পাস শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ লাভ করবে। যা পরবর্তীতে ক্রমান্বয়ে বাড়বে। বুয়েটের পরিচালনায় এসব প্রতিষ্ঠানে ডিপ্লোমা প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের সামনে পেশাগত উন্নয়নের এক সোনালী দিগন্ত উন্মোচিত হবে।

সচিব জানান, কারিগরি শিক্ষাকে যুযোগযোগী করার জন্য বিশেষজ্ঞরা কাজ করছেন। দ্রুতিই এ বিষয়ে জানানো হবে।
 
কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. মোরাদ হোসেন মোল্লাসহ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৪০৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৭, ২০২০
এমআইএইচ/ওএইচ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।