ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

শিক্ষা

বিদ্যালয়ে নয়, এবার বাড়িতেই ভালো ফলাফলের আনন্দ-উল্লাস

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৩৬ ঘণ্টা, মে ৩১, ২০২০
বিদ্যালয়ে নয়, এবার বাড়িতেই ভালো ফলাফলের আনন্দ-উল্লাস করোনা ভাইরাসের কারণে এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশের আনন্দ উদযাপন হয়েছে বাড়িতেই। তাই বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ শূন্য।

বরিশাল: এসএসসি, এইচএসসি বা যে কোনো বোর্ড পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণা করা হলে, তা জানার আগ্রহ থাকে পরীক্ষার্থী থেকে অভিভাবকসহ সবার। কারণ এসব পরীক্ষার পেছনে তাদের দীর্ঘদিনের সাধনা, অধ্যবসায়, পরিশ্রমসহ অনেক কিছুই জড়িয়ে থাকে। সবার মনেই ভালো ফলাফল করার বাসনা থাকে। তাই অন্য উৎসবের মতো ভালো ফলাফলের আনন্দটাও সবার সঙ্গে ভাগ করে নিতে চায় পরীক্ষার্থীরা।

এরই ধারবাহিকতায় যুগের পর যুগ ধরে ফলাফলের আয়োজনের সঙ্গে ভিন্ন এক উৎসবের আমেজ থাকে। ফলাফল ঘোষণার দিন সকাল থেকেই পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে অভিভাবকরাও উৎকণ্ঠায় সময় কাটান।

বিদ্যালয় প্রাঙ্গণেই এসব চিত্র ফুটে ওঠে।

গত কয়েক বছর ধরে প্রযুক্তির ব্যবহারে ঘরে বসে মোবাইল ফোনে এসএমএস কিংবা ইন্টারনেটের মাধ্যমে ফলাফল জানার সুযোগ করে দেয় সরকার। তারপরও পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে বিদ্যালয়ে প্রাঙ্গণে গিয়ে ফলাফল জানার আগ্রহে কখনো ঘাটতি দেখা যায়নি। তবে এবার করোনা ভাইরাসের কারণে পরিস্থিতি একেবারে ভিন্ন ছিল।

এ পরিপ্রেক্ষিতে এবার ফলাফল ঘোষণার দিন দেশজুড়ে কোথাও শিক্ষার্থী, অভিভাবক কিংবা সংশ্লিষ্টদের দৌড়ঝাঁপ দেখা যায়নি। আবার প্রতিষ্ঠিত ও নামকরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে দেখা যায়নি শিক্ষার্থীদের বাঁধ ভাঙা উচ্ছ্বাস। দেখা মেলেনি আনন্দে কান্নার দৃশ্য। শোনা যায়নি আনন্দের চিৎকার। দোকানেও ছিল না মিষ্টি কেনার হিড়িক।

এ বিষয়ে বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অরুণ কুমার গাইন বলেন, ‘সরকারি ও স্বাস্থ্য বিভাগের নির্দেশনা মেনেই আমরা ভবিষ্যত প্রজন্মকে নিরাপদে রাখার চেষ্টা চালিয়েছি। তাই এবারের ফলাফল প্রকাশেও কিছুটা ভিন্নতা আনা হয়েছে। যেমন সংবাদকর্মীদের জন্য জরুরি কাগজপত্র আমরা সাংবাদিক সংগঠনগুলোতে পাঠিয়ে দিয়েছি। সেখানে সভাপতি-সম্পাদকের সঙ্গে ফোনে আমরা কথা বলে নিয়েছি। অযথা ভিড় এড়ানোর জন্য শিক্ষা বোর্ডে প্রবেশেও নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা রেখেছি। ’

তিনি বলেন, ‘আবার শিক্ষার্থী যারা ভবিষ্যত প্রজন্ম তাদের কথা চিন্তা করে ফলাফল জানার ক্ষেত্রে মোবাইল ও ইন্টারনেট প্রযুক্তি ব্যবহারের বিষয়ে আমরা আগে থেকে জোড় দিয়েছি। ফলে তারা বাসায় বসেই রেজাল্ট জানতে পেরেছেন। ’

তিনি আরও বলেন, ‘আনন্দ-উচ্ছ্বাস সবই আগের মতোই আছে। তবে এবার বাইরে না এসে ঘরে বসে উদযাপন করা হলো সেটি। যেভাবে আমরা ঈদ উদযাপন করেছি। আবার ইতোমধ্যে এ শিক্ষার্থীদের কলেজে ভর্তির বিষয়ে সরকার স্বাস্থ্যবিধির কথা মাথায় রেখে চিন্তা-ভাবনা শুরু করেছে। ’

হাওলাদার নামে এক ব্যবসায়ী জানান, তারা স্বজনদের মধ্যে তিনজনের সন্তান এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে। তারা সবাই ভালো ফলাফল করেছেন। সবাই আনন্দিত। তবে করোনা ভাইরাসের কারণে সন্তানদের বাইরে যেতে না দিয়ে বাড়িতেই আনন্দ ভাগাভাগি করে নেওয়ার সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। যেখানে একে অপরের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করেছেন।

আর বর্তমান পরিস্থিতির অবসান ঘটলে ভালো ফলাফল অর্জনের আনন্দ আলাদাভাবে উদযাপন করা যাবে বলে জানান নাঈম হোসেন নামে এক শিক্ষার্থী। তিনি বলেন, ‘হয়তো বিদ্যালয়ে যেতে পারিনি, তবে শিক্ষক-বন্ধু সবার সঙ্গে বাসায় থেকেই কথা বলেছি। ’

এসএসসিতে বরিশাল বোর্ডে পাসের হার ৭৯ দশমিক ৭০ শতাংশ। এর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৪ হাজার ৪৮৩ জন শিক্ষার্থী। এ বছর পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে ১ লাখ ১৩ হাজার ২৯৫ জন। এর মধ্যে ৪৩ হাজার ৩৫ জন ছাত্র আর ৪৬ হাজার ৫৮১ জন ছাত্রী পাস করেছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৬ ঘণ্টা, মে ৩১, ২০২০
এমএস/এফএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।