ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

শিক্ষা

করোনা ভাইরাস কেড়ে নিলো ওদের বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৫৪ ঘণ্টা, মে ৩১, ২০২০
করোনা ভাইরাস কেড়ে নিলো ওদের বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস!

খুলনা: বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাসে ভেসে যাওয়ার কথা ছিলো ওদের। কেননা ওদের অনেকই সেরাদের সেরা হয়েছে। কাঠফাটা রোদে কিংবা বৃষ্টি হলেও বাদ সাধতে পারতো ওদের আনন্দ আর উচ্ছ্বাসে মেতে উঠতে। অথচ ২০২০ সালের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর এবার উল্টো চিত্র দেখা যাচ্ছে শিক্ষার্থীদের মধ্যে।

রোববার (৩১ মে) ফল প্রকাশের পর খুলনার কোনো স্কুলেই দেখা মিলছে না কোনো শিক্ষার্থী কিংবা অভিভাবকের। সবাই বাসায় বসে অনলাইনে ফলাফল পেয়ে ঘর বন্দি হয়ে নিরব উৎসব করছে।

যাতে নেই কোন প্রাণ। আনন্দের অতিশয্যে প্রিয় সহপাঠী, বাবা-মা, ভাইবোন এমনকি শ্রদ্ধেয় শিক্ষককে জড়িয়ে ধরার কোনো দৃশ্য নেই কোন স্কুলে।  

এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফলের সাফল্য শিক্ষর্থীদের মনে আনন্দের জোয়ার বয়ে আনলেও প্রাণঘাতি করোনার কারণে ঘরে বয়ে আনতে পারছে না মিষ্টির প্যাকেট। সকাল থেকেই ফল প্রকাশ হওয়ার আগ পর্যন্ত উত্কণ্ঠায় ছিলেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। সব উত্কণ্ঠার অবসান ঘটে ফল প্রকাশে। আশানুরূপ ভালো ফলাফলে তাদের চোখে-মুখে ফুটে উঠে সাফল্যের হাসি।

কিন্তু বিগত বছরগুলোতে ভালো ফল করা শিক্ষার্থীরা সহপাঠীর ঘাড়ে চড়ে ঘুরে বেড়িয়েছেন স্কুলের মাঠ। আনন্দের সে জোয়ারের যেন শেষ ছিলো না, ছিলো না কোনো ক্লান্তি। নেই সারি সারি বিজয়চিহ্ন, সঙ্গে প্রাণখোলা আনন্দ।
শিক্ষার্থীদের আনন্দ-উচ্ছ্বাস, ফাইল ফটোবিগত কয়েক দশক ধরে যশোর বোর্ডের সেরা স্কুলের মধ্যে খুলনা জিলা স্কুল, সরকারি করোনেশন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়, খুলনা কলেজিয়েট গার্স স্কুল, খুলনার মিলিটারি কলেজিয়েট স্কুল, খুলনা পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ, খুলনা সরকারি বালিকা বিদ্যালয়, খুলনার সরকারি ল্যাবরেটরি মাধ্যমিক বিদ্যালয় স্থান করে আসছে। এসব স্কুলের আঙ্গিনায় ফলাফল প্রকাশের দিন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের যেমন ভিড় থাকতো, তেমনি সংবাদমাধ্যম কর্মীদেরও। কিন্তু এবার সব জায়গাতেই তার ভিন্ন চিত্র। স্কুলগুলো রয়েছে তালা বদ্ধ।

মহানগরীর কাকন প্রেসের মালিক নাসির উদ্দিন বলেন, আমার বড় ভাইয়ের ছেলে মিরাজ হোসাইন সেন্ট জোসেফ স্কুল থেকে এসএসসি পরীক্ষায় গোল্ডেন এ প্লাস পেয়েছে। এতে আমরা ভীষণ খুশি। তবে করোনার কারণে আনন্দের জোয়ারে ভাটা পড়েছে। মিষ্টিও হয়নি কেনা।

খুলনা জিলা স্কুলে থেকে গোল্ডেন এ প্লাস পাওয়া ইফতিখার ফারহান ইফতির মা গৃহিনী মনিরা ইয়াসমিন রত্না বলেন, ফল প্রকাশের আগে মোবাইল ফোন থেকে ‘প্রি-রেজিস্ট্রেশন’ করে রাখা হয়েছিলো। ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে ফল এসে গেছে। ওর ফলাফলে আমাদের পরিবার খুশি। মহামারি করোনার কারণে স্বাস্থ্যঝুঁকি বিবেচনা করে ছেলেকে বাইরে যেতে দেওয়া হয়নি। বাসায়ও আনা হয়নি মিষ্টি।

খুলনা জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক ফারহানা নাজ বাংলানিউজকে বলেন, করোনা মহামারির কারণে স্বাস্থ্যঝুঁকি বিবেচনায় শিক্ষার্থীদের স্কুলে গিয়ে এবার ফল জানার সুযোগ ছিলো না। স্কুলে কোনো ফলাফলের সিটেও আসে নি। শিক্ষার্র্থীরা অনলাইনেই ফলাফল জানতে পেরেছে। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের করোনার কারণে প্রতিষ্ঠান প্রাঙ্গণে আসতে নিষেধ রয়েছে। গেটে রয়েছে তালা। যে কারণে এ বছর ক্যাম্পাসে কোনো প্রাণোচ্ছল নেই।

বাংলাদেশ সময়: ১২৪৪ ঘণ্টা, মে ৩১, ২০২০
এমআরএম/ওএইচ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।