ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

শিক্ষা

‘৩ ধরনের গেস্টরুমের মাধ্যমে টর্চার সেল বানিয়েছে ছাত্রলীগ’

ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০০৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৮, ২০১৯
‘৩ ধরনের গেস্টরুমের মাধ্যমে টর্চার সেল বানিয়েছে ছাত্রলীগ’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে তিন ধরনের গেস্টরুমের মাধ্যমে টর্চার সেল বানিয়ে রেখেছে ছাত্রলীগ- এমন অভিযোগ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের।

বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে ‘বৈধ সিট আমার অধিকার’ ব্যানারে আয়োজিত মানববন্ধনে এ অভিযোগ তোলা হয়।

ইংরেজি বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী সাজাহান তানিম বলেন, আজ আমরা সারা বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে দেখতে পাই গেস্টরুম নির্যাতনের মাধ্যমে ছাত্রলীগ বা ক্ষমতাসীন দল যখনই যে ক্ষমতায় থেকেছে তারা চেষ্টা করেছে আমাদের ম্যানার শেখাতে।

এই ম্যানার আমরা কাদের কাছ থেকে শিখছি, যাদের দলীয় মূলনীতি ছিল ‘শিক্ষা শান্তি প্রগতি ছাত্রলীগের মূলনীতি’।

‘কিন্তু আমরা পত্র-পত্রিকা, টিভি খুলে দেখতে পাই ‘শিক্ষা সন্ত্রাস প্রগতি ছাত্রলীগের মূলনীতি’ হয়ে উঠেছে। যারা সন্ত্রাসের মাধ্যমে তাদের দলের মূলনীতিকে কনভার্ট করে ফেলেছে তাদের মাধ্যমে আমরা ম্যানার শিখবো?’

নিজেকে ভুক্তভোগী দাবি করে তিনি বলেন, আমাকেও বিভিন্নভাবে গেস্টরুম নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে। তিন ধরনের গেস্টরুমের মাধ্যমে তারা টর্চার সেল বানিয়ে রেখেছে। একটা হলো ফরমাল গেস্টরুম যার মাধ্যমে পরিচিতির সুযোগ থাকে, বিগ ও মিনি এবং পার্সোনাল গেস্টরুম। এরমধ্যে মিনি গেস্টরুম ও সিঙ্গেল গেস্টরুম অঘোষিত টর্চার সেল। প্রত্যেকটা বিশ্ববিদ্যালযয়ে এই টর্চার সেল বানিয়ে রেখেছে ক্ষমতাসীন ছাত্রলীগ। কিন্তু অপচেষ্টার মাধ্যমে তা অস্বীকার করার চেষ্টা করছে তারা। পরিচয় পর্বের নাম করে ছাত্রদের নির্যাতন করে প্রোগ্রামে নিয়ে যায়।

প্রথম বর্ষ থেকে বৈধ সিট নিশ্চিতের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, গত মাসের ৩০ তারিখ বেলা সাড়ে ১১টার সময় আমি ক্লাসরুমে যাই। ১১টা ৩৫ মিনিটে কল দেওয়া হয় মধুতে প্রোগ্রাম আছে, সনজিত দাদার প্রোগ্রামে তোমাকে অ্যাটেন্ড করতে হবে। আমি বললাম আমি ক্লাসে আছি, ক্লাস থেকে যেতে পারবো না। ছাত্রলীগ আমাকে বলে ক্লাসে যদি থাকো প্রোগ্রাম না করো তাহলে তোমাকে কাল হল থেকে নেমে যেতে হবে। ’

‘এই ছিল প্রোগ্রাম, গেস্টরুমের নামে ম্যানার শেখার জন্য কি আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছিলাম। কেউ প্রোগ্রাম না করলে তাকে রাতে চড়-থাপ্পড় দেওয়া হয়। এর নাম কি গেস্ট রুম? এটা আসলে টর্চার সেল।

সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ইশরাতুল জাহান নিশি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছি স্বাধীনচেতা মনোভাব নিয়ে বেড়ে উঠতে। কিন্তু সেই পরিবেশ পাচ্ছি কই? আমরা আমাদের অধিকার পাচ্ছি না। ভয়ে কথা বলতে পারি না। ফেসবুকে লিখতে পারি না। ব্যক্তিস্বাধীনতায় কেন বাধাগ্রস্ত হবো? বুয়েটে যদি ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করতে পারে তাহলে আমরা কেন আমাদের অধিকার বৈধ সিট পাবো না।

মানববন্ধন থেকে ছয় দফা দাবি জানানো হয়। সেগুলো হলো- প্রথম বর্ষ থেকে প্রশাসনিকভাবে বৈধ সিট দেওয়া, গেস্টরুম নামক টর্চারসেল সম্পূর্ণ বন্ধ করা, হলে অবস্থানরত অবৈধ ও অছাত্রদের হল ত্যাগে বাধ্য করা, পলিটিক্যাল গণরুম সম্পূর্ণ বাতিল করা, সিট বরাদ্দে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ বন্ধ করা, পলিটিক্যাল রুমের নামে রুম দখল বন্ধ করা।

বাংলাদেশ সময়: ২০০৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৭, ২০১৯
এসকেবি/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।