ঢাকা, শনিবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

শিক্ষা

ঢাবি ছাত্র কাদের নির্যাতনে বিধি বহির্ভূত কিছু হয়নি!

ইলিয়াস সরকার, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২৪৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০১১

ঢাকা : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন বিভাগের ছাত্র আব্দুল কাদেরের ওপর পুলিশি নির্যাতনের ঘটনায় পুলিশের বিভাগীয় তদন্ত কমিটি কাদেরকে আসামি মামুনের সঙ্গে গ্রেফতার ও আসামি করার পর্যায়ে বিধি বহির্ভূত কোনো কাজ হয়নি বলে তদন্ত রিপোর্টে উল্লেখ করেছে।

এছাড়াও এ ঘটনায় বরখাস্ত এএসআই শহীদুর রহমানের কোনো কাজ বা আচরণ প্রচলিত আইনের পরিপন্থি বলে প্রতীয়মান হয় না বলে মনে করে কমিটি।



এমনকি রিপোর্টে অপর বরখাস্ত এসআই আলম বাদশার প্রশংসা করা হয়েছে ।

যদিও রিপোর্টে বলা হয়েছে, আলম বাদশা এফআইআরএ কিছু অসত্য  ঘটনাও এনেছেন। তবে তার গাফিলতি উল্লেখ করে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করার কথা বলা হয়েছে।

পুলিশের তদন্ত রিপোর্টে খিলগাঁও থানার সাবেক ওসি হেলাল উদ্দিন, এসআই আলম বাদশা এবং এএসআই শহীদুর রহমান কেউই কাদেরকে কোপানোর কথা বলেননি।

অথচ বিচার বিভাগীয় তদন্ত রিপোর্টে এসআই শহীদুর রহমান ওসি কাদেরকে কুপিয়েছেন এ কথা স্বীকার করেছেন।

এছাড়া এসআই আলম বাদশাও সেন্ট্রি থেকে শুনেছেন ওসি কাদেরকে কুপিয়েছেন। কিন্তু পুলিশি তদন্ত রিপোর্টে তিনি এ ব্যাপারে কিছুই বলেননি।  

রিপোর্টে  খিলগাঁও থানার সাবেক ওসি হেলাল উদ্দিন ও এসআই আলম বাদশার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলার সুপারিশ করা হয়েছে।  
এছাড়া কাদেরের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাগুলোর সঙ্গে তার কোনো সম্পৃক্ততার প্রমাণও পায়নি বলে উল্লেখ করা হয়।

প্রসঙ্গত, গত ২৮ জুলাই আদালতে নির্দেশে ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (প্রশাসন ও অর্থ) আব্দুল জলিলকে প্রধান করে এবং ডিএমপি’র যুগ্ম কমিশনার (ডিবি) মীর শহীদুল ইসলাম, ডিএমপি’র উপপুলিশ কমিশনার (রমনা) কৃষ্ণপদ রায়, ডিএমপি’র অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার মো. মনিরুজ্জামান ও সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার  (তেজগাঁও) মুহাম্মদ হাবীবুন নবী আনিছুর রশীদকে সদস্য করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

এ কমিটির দেওয়া রিপোর্টটি রোববার আদালতে উপস্থাপন করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার এবিএম আলতাফ হোসেন।
 
এছাড়া একই দিন (২৮ জুলাই) একটি বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন আদালত। সেই নির্দেশনানুযায়ী আইন ও বিচার মন্ত্রণালয়ের সচিব (দায়িত্বপ্রাপ্ত) আশীষ রঞ্জন দাসকে এ দায়িত্ব দেওয়া হয়। নির্দেশনা অনুযায়ী, এ কমিটি ২৮ নভেম্বর তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করেন।

বিচার বিভাগীয় কমিটি এ ধরনের নির্যাতনের ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা, ফৌজদারি অপরাধ ও ক্ষতিপুরণের পৃথক পৃথক মামলা করা যায় বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করে। কিন্তু পুলিশের তদন্ত কমিটি শুধু বিভাগীয় মামলার কথা বলেছে।  
এছাড়া বিচার বিভাগীয় কমিটি সরকারি কর্মচারি শৃঙ্খলা ও আপিল বিধিমালা ১৯৮৫ অনুযায়ী, হেলাল ও আলম বাদশাকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত ও বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করে চাকরি থেকে বরখাস্ত করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে বলেও সুপারিশ করে।

কিন্তু পুলিশের তদন্ত রিপোর্টে এ ব্যাপারে কিছুই বলা হয়নি।    

গত ১৫ জুলাই রাতে সেগুনবাগিচা এলাকা থেকে কাদেরকে খিলগাঁও থানা পুলিশ আটক করে এবং পরের দিন ২টি মামলা দেয় তার  নামে। এর পর দিন একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত খবরের সূত্র ধরে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চ ২৮ জুলাই সুয়োমোটো রুল জারি করে।

এছাড়া ওই দিন কাদেরকে হয়রানিমূলকভাবে গ্রেফতার ও নির্যাতনের অভিযোগে পুলিশ বিভাগের ৩ জন কর্মকর্তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করার নির্দেশ দেন।

এই বিষয়গুলো খতিয়ে দেখার জন্য হাইকোর্ট একজন যুগ্মসচিব পর্যায়ের কর্মকর্তার নেতৃত্বে তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন এবং পুলিশের পক্ষ  থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠনেরও নির্দেশ দেন।  

বাংলাদেশ সময় : ০২৪০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১১,২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।