ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

শিক্ষা

ধর্ষণের অভিযোগ: খুবি ছাত্রের একাডেমিক কার্যক্রম স্থগিত

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩২৩ ঘণ্টা, জুলাই ২২, ২০১৯
ধর্ষণের অভিযোগ: খুবি ছাত্রের একাডেমিক কার্যক্রম স্থগিত

খুলনা: খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) লাইব্রেরিতে এনে ঘুমের ট্যাবলেট খাইয়ে অন্য একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের পাপ্পু কুমার মন্ডল নামে এক ছাত্রের একাডেমিক কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে।

গত ৩ জুলাই ক্যাম্পাসে এ ঘটনা ঘটলেও বিষয়টি জানাজানি হয় সোমবার (২২ জুলাই)। এমনকি ফেসবুকে অভিযুক্ত ছাত্রকে জুতার মালা পরানোর ছবিও ছড়িয়ে পড়ে।

 

এ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে খুবি কর্তৃপক্ষ। ওই ছাত্রীর লিখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে চারুকলা অনুষদের প্রিন্ট মেকিং ডিসিপ্লিনের স্নাতক চতুর্থ বর্ষের ছাত্র পাপ্পুর একাডেমিক কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। তাকে তার সহপাঠীরা মুখে কালি লাগিয়ে এবং জুতার মালা পরিয়ে ক্যাম্পাস থেকে বেরও করে দিয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানান, গত ৩ জুলাই খুবির চারুকলা অনুষদে চিত্রকলা প্রদর্শনী ছিল। পাপ্পু ওই দিন তার পরিচিত এক ছাত্রীকে প্রদর্শনী দেখানোর কথা বলে ক্যাম্পাসে ডেকে আনেন। সেই ছাত্রী খুলনা কলেজিয়েট গার্লস স্কুলে লেখাপড়া করেন। ওই ছাত্রী চারুকলায় যাওয়ার পর পাপ্পু তাকে খাবারের সঙ্গে ঘুমের ট্যাবলেট খাইয়ে চারুকলার লাইব্রেরিতে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করেন। এরপর পাপ্পু নিজের কক্ষে চলে যান। সেই ছাত্রী লাইব্রেরির সিঁড়িতে কান্নাকাটি করার সময় রাত সাড়ে ১২টার দিকে দারোয়ান তাকে দেখতে পান।
 
কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, পাপ্পু সেই ছাত্রীটিকে পড়াতেন। ঘটনার পর গত ১৫ জুলাই পাপ্পু বিশ্ববিদ্যালয়ে গেলে শিক্ষার্থীরা তার মুখে কালি লাগিয়ে ও গলায় জুতার মালা ঝুলিয়ে ক্যাম্পাস থেকে বের করে দেন।

এ ব্যাপারে খুবির ছাত্র বিষয়ক পরিচালক অধ্যাপক শরীফ হাসান লিমন বাংলানিউজকে জানান, ৩ জুলাই রাতে ঘটনার পর ৪ জুলাই মেয়েটি লিখিত অভিযোগ করে। ৫ ও ৬ জুলাই ছুটি থাকায় ৭ জুলাই মেয়েটির অভিযোগটি বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়নবিরোধী কমিটির কাছে দেওয়া হয়। প্রাথমিক অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে পাপ্পুর একাডেমিক কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। পাপ্পু এখন আর ক্যাম্পাসে আসেন না।

যৌন নিপীড়নবিরোধী কমিটির প্রধান অধ্যাপক ড. হোসনে আরা জানান, অভিযোগ পাওয়ার পর তারা তদন্ত শুরু করেন। তদন্ত প্রায় শেষ পর্যায়ে। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হলে পাপ্পুকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে।

ড. হোসনে আরা আরও জানান, তারা ওই ছাত্রীকে মামলা করার পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই ছাত্রী কেন মামলা করেনি তা জানা যায়নি।

এ ব্যাপারে হরিণটানা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশরাফুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, ঘটনাটি তার জানা নেই। কেউ কোনো অভিযোগও করেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, খুলনার পাইকগাছা উপজেলার পাপ্পু ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠনের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। এছাড়া রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গেও তার সম্পর্ক রয়েছে। পাপ্পু ও তার লোকজনের চাপে ওই ছাত্রী মামলা করতে সাহস পাননি।

বাংলাদেশ সময়: ১৯১৯ ঘণ্টা, জুলাই ২২,  ২০১৯
এমআরএম/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।