ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

শিক্ষা

ঢাবিতে ৩য় বর্ষের রেজাল্ট দিয়ে মাস্টার্সে ভর্তির সুপারিশ

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪০১ ঘণ্টা, এপ্রিল ৩০, ২০১৯
ঢাবিতে ৩য় বর্ষের রেজাল্ট দিয়ে মাস্টার্সে ভর্তির সুপারিশ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচলিত রীতি অনুযায়ী অনার্সের ফল প্রকাশের পর মাস্টার্সে ভর্তির সুপারিশ করা হয়। কিন্তু রীতি ভেঙে তৃতীয় বর্ষের ফলাফলের উপর ভিত্তি করে মাস্টার্সে ভর্তির সুপারিশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের একাডেমিক কমিটি।

গত ৩ এপ্রিল বিভাগের একাডেমিক কমিটির নির্ধারিত আলোচ্যসূচির বাইরে গিয়ে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। মনোবিজ্ঞান বিভাগের একাধিক শিক্ষক-শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা যায়।


 
সভার সিদ্ধান্তে লেখা হয়েছে, আগামী ৩০ জুনের মধ্যে যদি ৪র্থ বর্ষের ফল প্রকাশিত না হয় তাহলে তৃতীয় বর্ষের সিজিপির ভিত্তিতে ‘মাস্টার্স ইন সাইকোলজি’, ‘মাস্টার্স ইন স্কুল সাইকোলজি’ ও ‘মাস্টার্স ইন ইন্ডাস্ট্রিয়াল সাইকোলজি’-তে ভর্তির সুপারিশ করা হবে। চয়েস ফরম ২ মে-১৬ মে বিতরণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
 
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মাহফুজা খানম বাংলানিউজকে বলেন, এটা ভর্তি না, জাস্ট চয়েস ফরম। রেজাল্ট একটু এদিক-সেদিক হতে পারে। এজন্য মেইন কাজটা যেন করে ফেলা যায় চয়েস ফরমটা দেওয়া হয়েছে। তিনটা গ্রুপের কে কোথায় যেতে চায় স্টুডেন্টরা চয়েস ফরমটা দেবে। আমরা রেজাল্টের ভিত্তিতে তাদের সুপারিশ করবো।
 
সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মনোবিজ্ঞান বিভাগে মাস্টার্সে ‘মাস্টার্স ইন সাইকোলজি’, ‘মাস্টার্স ইন স্কুল সাইকোলজি’ ও ‘মাস্টার্স ইন ইন্ডাস্ট্রিয়াল সাইকোলজি’ নামে তিনটি গ্রুপ রয়েছে। যার কারণে তিন গ্রুপের শিক্ষকরা চান নিজের গ্রুপে বেশি সংখ্যক শিক্ষার্থী ভর্তি করতে। কিন্তু শিক্ষার্থীদের বড় অংশই মাস্টার্স ইন সাইকোলজিতে পড়তে আগ্রহী থাকে। ২০১৩-১৪ সেশনের ৮১ শিক্ষার্থীর মধ্যে ৬১ জন এই গ্রুপে পড়ার জন্য চয়েস ফরম জমা দেয়। কিন্তু বিভাগের তৎকালীন চেয়ারম্যান অধ্যাপক নাসরীন ওয়াদুদ একাডেমিক কমিটির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের তিন ভাগে ভাগ করে ফেলেন। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য বিভাগের মাস্টার্সেও এরকম গ্রুপ রয়েছে, সেখানে বিভাগ নির্ধারণ করে দেয় না কে কোন গ্রুপে ভর্তি হবে।
 
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক শিক্ষার্থী বাংলানিউজকে বলেন, তৃতীয় বর্ষের ফলাফলের ভিত্তিতে ভর্তির সিদ্ধান্তের বিষয়টা অদ্ভুত। কারণ আমাদের অনেকে অকৃতকার্যও হতে পারেন।  

আবার অনেকে চতুর্থ বর্ষের উত্তরপত্র শিক্ষকদের কাছে থাকায় সংশ্লিষ্ট শিক্ষকের গ্রুপে না গেলে ফল প্রভাবিত হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেন। তবে শিক্ষার্থীদের একটি অংশ বিভাগের সিদ্ধান্তকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন।
 
গ্রুপিংয়ের কথা স্বীকার করে বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মাহফুজা খানম বাংলানিউজকে বলেন, এটা যার যার ইথিক্‌স এর ব্যাপার। শিক্ষকদের ন্যূনতম একটা ইথিক্‌স থাকতে হয়। ভিকটিমাইজ যদি কেউ কাউকে করতে চায়, সেটা চয়েস ফরম দিলে যে ভিকটিমাইজ করবে তা কিন্তু নয়। ব্যক্তিগত কোনো কারণ থেকেই কেউ করতে পারে, সেটা ভিন্ন ব্যাপার। ছাত্ররা আমাদের সন্তানতুল্য। ব্যক্তিগত কারণে আমরা কেন তাদের ক্ষতি করবো? আমি আমার সব শিক্ষককে বলেছি ওরা আমাদের সন্তানতুল্য। কাজেই ব্যক্তিগত কারণে এরকম কোনো কিছু যেন না হয় এটা আমি সবার কাছ থেকে আশা করি।
 
একাডেমিক কমিটি শিক্ষার্থীদের গ্রুপ নির্ধারণ করে দেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কিছুটা আগেরবার করা হয়েছে। সব গ্রুপ যেন চালু থাকে এজন্য কিছুটা এরকম করা হয়েছে। এবারও যদি দেখি একটা দিকে সবাই চলে যাচ্ছে তখন তো তাদের (সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের) প্রেসার পড়ে যায়, বাকি দুটো স্ট্রিম তো বন্ধ হয়ে যাওয়ার মতো অবস্থা হয়। এজন্য এটা আমরা এবারও করতে পারি। এখনো কিছু ঠিক করিনি।
 
জীব বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ইমদাদুল হক বাংলানিউজকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধির মধ্যে এরকম নিয়ম নেই। তবে একাডেমিক কমিটি চাইলে সিদ্ধান্ত নিতে পারে। কিন্তু সাধারণত আমরা চতুর্থ বর্ষের ফলাফলের ভিত্তিতে মাস্টার্সে ভর্তি নেই।
 
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবহিত নই। তথ্যটা এলে তারপর এ বিষয়ে বলা যাবে।

বাংলাদেশ সময়: ১০০০ ঘণ্টা, এপ্রিল ৩০, ২০১৯
এসকেবি/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad