ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

শিক্ষা

বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়কে ববি শিক্ষার্থীদের অবরোধ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২১ ঘণ্টা, এপ্রিল ১০, ২০১৯
বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়কে ববি শিক্ষার্থীদের অবরোধ মহাসড়ক অবরোধ করে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। ছবি: বাংলানিউজ

বরিশাল: উপাচার্যের পদত্যাগ বা ছুটিতে যাওয়ার বিষয়টি লিখিত আকারে না পাওয়া পর্যন্ত অনির্দিষ্টকালের জন্য বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়ক অবরোধ করেছে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) শিক্ষার্থীরা। 

একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম শুরুর চারদিন পরও তা প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলন কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।

বুধবার (১০ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০টায় বৈরী আবহাওয়ার মধ্যে ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনের নীচতলায় প্রধান ফটক আটকে অবস্থান নেন।

 

পরে বেলা ১১টায় তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়ক অবরোধ করে উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, উপাচার্যের পদত্যাগ বা ছুটিতে যাওয়ার বিষয়টি লিখিত আকারে না পাওয়া পর্যন্ত এ আন্দোলন চলবে।  

এদিকে অবরোধের কারণে বরিশাল থেকে পটুয়াখালী, বরগুনা ও ভোলা জেলার সঙ্গে সড়ক পথে যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। সড়কের উভয়প্রান্তে সৃষ্টি হচ্ছে যানবাহনের দীর্ঘ জট। এতে ভোগান্তির মুখে পড়ছেন যাত্রীরা।

এদিকে গত শনিবার (৬ এপ্রিল) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. হাসিনুর রহমান স্বাক্ষরিত লিখিত এক নোটিশে রোববার (৭ এপ্রিল) সকাল থেকে ক্লাস ও পরীক্ষাসহ যাবতীয় কার্যক্রম চালুর ঘোষণা দেয়া হয়।  

ঘোষণা অনুযায়ী, রোববার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মচারীরা একাডেমিক ভবনের সামনে এসে অবস্থান নিলেও প্রধান ফটক বন্ধ থাকায় তারা ভেতরে প্রবেশ করতে পারেননি। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন পুল তাদের কার্যক্রম চালিয়ে রাখলেও বাসগুলোতে আশানুরূপ শিক্ষার্থীর দেখা মিলছে না।

এদিকে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনের বিষয়ে মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) দিনগত রাতে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. এসএম ইমামুল হক বাংলানিউজকে বলেন, এটা আমাদের কারো হাতে নেই।

শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে পদত্যাগ অথবা ছুটিতে যাওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, আমার ছুটিতে যাওয়ার মতো কোনো কারণ নেই। আর উপাচার্যকে কেউ ছুটিতে পাঠাতে পারেন না। ছুটি নিতে হলে আমি নিজে ছুটি চাইবো, আর সেটা প্রধানমন্ত্রীর মাধ্যমে রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে নিতে হবে। আর একটি হতে পারে, রাষ্ট্রপতি আমাকে ডেকে বলবেন, তুমি ছুটি নাও বা ছুটিতে যাও। এছাড়া কারো কিছু করার এখতিয়ার নেই।

এর আগে ২৬ মার্চ শিক্ষার্থীদের বাদ দিয়ে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠানের আয়োজন করায় আন্দোলন করে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এ জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এসএম ইমামুল হক শিক্ষার্থীদের ‘রাজাকারের বাচ্চা’ বলে উল্লেখ করেন। এরই প্রতিবাদে জোরদার আন্দোলন কর্মসূচি পালন করে আসছিলেন শিক্ষার্থীরা।

২৬ মার্চ থেকে তাদের লাগাতার আন্দোলন কর্মসূচির অংশ হিসেবে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দেয়া, ডিসি অফিস ঘেরাও, বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়ক অবরোধ, নিজেদের শরীরের রক্ত দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের দেয়ালে লিখে উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি, উপাচার্যের কুশপুত্তলিকা দাহ ও মশাল মিছিলসহ নানা কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা।

এক পর্যায়ে আন্দোলনের দু’দিনের মাথায় বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা ও শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশ দিয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কিন্ত শিক্ষার্থীরা হল না ছাড়ার ঘোষণা দিয়ে তাদের আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছিলেন।

পরবর্তীতে গত শনিবার (০৬ এপ্রিল) বরিশাল সার্কিট হাউজে পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামীম, বরিশাল সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহসহ প্রশাসনিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন।

বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রাতে দেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. হাসিনুর রহমান স্বাক্ষরিত লিখিত এক নোটিশে রোববার সকাল থেকে ক্লাস ও পরীক্ষাসহ যাবতীয় কার্যক্রম চালুর ঘোষণা দেয়া হয়।  

তবে শিক্ষার্থীরা সে নোটিশ প্রত্যাখ্যান করে উপাচার্যের পদত্যাগ বা ছুটিতে যাওয়ার বিষয়টি লিখিত আকারে না পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।

বাংলাদেশ সময়: ১২২১ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৯, ২০১৯
এমএস/এসএ/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।