ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

শিক্ষা

ক্লাস বর্জনসহ সিকৃবি শিক্ষার্থীদের ৩ দিনের কর্মসূচি

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৩৪ ঘণ্টা, মার্চ ২৪, ২০১৯
ক্লাস বর্জনসহ সিকৃবি শিক্ষার্থীদের ৩ দিনের কর্মসূচি কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ছবি: বাংলানিউজ

সিলেট: বাসচাপায় ছাত্র হত্যার ঘটনায় তিনদিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

রোববার (২৪ মার্চ) দুপুরে বিভিন্ন অনুষদের শিক্ষার্থীরা ক্লাস পরীক্ষা বর্জনসহ করে নগরের চৌহাট্টা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। দুপুর দেড়টা পর্যন্ত সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ চলে।

বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে শিক্ষার্থীরা জানায়, হাইওয়ে পুলিশের দায়ের করা মামলা দুর্ঘটনা নয়,  হত্যা মামলায় রূপান্তর করতে হবে। তিনদিনের মধ্যে মামলার বিচার প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। এ তিনদিন বিশ্ববিদ্যালয়ে সব ধরনের ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

সিকৃবি ছাত্রলীগ নেতা ও ফিসারিজ সায়েন্স অনু্ষদের মাস্টার্স বায়োক্যামিস্ট্রির ছাত্র আশিকুর রহমান আশিক বলেন,  তিনদিনের মধ্যে দাবি বাস্তবায়ন না হলে ফের আন্দোলনে নেমে সিলেট-ঢাকা মহাসড়ক অচল করে দেওয়া হবে।

এদিকে প্রায় দেড় ঘণ্টাব্যাপী চৌহাট্টা পয়েন্ট অবরোধ থাকায় নগরের সব সড়কে যানজট সৃষ্টি হয়।

অপরদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারিরা একই সময় ক্যাম্পাসে মানববন্ধন করে চালক ও হেলপারের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের ও সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার দাবি জানান।

বাস চাপায় ছাত্র ওয়াসিম আব্বাস হত্যার প্রতিবাদে সকাল ১১টায় ক্যাম্পাস থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বের হন শিক্ষার্থীরা। তারা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে নগরীতে এসে চৌহাট্টা পয়েন্টে সড়কে অবস্থান নিয়ে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেন। এসময় প্রচণ্ড গরমে ৩ শিক্ষার্থী জ্ঞান হারালে তাদের ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।

শনিবার (২৩ মার্চ) বিকেলে সিলেট-ঢাকা মহাসড়কের শেরপুরে বাকবিতণ্ডার জেরে ওয়াসিম আব্বাসকে (২১) বাস চাপা দিয়ে হত্যা করার অভিযোগ উঠে।

নিহত ওয়াসিম হবিগঞ্জের রুদ্রগ্রাম এলাকার মাহবুব ঘোরীর ছেলে। তিনি সিকৃবি’র মাস্টার্স শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।

প্রত্যক্ষদর্শী বাসযাত্রীরা জানান, শনিবার বিকেলে সিলেট-ময়মনসিংহ রুটে চলাচলকারী উদার পরিবহনের বাসের চালক ও হেলপারের সঙ্গে সিকৃবি’র কয়েকজন ছাত্রের ভাড়া নিয়ে বাকবিতণ্ডা হয়। সব শিক্ষার্থী সিলেট-ঢাকা মহাসড়কে নামতে চাইলেও বাস কয়েকজনকে নামিয়ে দিয়েই দ্রুত গতিতে চলতে থাকে। এ সময় ওয়াসিম বাসের দরজার হাতল ধরে ঝুলতে থাকলে হেলপার গাড়ির দরজা লাগিয়ে দেন এবং চালক বাস না থামিয়ে চালাতে থাকেন। এতে ওয়াসিম বাসের নিচে চাপা পড়েন। পরে দ্রুত ওয়াসিমকে উদ্ধার করে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনার পর রাতেই উদার পরিবহনের সেই বাসটিকে (ঢাকা মেট্রো-ভ-১৪-১২৮০) আটক করে শেরপুর হাইওয়ে থানা পুলিশ।

এ ঘটনার প্রতিবাদে সিলেট নগরের প্রবেশদ্বার হুমায়ন রশিদ চত্বরে সড়ক অবরোধ করে টায়ারে আগুন জ্বলিয়ে বিক্ষোভ করছেন সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এ ঘটনায় শনিবার রাত সোয়া ৮টার থেকে প্রায় ঘন্টাব্যাপী নগরীর প্রবেশদ্বার হুমায়ন রশিদ চত্বর অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

রাত সাড়ে ১১টার দিকে এসএমপির দক্ষিণ সুরমা থানা পুলিশ নগরের উপকন্ঠ কদমতলী বাস টার্মিনাল থেকে সিলেট-ময়মনসিংহ সড়কে চলাচল করা উদার পরিবহনের সেই বাসচালক জুয়েল আহমদকে (২৬) আটক করে।

এরপর রাত ২টার দিকে হেলপার মাসুক আলীকে (৪০) সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার সিঙ্গেরকাছ শ্বশুরবাড়ি থেকে আটক করে ছাতক থানা পুলিশ। হেলপার মাসুক আলী সুনামগঞ্জ শহরের তেঘরিয়া এলাকার দৌলত আলীর ছেলে। তাকে মৌলভীবাজার পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

বাসচাপায় ওয়াসিমের মৃত্যু হলেও এ ঘটনায় মামলা করবে না তার পরিবার। তারা ময়নাতদন্ত ছাড়াই মরদেহ নিতে আবেদন করেন। পরে বিনা ময়নাতদন্তে শনিবার রাতে ওয়াসিমের মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানান সিলেট কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সেলিম মিয়া।

এ ঘটনায় পরিবার মামলা না করলেও পুলিশ বাদী হয়ে মামলা দায়ের করা হবে জানান মৌলভীবাজার সদর থানার ওসি মোহাম্মদ সোহেল আহমদ।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৩ ঘণ্টা, মার্চ ২৪, ২০১৯
এনইউ/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।