ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

শিক্ষা

উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের অনুপস্থিতিতে অচল বেরোবি

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০০৪ ঘণ্টা, মার্চ ১৫, ২০১৯
উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের অনুপস্থিতিতে অচল বেরোবি বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়

বেরোবি, (রংপুর): বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি)  কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি চলছে। সেইসঙ্গে নিজস্ব দফতরে আসছেন না বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও রেজিস্ট্রার। কর্মবিরতি এবং উপাচার্য ও রেজিস্ট্রারের অনুপস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম অচল হয়ে পড়েছে।

কর্মকর্তাদের দাবিগুলো মেনে না নেওয়ায় সর্বাত্মক কর্মবিরতি অব্যাহত রেখেছেন তারা। উপাচার্যের ব্যক্তিগত সহকারী (পিএস) আমিনুর রহমানকে অব্যাহতি, ডেপুটি রেজিস্ট্রার আবু হেনা গোলাম মোস্তফাকে সংস্থাপন শাখা থেকে অন্য দফতরে বদলিসহ ১১ দফা দাবিতে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি পালন করছেন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন।

 

বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ)  কর্মবিরতির চতুর্থদিনে সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তারা রেজিস্ট্রার দফতরের সামনে অবস্থান নেন।

তাদের দাবিগুলো হলো- কর্মকর্তাদের স্থায়ীকরণ, যেসব কর্মকর্তার পদোন্নতি বোর্ড হয়নি তাদের বোর্ড দ্রুত সম্পন্ন করা, যেসব কর্মকর্তার পদবী বদল করা হয়েছে তাদের স্বপদে ফিরিয়ে আনা, সরকারি নিয়মে পুলিশ ভেরিফিকেশন ফরম প্রস্তুত করা, প্রতিটি দফতরকে নিজস্ব কাজ বুঝিয়ে দিয়ে প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণ নিশ্চিত করা, প্রশাসন ভবনে কক্ষ বরাদ্দের নিমিত্তে যে কমিটি গঠিত হয়েছে তাতে জ্যেষ্ঠতার নীতি অবলম্বন করা, ৫৮ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর বকেয়া বেতন পরিশোধ করা, হয়রানিমূলক বদলি করা কর্মকর্তাদের নিজ নিজ দফতরে পুনর্বহাল করা, রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে স্বতন্ত্রতা ও গোপনীয়তা রক্ষা করা এবং রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের অধীনস্থ কর্মকর্তার নজরদারি বন্ধ করা।

বেরোবিতে চলছে কর্মবিরতি-ছবি-বাংলানিউজএ বিষয়ে অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের সর্বাত্মক কর্মবিরতি চলছে। এই চারদিনে রেজিস্ট্রার এবং উপাচার্য আমাদের যৌক্তিক দাবিগুলোর বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো আশ্বাস দেননি। এমনকি তারা কর্মবিরতির শুরুর দিন থেকে নিজস্ব দফতরে আসছেন না। এমতাবস্থায় আমাদের যৌক্তিক ১১ দফা দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি অনির্দিষ্টকালের জন্য চলবে।

এদিকে কর্মচারীদের দাবিগুলোর ব্যাপারে কোনো আশ্বাস না পেয়ে দ্বিতীয়দিনের মতো কর্মবিরতি অব্যাহত রেখেছে কর্মচারী ইউনিয়ন (৪র্থ শ্রেণি)। ১০ দফা দাবি আদায়ে কর্মবিরতির দ্বিতীয় দিনে সকাল থেকে ক্যাম্পাসের শেখ রাসেল চত্বরে কর্মবিরতি করছেন তারা।

কর্মচারীদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে, আগামী সিন্ডিকেটের আগে কর্মচারীদের নীতিমালা পাস, চলতি মাসেই ৫৮ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর বকেয়া পরিশোধ, দ্রুত পেনশন নীতিমালা বাস্তবায়ন, সাময়িক বরখাস্ত করা কর্মচারীদের চাকরিতে পুনর্বহাল, দূরের কর্মচারীদের জন্য গাড়ি ও আবাসন সুবিধা নিশ্চিত করা, কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতিকে লাঞ্চিত করার ঘটনার বিচার করা, কর্মচারী নিয়োগ কমিটিতে কর্মচারী ইউনিয়নের প্রতিনিধি রাখা ও মাস্টাররোল কর্মচারীদের চাকরি স্থায়ী করা।

কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি নুর আলম বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের দাবিগুলো নিয়ে এখনও উপাচার্য কোনো আশ্বাস দেননি। তাই যৌক্তিক দাবিগুলো মেনে না নেওয়া পর্যন্ত আমাদের সর্বাত্মক কর্মবিরতি চলতে থাকবে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খায়রুল কবির সুমন বাংলানিউজকে বলেন, আন্দোলনকারীদের যৌক্তিক দাবি মেনে নেওয়া উচিৎ। তারা দীর্ঘদিন ধরে এসব দাবি জানিয়ে আসছেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উদাসীনতা ও দায়িত্বহীনতার ফলে প্রশাসনিক কার্যক্রমের পাশাপাশি একাডেমিক কার্যক্রমেও স্থবিরতা নেম এসেছে। উপাচার্যের ধারাবাহিক অনুপস্থিতি ও প্রশাসনের একগুয়েমির ফলে এমনটা হচ্ছে।   

সার্বিক বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ এবং রেজিস্ট্রার আবু হেনা মোস্তফা কামালের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তারা কল রিসিভ করেননি।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দফতরের সহকারী পরিচালক তাবিউর রহমান প্রধান বাংলানিউজকে বলেন, কর্মকর্তা এবং কর্মচারীরা তাদের দাবি নিয়ে আন্দোলন করছেন। তাদের দাবির বিষয়ে অতি দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে সমাধান করা হবে।  

বাংলাদেশ সময়: ২০০৩ ঘণ্টা, মার্চ ১৪, ২০১৯
আরআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।