ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

শিক্ষা

বিডিইউ হবে বিশ্বমানের পূর্ণাঙ্গ ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয়

মাহবুব আলম, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২০ ঘণ্টা, মার্চ ১২, ২০১৯
বিডিইউ হবে বিশ্বমানের পূর্ণাঙ্গ ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয় বিডিইউ-এর উপাচার্য ড. মুনাজ আহমেদ নূর। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: ড. মুনাজ আহমেদ নূর; বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের খ্যাতনামা অধ্যাপক। অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশন (ওআইসি) পরিচালিত গাজীপুরের ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।

এর আগে ড. মুনাজ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্যের দায়িত্বেও ছিলেন। ২০০০ সালে ইউনিভার্সিটি অব টোকিও থেকে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ওপর পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেছেন।

তার গবেষণার মূল বিষয়বস্তু ছিলো- ‘কংক্রিট টেকনোলজি, আরবান সেফটি, ক্লাইমেট চেঞ্জ, আর্থ কোয়েক ডিজাস্টার’।

নেদারল্যান্ডস, ইতালিসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের খ্যাতনামা প্রতিষ্ঠানে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন, পড়িয়েছেনড. মুনাজ। গত বছর তাকে দেশের প্রথম ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটির উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন এর আচার্য ও রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।

এরই মধ্যে সরকারের এই অগ্রাধিকারমূলক প্রকল্পটিকে বিশ্বমানের পূর্ণাঙ্গ ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে কাজ শুরু করে দিয়েছেন কীর্তিমান এই শিক্ষাবিদ। প্রথম ব্যাচে শিক্ষার্থী ভর্তির পাশাপাশি কালিয়াকৈরের অস্থায়ী ক্যাম্পাসে চলছে ক্লাস শুরুর প্রস্তুতিও।

সম্প্রতি বাংলানিউজের সঙ্গে আলাপে নিজের স্বপ্ন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অগ্রগতি প্রসঙ্গে জানিয়েছেন ড. মুনাজ। তার সঙ্গে কথা বলেছেন  বাংলানিউজের মাহবুব আলম।  

বাংলানিউজ: ডিজিটাল বাংলাদেশ, এই ধারণার সঙ্গে সঙ্গতি রেখেই বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা। বর্তমান বৈশ্বিক বাস্তবতায় ও তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ে দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তুলতে বিশেষায়িত এ বিশ্ববিদ্যালয়ের লক্ষ্য কী?

ড. মুনাজ আহমেদ নূর: এখানে দুটো বিষয় আছে- যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয়টা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটা ভিশন ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ কনসেপ্টের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই তৈরি করা হয়েছে; তার আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়েরও ড্রিম এই বিশ্ববিদ্যালয়। আমাদের ড্রিম হচ্ছে- ভিশন ২০২১, ডিজিটাল বাংলাদেশ, মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে সরকারের উন্নত বিশ্বের যে পরিকল্পনা-সেটাকে সামনে রেখেই সকল কার্যক্রম পরিচালনা করা।  

দুই হচ্ছে- সরকারের সেভেনথ ফাইভ ইয়ার প্ল্যান। এই প্ল্যানটি সাসটেনেবল ডেভেলপমেন্ট গোলের (এসডিজি) সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই করা। আমরা যেভাবে ২০১৫ সালের আগেই মিলিলিনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোল (এমডিজি) অর্জন করতে পেরেছিলাম, সেই মতে ২০৩০ সালের মধ্যে যেনো এসডিজি অর্জন করতে পারি সেজন্যও কিন্তু এই জিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণের উদ্দেশ্য।

বাংলানিউজ: সরকারের ওই ভিশনে এই বিশ্ববিদ্যালয় কীভাবে এবং কতটুকু ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন?
ড. মুনাজ আহমেদ নূর: এই বিশ্ববিদ্যালয় যেসব বিষয় নিয়ে কাজ করবে এর সবই হবে সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশের কনসেপ্টকে সামনে রেখে। আমরা যাকে বলি-ফোর্থ ইন্ডাস্ট্রিয়াল রেভুল্যুশন। আমরা আমাদের উন্নত বিশ্বে দেখার জন্য জন্য আমার যে স্কিলড (দক্ষ) ম্যান পাওয়ার (মানবসম্পদ) দরকার সেই ম্যান পাওয়ার যেন আমরা তৈরি করতে পারি-সেটাই হচ্ছে এই বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের প্রধান উদ্দেশ্য। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ও ইন্ডাস্ট্রির মধ্যে সাধারণত একটা গ্যাপ থাকে। তবে একটা গ্র্যাজুয়েট বের করতে চার বছর সময় লেগে যায়। আমরা চেষ্টা করবো অনলাইনের মাধ্যমে সেই গ্যাপটা পূরণ করতে। তাই এ গ্যাপ বিষয়ক অনলাইন কোর্স দিয়ে সেই স্কিলড ম্যান পাওয়ার তৈরি করতে চেষ্টা করবো। এক্ষেত্রে এ বিশ্ববিদ্যালয় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আমি বিশ্বাস করি।  
বিডিইউ-এর উপাচার্য প্রফেসর ড. মুনাজ আহমেদ নূর।  ছবি: বাংলানিউজবাংলানিউজ: উন্নত বিশ্বে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি করতে নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অনলাইন কোর্স চালু করছে। বঙ্গবন্ধু ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয়ের এ ধরনের পরিকল্পনা রয়েছে কী?

ড. মুনাজ: দক্ষ মানবসম্পদের যে গ্যাপটা রয়েছে আমরা সেটা যেন কুইক (দ্রুত) পূরণ করতে পারি, সেজন্য দূরশিক্ষণ কার্যক্রমের আধুনিক সংস্করণ অনলাইন কোর্স চালু করেছি। এটাকে আমরা বলছি- ম্যাসিভ ওপেন অনলাইন কোর্স (এমওওসি)। এটি একটি অনলাইন কোর্স প্ল্যাটফর্ম। এর অধীনে থাকবে অনেকগুলো অনলাইন কোর্স।  ডিজিটাল লার্নিং ডিজাইন। আরও কোর্স এখানে যুক্ত হতে থাকবে।

বাংলানিউজ: এই বিশ্ববিদ্যালয়ে কোন ধরনের বিষয় থাকছে, যেগুলো পূর্ণাঙ্গ ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে ভূমিকা রাখবে?

ড. মুনাজ আহমেদ নূর: ফোর্থ ইন্ডাস্ট্রিয়াল রেভুল্যুশন বলেন, মধ্যম আয়ের দেশ বলেন- উন্নত বিশ্বে যাওয়ার জন্য যে ম্যান পাওয়ার দরকার সেটা আমরা এই বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন নতুন বিষয় খুলে তৈরি করতে পারবো। আমরা এখানে গতানুগতিক ধারার বিষয়গুলো চালু করতে চাই না। প্রথমবার ব্যাচেলর অব সায়েন্স অ্যান্ড ইন্টারনেট অব থিংক (বিএসআইওটি) ও আইসিটি ইন এডুকেশন বিষয় চালু করা হয়েছে।

বর্তমানে পৃথিবীর সকল দেশেই ইন্টারনেট অব থিংস নিয়ে কাজ হচ্ছে। এটাই ভবিষ্যত হবে। আর আইসিটি ইন এডুকেশন এই কারণে খোলা হচ্ছে কারণ আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থাকে যাতে আইসিটি এনাবলড (ইউনিভার্সিটি লেভেলে কিছুটা আইসিটি বেজড হলেও প্রাইমারি ও সেকেন্ডারিতে সেভাবে নেই, হায়ার লেভেলে সেভাবে পৌঁছাতে পারিনি, যদিও কোনো কোনো ক্ষেত্রে মাল্টিমিডিয়া ক্লাস রুম আছে) হয় সেদিকটি মাথায় রেখেই নতুন বিষয় চালু করা হবে। আর শিক্ষকদেরও তো সেই জায়গায় নিয়ে যেতে হবে। শিক্ষকরা তো নিজেরাই সব করতে পারবেন না। তার একটা সহযোগী লাগবে। আইসিটি ইন এডুকেশনে যে ছেলেরা পাস করে বের হবে চার বছর পরে, তারাই এই হেল্প করতে পারবে। এটাকে আমরা বলছি টেকনোলজি এনাবলড এডমিনিস্ট্রেশেন এবং টেকনোলজি এনাবলড এডুকেশন। এই দুটো বিষয় মাথায় রেখেই ব্যাচেলর অব আইসিটি ইন এডুকেশন খোলা হয়েছে।

বাংলানিউজ: বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে দূরশিক্ষণ বা হাল আমলের অনলাইন কোর্স ঘরে বসে শিখলে কতটুকু কার্যকর হবে? শিক্ষণের ধরন কেমন হবে?
ড. মুনাজ আহমেদ নূর: টিচিং লার্নিংয়ের অনেক মেথড আছে। যেমন, ফেস টু ফেস।  ক্লাসরুমে বসে করা। ব্ল্যান্ডেড লার্নিং-কিছু অনলাইনে কিছু ফেস টু ফেস। আছে ফ্লিপড লার্নিং মেথড। এ পদ্ধতিতে একটা ভিডিও তৈরি করা থাকবে। সেটা আগে শিক্ষার্থীরা দেখবে, তারপর ক্লাসে আসবে। সেখানে কী কী জিনিস বুঝেনি পরে ক্লাসে তা নিয়ে আলোচনা হবে। টিচিং অ্যান্ড লার্নিংয়ের একটি হচ্ছে সম্পূর্ণ অনলাইনভিত্তিক স্কিল ডেভেলপমেন্ট কোর্স। যেটাকে বলি ম্যাসিভ ওপেন অনলাইন কোর্স।  এটা বিশ্বব্যাপী একটি স্বীকৃত প্ল্যাটফর্ম।  বিডিইউ-এর উপাচার্য প্রফেসর ড. মুনাজ আহমেদ নূর।

যেমন কোর্সেরা, এডেক্স, টেডেক্স, ইউডেমি রয়েছে। এখানে যেটা হয় লেকচার দেখে দেখে ছেলেরা শিখতে পারে। হাতে কলমে শেখারও ব্যবস্থা আছে। এক পর্যায়ে এসে একটা অ্যাসেসমেন্ট প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সার্টিফিকেট দেয়া হয়। বৈশ্বিকভাবে বিষয়টা নতুন নয়, বাংলাদেশে নতুন। এখানে কোনো পাবলিক-প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনগত দায়িত্ব ও ক্ষমতা নেই এটি করার। যা একমাত্র আমাদের আছে।
 
এ বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা অনলাইনে যে কোর্স চালু করেছি সেটি স্কিল কোর্স, রেগুলার নয়। অনলাইনে ভিডিও কিংবা ক্লাস দেখে কিছু শিখবে তারপর একটা অ্যাসেসমেন্টের মাধ্যমে একটা সার্টিফিকেট দেয়া হবে। আর ওই অ্যাসেসমেন্টে পাস করলে যিনি সার্টিফিকেট অর্জন করবে তিনি কাজগুলোও করতে পারবে। এখানে থিওরি বিষয়ে কিছু থাকবে না। যেগুলো একটা মানুষের কাজটা করার প্রযোজ্য প্রয়োজন তাই শেখানো হবে। এজন্য একটা টোকেন মানি অর্থাৎ কোর্স ফি নেয়া হচ্ছে ২০০ টাকা। এতে ভর্তির জন্য আলাদা কোনো যোগ্যতা নেই।  

বাংলানিউজ: এ বিশ্ববিদ্যালয় প্রণীত ‘এডুকেশন ক্লাউড’ বিষয়ে যদি বলেন! 
ড. মুনাজ আহমেদ নূর: ‘ আসলে এটা শিক্ষা ও শিক্ষণের একটা ডিজিটাল পদ্ধতি। আমরা একটা উদাহরণ সৃষ্টি করবো, যাতে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ও উদাহরণ হিসেবে নিয়ে তাদের বিশ্ববিদ্যালয়টাকেও এভাবে সাজায়। এর মাধ্যমে পুরো বিষয়টাই অনলাইনে হবে। এতে একছাত্র কিভাবে  পড়ছে,  কতটুকু পড়ছে। অ্যাসাইনমেন্ট জমা দেয়াসহ সব বিষয়ই হবে অনলাইনে। সেটা প্রশাসনিক-ই হোক আর অ্যাকাডেমিকই হোক। এখানে শিক্ষক-শিক্ষার্থী তার দৈনন্দিন কার্যক্রম ট্রান্সপারেন্স ওয়েতে করতে পারবে। এজন্য ভালো কম্পিউটারের  দরকার। আমরা সরকারের কাছে একটি সুপার কম্পিউটার চাইবো। আর এটাকে আমরা বলছি ইউনিভার্সিটি এডুকেশন ক্লাইড। যখন প্রত্যেকটি বিশ্ববিদ্যালয় এই ক্লাউডে যুক্ত হবে সেটাকে বলি- ন্যাশনাল লেভেল এডুকেশন ক্লাউড।  যখন আরেকটু বাড়ানো হবে- সেটা এশিয়ান বা রিজিওনাল ক্লাউড। আরেকটু দূরে নিয়ে গেলে সেটা হবে ইন্টারন্যাশনাল ক্লাউড। এটা একটা বিগ কনসেপ্ট। আস্তে আস্তে বড় হবে। আমরা সেই শুরুটা করে দিতে চাই।  

বাংলানিউজ: বর্তমান প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশে সাইবার সিকিউরিটি বিষয়ে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা কেমন হবে?
ড. মুনাজ আহমেদ নূর: সাইবার সিকিউরিটি থেকে শুরু করে সবক্ষেত্রেই ভূমিকা রাখবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি। আমরা যে ডিপিপি (উন্নয়ন প্রকল্প প্রণয়ন) তৈরি করছি সেটি সরকার অনুমোদন দিলে আন্তর্জাতিকমানের ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয় এখানে তৈরি হবে। ডিজিটাল বাংলাদেশের দক্ষ ম্যান পাওয়ার এখান থেকে বের হবে। এটা ধরে রাখার  ম্যান পাওয়ার তৈরি হবে।

বাংলানিউজ: বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথমবর্ষে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের ক্লাস শুরু হবে কবে? 
ড. মুনাজ আহমেদ নূর: বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস কালিয়াকৈরেই মে মাসে ক্লাস শুরু করবো, ইসনশাআল্লাহ।

বাংলানিউজ: ভবিষ্যতে কোন কোন বিষয় খোলা হবে?
ড. মুনাজ আহমেদ নূর: এবার প্রতিটি বিষেয়ে ৫০জন করে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়েছে। মূল ক্যাম্পাসে যাওয়ার আগে ৪টার বেশি বিষয় চালু করা যাবে না। আগামী শিক্ষাবর্ষে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি, আর্টিফিসিয়াল ইন্টিলিজেন্স যদি আমরা খুলতে পারি-সেটা একটা বিরাট বিষয়। এরপর বিগ ডাটা অ্যানালাইসিস ও রোবটিক বিষয় চালুর প্ল্যানও আছে। এর মধ্যে সাইবার সিকিউরিটি কোর্স হিসেবে শুরু করা। ব্লক চেন (Block Chain) ছোট-খাট কোর্স থ্রিডি প্রিন্টিং ইত্যাদি বিষয় নিয়ে কাজ করা যেতে পারে।
 
বাংলানিউজ: ডিজিটাল বাংলাদেশের কনসেপ্টের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয়। সেক্ষেত্রে এখানকার শিক্ষকদেরও হতে হবে বিশ্বমানের। শিক্ষক কারা হবে?

ড. মুনাজ আহমেদ নূর: শিক্ষক পাওয়াই হবে আমাদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। এটাকে প্রতিবন্ধকতা বলবো না কিন্তু চ্যালেঞ্জ। এটাকে ওভারকাম করতেই হবে। এখানে (বাংলাদেশ) ভালো শিক্ষকের রিয়েলি অভাব রয়েছে। যেটা আমরা দেখছি। এক্ষেত্রে বাইরে থেকে শিক্ষক এনেই সলভ (সমাধান) করা সম্ভব। আজ কেন ঢাকা কিংবা বুয়েট একটা ব্র্যান্ডিং তৈরি করতে পেরেছে? কারণ বুয়েট কিংবা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হওয়ার সময় বাইরের শিক্ষকরা এখানে চার-পাঁচ বছর ছিলেন। তাদের আলাদাভাবে বেতন-ভাতা দেয়া হয়েছে। তারপর তারাই বিদ্যান তৈরি করেছেন। আমরা নতুন ডাইমেনশনে বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করতে চাই, জেনুইন ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করতে চাই সেটা এই শিক্ষকদের দিয়ে তৈরি করা কঠিন হয়ে যাবে। কারণ তারা সেই মাইন্ড সেট কিংবা সেই দক্ষতায় দক্ষ নাও থাকতে পারেন।  
বিডিইউ-এর উপাচার্য ড. মুনাজ আহমেদ নূর।  ছবি: বাংলানিউজএখন দুটো উপায় হতে পারে। বাংলাদেশি শিক্ষক যারা বাইরে আছেন তারা যদি এখানে আসেন-তাহলে হতে পারে। আরেকটা বিষয় হতে পারে- বিদেশি শিক্ষকদের যদি আমরা এখানে নিয়ে আসতে পারি। যদিও আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনে সেটা আছে। ভিশনটা আগে থেকেই নেয়া আছে। আমরা দুইভাবেই চেষ্টা করবো।  আর না হলে আমাদের যা আছে তাদের দিয়ে সেটা প্রশিক্ষণের মাধ্যমেই হোক টিচিংয়ের মাধ্যমেই হোক সে জায়গায় নিয়ে যেতে চেষ্টা করবো।
 
বাংলানিউজ: পূর্ণাঙ্গ অবকাঠামো গড়তে সময় কেমন লাগতে পারে? 
ড. মুনাজ আহমেদ নূর: পূর্ণাঙ্গ অবকাঠামোয় ফিরতে তিনবছর লাগবে, সেটা ডিপিপি পাস হওয়ার পর। এখানে শিক্ষার্থদের পূর্ণাঙ্গ শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত করা হবে। এটা হবে বিশ্বমানের একটা পূর্ণাঙ্গ ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয়। শিক্ষার্থীদের বিশ্বমানের লার্নিং এনভায়রনমেন্ট দেবো। আর সেটা কালিয়াকৈরে দেয়া সম্ভব।  
 
বাংলানিউজ: সময় দেয়ার জন্য ধন্যবাদ।
ড. মুনাজ আহমেদ নূর: বাংলানিউজকেও ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা।

বাংলাদেশ সময়: ০২১০ ঘণ্টা, মার্চ ১২, ২০১৯
এমএ/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।