ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫

শিক্ষা

মামলা ৭ দিনের মধ্যে প্রত্যাহারের দাবি শিক্ষার্থীদের

ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৩৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৮, ২০১৮
মামলা ৭ দিনের মধ্যে প্রত্যাহারের দাবি শিক্ষার্থীদের সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম-আহ্বায়ক নূরুল হক নূর। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন চলাকালে সহিংতা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্যের বাসভবনে হামলার ঘটনায় ‘অজ্ঞাতনামাদের’ নামে দায়ের করা মামলা সাত দিনের মধ্যে প্রত্যাহার করার দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। অন্যথায় দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।

বুধবার (১৮ এপ্রিল) বিকেল সোয়া ৪টায় ঢাবির কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে সংবাদ সম্মেলন করে এ দাবি জানান আন্দোলনরতদের সংগঠন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম-আহ্বায়ক নূরুল হক নূর। ভিডিও ফুটেজ দেখে উপাচার্যের বাসভবনে হামলার পেছনে জড়িত প্রকৃত অপরাধীদের শনাক্ত করে মামলায় আসামি করার কথাও বলা হয় সংবাদ সম্মেলনে।

নূরুল হক বলেন, সাধারণ শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে দুষ্কৃতিকারীর বিচ্ছিন্ন ঘটনায় পুলিশ ও ঢাবি প্রশাসন ‘অজ্ঞাতনামাদের’ বিরুদ্ধে মামলা করে। ‘অজ্ঞাতনামাদের’ মামলায় আসামি করায় হয়রানির আশঙ্কা করছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। তাই উপাচার্যের বাসায় যারা হামলা করেছে, তাদের শনাক্ত করতে সংবাদমাধ্যমের খবর ও ভিডিও ফুটেজ দেখে এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছ থেকে তথ্য নিয়ে অতি দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করবো। কিন্তু ‘অজ্ঞাতনামাদের’ নামে মামলা রেখে সাধারণ শিক্ষার্থীদের হয়রানি করা যাবে না। আমরা তদন্ত করে দোষীদের বের করার জন্য ঢাবি ও পুলিশ প্রশাসনকে সাত দিন সময় বেঁধে দিচ্ছি। অন্যথায় দেশের সব প্রতিষ্ঠানে অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস পরীক্ষা বর্জন করবে ছাত্র সমাজ।

এক প্রশের উত্তরে ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম-আহ্বায়ক বলেন, উপাচার্যের বাসভবনে হামলার সময় সাংবাদকিরা কয়েকজনকে ধরে ফেলেন। কিন্তু কোনো অদৃশ্য শক্তি তাদেরকে ছাড়িয়ে নিয়ে গেছে। টেলিভিশনের ফুটেজে ঢাকা কলেজের টি-শার্ট ও হেলমেট পরিহিত একজনকে রড হাতে দেখা গেছে।

নূর বলেন, যৌক্তিক দাবিতে আন্দোলনকারী ও নেতৃত্বদানকারী শিক্ষার্থীদের নানা রকম ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। ফেসবুকসহ বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়াতেও অপ্রপচার চালানো হচ্ছে। তাই আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী সক্রিয় ভূমিকা পালনকারী প্রতিটি শিক্ষার্থীর নিরাপত্তা দিতে হবে এবং কোটা বাতিলে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার অতি দ্রুত প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে।  

নিরাপত্তার আশঙ্কা নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে নূরুল হক বলেন, একটি মহল ফেসবুকে আমাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে, তারা আমাদের ‘খেয়ে দিতে’ উস্কানি দিচ্ছে। আমরা সবাই আমাদের জীবননাশের শঙ্কায় আছি। আমাদের আহ্বায়ককেও ভয় দেখানো হচ্ছে, যার কারণে তিনি আজকের সংবাদ সম্মেলনে আসেননি। আমাদের অনেকে বিবৃতি দিয়েও ভয় পাচ্ছেন, এজন্য কথা পরিবর্তন করে ফেলছেন।

এসময় উপস্থিত ছিলেন ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম-আহ্বায়ক মুহাম্মদ রাশেদ খাঁন, ফারুক হাসান প্রমুখ।

সংবাদ সম্মেলন চলাকালে ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সভাপতি আবিদ আল হাসান, সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন প্রিন্সসহ কেন্দ্রীয়, বিশ্ববিদ্যালয়, হল শাখার নেতাকর্মীদের গ্রন্থাগারের আশেপাশে ঘুরতে দেখা যায়। সংবাদ সম্মেলন শেষ হলে আন্দোলনে টিয়ারশেলে আহত আবু বকর সিদ্দিককে নিয়ে ছাত্রলীগের নেতারা সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন। আবু বকর বলেন, আমাকে নিয়ে গুজব ছড়ানো হয়েছিল। উপাচার্যের বাসায় হামলার পেছনে তৃতীয় পক্ষ জড়িত থাকতে পারে। এ ঘটনায় দোষীদের শাস্তি দাবি করছি।

কোটা সংস্কার দাবির আন্দোলন চলাকালে গত ৮ এপ্রিল রাতে ঢাবি উপাচার্যের বাসভবনে তাণ্ডব চালায় দুর্বৃত্তরা। ভবনের ভেতরে তছনছ চালানোর পাশাপাশি বাইরেও গাড়ি ও মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করা হয়।  

এ ঘটনায় ১০ এপ্রিল রাতে শাহবাগ থানায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ বাদী হয়ে মামলা চারটি দায়ের করে। শিক্ষার্থীরা এসব মামলায় ‘হয়রানির শিকার হওয়ার আশঙ্কায়’ প্রথম থেকেই প্রত্যাহারের দাবি তুলে আসছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩২ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৮, ২০১৮/আপডেট ১৯৪৪ ঘণ্টা
এসকেবি/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

শিক্ষা এর সর্বশেষ