ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

শিক্ষা

অর্ধযুগেও শেষ হয়নি জবির ছাত্রী হলের নির্মাণ কাজ!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৫০ ঘণ্টা, মার্চ ৮, ২০১৮
অর্ধযুগেও শেষ হয়নি জবির ছাত্রী হলের নির্মাণ কাজ! হলের নির্মাণ কাজ চলছে/ ছবি: বাংলানিউজ

কোনো ধরনের আবাসিক সুবিধা ছাড়াই বিশ্ববিদ্যালয় হিসাবে আত্মপ্রকাশ করা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি)।

আত্মপ্রকাশের অর্ধযুগ পার হওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের উপলব্ধি হয় মেয়েদের জন্য একটি হল নির্মাণের প্রয়োজন। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের একমাত্র হলের নির্মাণ কাজ শুরু হলে সেটারও অর্ধযুগ পার হতে চললেও শেষ হয়নি নির্মাণ কাজ।

 

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ২০১৮ সালে হলটি মেয়েদের থাকার জন্য প্রস্তুত হবে জানালেও বাস্তবে তা হবে কিনা সেটা নিয়ে দোলাচলে রয়েছেন প্রকল্প কর্মকর্তা ও শিক্ষার্থীরা।

অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০১২ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি জবি ছাত্রলীগের তৎকালীন আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম আকন্দের নেতৃত্বে ৩/১, লিয়াকত এভিনিউয়ের ২৩ কাঠা জায়গাটির অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করেন শিক্ষার্থীরা।  

২০১৩ সালের ২৫ আগস্ট জায়গাটিতে ‘বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব’ ছাত্রী হল নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ। ওইদিন শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতরের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বৈঠকে এক হাজার ছাত্রীর আবাসন সুবিধা নিশ্চিত করতে ২০তলা ফাউন্ডেশনের দুটি টাওয়ার নির্মাণের প্রাথমিক কাজ শুরুর সিদ্ধান্ত হয়।

প্রথমে ২০তলা ভিত্তির উপর ১৬তলা ভবনের এ হলটির নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় ৩৩ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। প্রকল্পের মেয়াদ ছিল ৩৬ মাস। যার বাস্তবায়নের ভার ন্যাস্ত হয় শিক্ষা প্রকৌশল দফতরের ওপর। অর্ধযুগেও শেষ হয়নি জবির ছাত্রী হলের নির্মাণ কাজ!সে হিসাবে প্রকল্পটি শুরু হয় ২০১১ সালের ৩১ জানুয়ারিতে। যার মেয়াদ ছিল ২০১৩ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত। কিন্তু ওই সময়ে তা সম্ভব না হওয়ায় মেয়াদ বৃদ্ধি করে ২০১৬ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত করে সরকার।  

এরপরও প্রকল্পটি সম্পন্ন না হওয়ায় বিশেষ শর্তে আবার মেয়াদ ২০১৬ সালের জুন থেকে ২০১৮ সালের জুন পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়। পরপর তিনবার সময় বৃদ্ধি করে প্রকল্পটি আবার চালু করা হয়। সরকারি উন্নয়ন প্রকল্পের কোনো কাজের বাস্তবায়ন মেয়াদ দুই বারের বেশি বৃদ্ধির সুযোগ না থাকলেও বিশেষ পরিস্থিতিতে বিশেষ বিবেচনায় এ প্রকল্পটি তৃতীয়বারের মতো বৃদ্ধি করা যায়। ফলে নির্মাণের মধ্যেই চলে যেতে বসেছে ৬টি বছর। কিন্তু তৃতীয়বারের বাড়ানো সময়েও যে নির্মাণ কাজ শেষ হবে এটাও জোর দিয়ে বলতে পারছেন না কেউ!

প্রকল্পের দীর্ঘসূত্রিতা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে হল নির্মাণে দায়িত্বরত প্রজেক্ট ম্যানেজার জিল্লুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, যদিও এ বছরেই কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল কিন্তু ভবনের কাজ করার জন্য আশপাশে যে পরিমাণ জায়গার প্রয়োজন সেই পরিমাণ পর্যাপ্ত জায়গা নেই। তাই একপাশ থেকেই কাজ চালাতে হয়। ফলে একের অধিক কাজ করা না যাওয়ায় সময় বেড়েছে। ২০১৮ সালের শেষের দিকে এর কাজ পুরোপুরি শেষ হবে।

এদিকে দীর্ঘদিন ধরেই হলটির নির্মাণ কাজের ধীরগতির সমালোচনা করছেন শিক্ষার্থীরা। তারা বলছেন, নতুন কোন হল নির্মিত হচ্ছে না। কয়েক দফা আন্দোলনের ফসল মেয়েদের এই হল দেখিয়ে বিভিন্ন সময় হল আন্দোলন বন্ধের চেষ্টা করেছে প্রশাসন। কিন্তু মেয়েদের এই হলটি এখনো নির্মাণ করতে পারেনি প্রশাসন। যেখানে দুইবার মেয়াদ বাড়িয়েও কাজ সময়মতো শেষ করা যায়নি, তখন তৃতীয়বারেও শেষ হবে কিনা তাই দেখার বিষয়। এর দায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকেই নিতে হবে।

এ বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মীজানুর রহমানকে ফোন দেওয়া হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তবে বেশ কিছু দিন আগে নির্মাণাধীন এই হল পরিদর্শন করতে এসে তিনি বলেছিলেন, এখানে ছোট্ট একটি জায়গায় এত বড় একটি হল নির্মাণ করতে গিয়ে আমাদের যথেষ্ট বেগ পেতে হচ্ছে। এখানে নির্মাণ কাজ করার জন্য যতটা যায়গা থাকার প্রয়োজন তা নেই। সেই মিরপুর থেকে ঢালাই মিশ্রণ এনে এখানে কাজ করতে হয়। তারপরেও খুব দ্রুত কাজ হয়েছে, ২০১৮ এর জুন মাসে হলটিতে আমাদের মেয়েরা উঠতে পারবে আশা করি।

বাংলাদেশ সময়: ০৭৪৭ ঘণ্টা, মার্চ ০৮, ২০১৮
কেডি/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।