ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

শিক্ষা

শিওরক্যাশে উপবৃত্তির অর্থ বিতরণে অনিয়ম, তদন্তের নির্দেশ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২০৬ ঘণ্টা, জুন ২২, ২০১৭
শিওরক্যাশে উপবৃত্তির অর্থ বিতরণে অনিয়ম, তদন্তের নির্দেশ

ঢাকা: রূপালী ব্যাংকের শিওরক্যাশের মাধ্যমে প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের মোবাইলে উপবৃত্তির অর্থ বিতরণে অনিয়ম তদন্ত করে জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছে সরকার।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর বৃহস্পতিবার (২২ জুন) এ সংক্রান্ত চিঠি রূপালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে পাঠিয়েছে।

মোবাইলে উপবৃত্তি প্রদানে সমস্যা দ্রুত সমাধান এবং অভিভাবকদের দুর্ভোগ নিরসন করা না হলে চুক্তির লঙ্ঘন হিসেবে বিবেচনা করে হুঁশিয়ারি দিয়ে সাত কর্মদিবসের মধ্যে করণীয় জানাতে বলেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।

মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে প্রান্তিক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের মাসিক উপবৃত্তির অর্থ প্রদানে গত বছরের ২৪ আগস্ট প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রীর উপস্থিতিতে টেলিটক এবং রূপালী ব্যাংকের মধ্যে চুক্তি সই হয়।

টেলিটকের ‘মায়ের হাসি’ নামে সিম দিয়ে শিওরক্যাশ উপবৃত্তির অর্থ প্রদানের কথা বলা হয় চুক্তিতে। কিন্তু শুরুতেই অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনা দেখা যায়।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের চিঠিতে বলা হয়েছে, রূপালী ব্যাংক শিওরক্যাশের মাধ্যমে সারা দেশে মোবাইলে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও স্বতন্ত্র এবতেদায়ি মাদরাসার সুবিধাভোগী শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি প্রদানে অনিয়ম ও জটিলতা সৃষ্টি হচ্ছে মর্মে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়।

‘উপবৃত্তির অর্থ বিতরণ চলাকালীন সুবিধাভোগী মা/অভিভাবকদের কম অর্থ প্রেরণ, (যেমন, প্রতি কিস্তিতে একজন শিক্ষার্থীর ৩০০ টাকার স্থলে ১৫০ টাকা) মোবাইলে মেসেজ না যাওয়া, শিওরক্যাশের এজেন্টদের অপ্রতুলতা ও এজেন্ট কর্তৃক উপবৃত্তির অর্থ থেকে অবৈধভাবে ১০ টাকা থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত কেটে রাখার সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া গেছে। ’

ভূক্তভোগীরা সংশ্লিষ্ট প্রধান শিক্ষক ও উপজেলা শিক্ষা অফিসারদের সঙ্গে দেখা করেও সমাধান না পাওয়ায় বিড়ম্বনার শিকার ও আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন বলে চিঠিতে জানানো হয়েছে।

‘এ বিষয় শিওরক্যাশের জনবল বৃদ্ধি এবং প্রতিটি উপজেলা কাস্টমার কেয়ার সেন্টার চালুর মাধ্যমে অনিয়ম ও জটিলতা দূর করা অত্যন্ত জরুরি। ’

মোবাইলে উপবৃত্তি বিতরণ সরকারের একটি মহৎ উদ্যোগ উল্লেখ করে চিঠিতে বলা হয়েছে, রূপালী ব্যাংক লিমিটেড কর্তৃপক্ষের লোকবল সংকট, যথাযথ তদারকির অভাব ও পর্যাপ্ত ব্যবস্থাপনার অভাবে মোবাইল ব্যাংকিং পদ্ধতির সুফল প্রাপ্তি থেকে উপকারভোগীগণ বঞ্চিত হচ্ছেন।

এ ক্ষেত্রে রূপালী ব্যাংক কিংবা শিওরক্যাশের পক্ষ থেকে বিভিন্ন গণমাধ্যমসমূহে যথাযথ প্রচারের প্রকট অভাব ও সীমাবদ্ধতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে, যা অত্যন্ত দুঃখজনক এবং উদ্বেগের সৃষ্টি করছে।

এ বিষয়ে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক তীব্র অসন্তোষ ব্যক্ত করেছেন এবং সৃষ্ট সমস্যা দ্রুত সমাধানের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

‘এমতাবস্থায় অভিযোগসমূহ তদন্ত করে জরুরি ভিত্তিতে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ এবং এ বিষয়ে কী কী প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে তা আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে জানানোর জন্য অনুরোধ করা হলো। মোবাইলে উপবৃত্তি প্রদানে জটিলতা দূর করা ও সমস্যাসমূহ দ্রুত সমাধান এবং সুবধাভোগী অভিভাবকদের দুর্ভোগ নিরসন করা না হলে রূপালী ব্যাংক শিওরক্যাশের সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তির লঙ্ঘন হিসেবে বিবেচনা করা হবে। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৮৯২ ঘণ্টা, জুন ২২, ২০১৭
এমআইএইচ/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।