ঢাকা, বুধবার, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ০১ মে ২০২৪, ২১ শাওয়াল ১৪৪৫

শিক্ষা

পাঠ্যবইয়ের আংশিক ভুল শুধরে শুদ্ধিপত্র প্রকাশ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২০০ ঘণ্টা, মে ১৮, ২০১৭
পাঠ্যবইয়ের আংশিক ভুল শুধরে শুদ্ধিপত্র প্রকাশ

ঢাকা: বছরের প্রায় অর্ধেক সময় পেরিয়ে যাওয়ার পর ২০১৭ শিক্ষাবর্ষের প্রাথমিক স্তরের বিনামূল্যের পাঠ্যবইয়ের শুদ্ধিপত্র দিয়েছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)।

এনসিটিবির দেওয়া প্রথম শ্রেণির একটি, তৃতীয় শ্রেণির তিনটি এবং পঞ্চম শ্রেণির দুটি বইয়ের শুদ্ধিপত্র বৃহস্পতিবার (১৮ মে) প্রকাশ করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর।

শুদ্ধিপত্রে বলা হয়েছে, প্রথম শ্রেণির ‘আমার বাংলা বই’য়ের ৫৩ পৃষ্ঠায় ‘মৌ’ এর স্থলে হবে ‘মউ’।

তৃতীয় শ্রেণির ‘আমার বাংলা বই’য়ের ৬৮ পৃষ্ঠায় কুসুমকুমারী দাশের ‘আদর্শ ছেলে’ কবিতাটি ভুল করায় ব্যাপক সমালোচনা তৈরি হয়েছিল।

এনসিটিবির শুদ্ধিপত্রে কবিতাটির প্রথম লাইন ‘আমাদের দেশে সেই ছেলে কবে হবে’ এর শুদ্ধিপত্রে দেওয়া হয়েছে ‘আমাদের দেশে হবে সেই ছেলে কবে’। এছাড়া চতুর্থ লাইনে ‘মানুষ হতেই হবে’ এর সংশোধনী দিয়ে করা হয়েছে ‘মানুষ হইতে হবে’। নবম লাইনের ‘চাই’কে চায় করা হয়েছে।

কুসুমকুমারী দাসের সংক্ষেপিত কবিতাটির তথ্যসূত্রে বলা হয়েছে, কুসুমকুমারী দাসের কবিতা, সুমিতা চক্রবর্তী সম্পাদিত প্রকাশনা, কলকাতা-৭৩ এর ভারবি প্রকাশনা থেকে ২০০১ সালে প্রথম প্রকাশ।

তৃতীয় শ্রেণির ‘বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়’ বইয়ের ৫৮ পৃষ্ঠায় ‘আমাদের জাতির পিতা’ লেখাটিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মায়ের নাম লেখা হয়েছিল ‘সায়েরা বেগম’। এর স্থলে ‘সায়েরা খাতুন’ হিসেবে শুদ্ধিপত্র দিয়েছে এনসিটিবি।

একই শ্রেণির ‘হিন্দুধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা’ (ইংরেজি ভার্সন) পিছনের কভারে ‘Heart’ এর স্থলে ‘hurt’ শব্দ দিয়ে সংশোধন করে দেওয়া হয়েছে। ‘ডু নট হার্ট এনিবডি’- বাক্যটি নৈতিকতা শেখানোর কাজে ব্যবহৃত হয়েছিল।

পঞ্চম শ্রেণির ‘আমার বাংলা বই’য়ের ৩ পৃষ্ঠায় ‘সমুদ’ এর স্থলে সংশোধনী দিয়ে ‘সমুদ্র’ এবং ‘বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়’ বইয়ের ২ পৃষ্ঠায় ‘ঘোষনা’ বানানটি ‘ঘোষণা’ হিসেবে শুদ্ধ করেছে এনসিটিবি।  
 
এনসিটিবির ঊর্ধ্বতন বিশেষজ্ঞ বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তা মো. মুনাব্বির হোসেন ও এনসিটিবি সদস্যের (প্রাথমিক শিক্ষাক্রম) স্বাক্ষর রয়েছে শুদ্ধিপত্রে।
 
তবে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের পাঠ্যপুস্তকের অন্যান্য ভুলগুলো শুধরে দেয়নি এনসিটিবি।

পাঠ্যপুস্তকের অন্যান্য ভুল:
প্রাথমিকের প্রথম শ্রেণির ‘আমার বই’য়ে ৭ পৃষ্ঠায় ছাগলের গাছের গোড়ার ছবিটির বিষয়ে কোনো নির্দেশনা নেই। ‘ছাগল গাছে উঠছে’- এমন সমালোচনা চলছিল।

পঞ্চম শ্রেণির ‘সংকল্প; কবিতাটির কয়েক জায়গায় ভুল থাকলেও তা শুদ্ধ করা হয়নি। এছাড়া ‘ওড়না’ বিতর্ক নিয়ে সুরহা আসেনি।
 
এ বিষয়ে এনসিটিবি চেয়ারম্যান নারায়ণ চন্দ্র সাহা বাংলানিউজকে বলেন, প্রাথমিক স্তরের প্রধান ভুলগুলো সংশোধন করে শুদ্ধিপত্র দেওয়া হয়েছে। আর কেনো মৌলিক ভুল নাই।

একটি প্রচ্ছদে ছাগলের আম গাছে ওঠার ছবিটি সংশোধন বিষয়ে বলেন, আগামী শিক্ষাবর্ষে সেগুলো পরিমার্জনে দেওয়া হবে।

মাধ্যমিক স্তরের ভুলগুলোর বিষয়ে তিনি বলেন, আগামী শিক্ষাবর্ষে পরিমার্জন করে দেওয়া হবে।
 
চলতি বছরের বিনা মূল্যের পাঠ্যবইয়ে ভুলের জন্য দায়ী এনসিটিবির ছয় কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল।

এরমধ্যে এনসিটিবি’র সচিব ইমরুল হাসান, গবেষণা কর্মকর্তা রেবেকা সুলতানা, সদস্য (প্রাথমিক শিক্ষাক্রম উইং) ড. মো. আব্দুল মান্নান, সম্পাদক গৌরাঙ্গ লাল সরকার, বিশেষজ্ঞ মো. মোসলে উদ্দিন সরকার ও বিশেষজ্ঞ মো. হাননান মিঞাকে শাস্তি হিসেবে বদলি করা হয়।

নতুন বছরের পাঠ্যবইয়ে ভুলের ঘটনায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব রুহী রহমানকে প্রধান করে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছিল। কয়েক দফা সময় বৃদ্ধির পর দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি প্রতিবেদন জমা দেয় তদন্ত কমিটি।

এই কমিটি বইয়ের ভুলের জন্য সাত কর্মকর্তাকে দায়ী করে শাস্তির সুপারিশ করেছিল। বইয়ের ভুলের জন্য দায়ী এনসিটিবি’র প্রধান সম্পাদক প্রীতিশ কুমার সরকার ও বিশেষজ্ঞ লানা হুমায়রা খানকে আগেই ওএসডি করা হয়েছিল।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৫ ঘণ্টা, মে ১৮, ২০১৭
এমআইএইচ/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।