ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ভারপ্রাপ্তে ভারাক্রান্ত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৩৪ ঘণ্টা, মার্চ ২৩, ২০১১
ভারপ্রাপ্তে ভারাক্রান্ত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

চবি : ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের ভারে ভারাক্রান্ত হয়ে পড়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। একটি, দুটি কিংবা তিনটি নয়, উপাচার্য ও রেজিস্ট্রারসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০টি গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরের ৯টিই চলছে ভারপ্রাপ্ত প্রধানদের দিয়ে।

এসবের মধ্যে রয়েছে প্রক্টর এবং নিরাপত্তা প্রধানের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদও। আছে এক ব্যক্তি দুই দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত প্রধানের দায়িত্ব পালনের ঘটনাও।
 
বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ এসব দপ্তর ভারপ্রাপ্ত দিয়ে পরিচালিত হওয়ায় চবিকে এখন ‘ভারপ্রাপ্ত’ বিশ্ববিদ্যালয় বলে পরিহাস করছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। পদের জন্য যোগ্য না হওয়ায় ভারপ্রাপ্তদের দিয়ে দপ্তর পরিচালিত হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় বিভিন্ন কাজের আশানুরূপ ফল পাচ্ছে না বলেও অভিযোগ করেন তারা। ভবিষ্যত সাফল্যের কথা বিবেচনা করে এসব পদে যোগ্য ব্যক্তিকে সরাসরি দায়িত্ব দেওয়ার দাবি শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের।

বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ এসব দপ্তর ভারপ্রাপ্তদের দিয়ে পরিচালনার কথা স্বীকার করেছেন চবি উপাচার্য (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর ড. মোঃ আলাউদ্দিন। আবার দায়িত্বপ্রাপ্তরা এসব পদের যোগ্য নয় বলেও মনে করেন তিনি।

এ ব্যাপারে বাংলানিউজকে তিনি বলেন, ‘ভারপ্রাপ্তরা দায়িত্বরত পদের জন্য পুরোপুরি যোগ্য নন। এসব দপ্তর প্রধানের পদে সরাসরি দায়িত্ব থাকা দরকার। কিন্তু নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিলে এসব দপ্তর প্রধানের পদে সবসময় যোগ্য লোক পাওয়া যায় না। অন্যদিকে দায়িত্বপ্রাপ্তরাও যোগ্য না হওয়ায় তাদেরও সরাসরি দায়িত্বে দেওয়া যাচ্ছে না। ফলে অনেকটা বাধ্য হয়েই ওইসব দপ্তর ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দিয়েই পরিচালিত হচ্ছে। ’

এদিকে উপাচার্যের নিয়োগের ব্যাপারে ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য ড. আলাউদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, ‘ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে কিছুটাতো সমস্যা হচ্ছেই। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সঠিকভাবে পরিচালনা করার জন্য নিয়মিত উপাচার্য থাকা অপরিহার্য। ’

সরকার যত দ্রুত সম্ভব চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ করবেন বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন।

বিশ^বিদ্যালয়ের শীর্ষ ১০ দপ্তরের মধ্যে ৯টির প্রধানই ভারপ্রাপ্ত। এসব দপ্তরের দায়িত্ব প্রাপ্তদের মধ্যে আছেন- রেজিস্ট্রার পদে রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শফিউল আলম, প্রক্টর পদে সহকারী প্রক্টর ড. মোহাম্মদ আকতার হোসেন (বর্তমানে স্থায়ী), পরীা নিয়ন্ত্রক পদে ইনস্টিটিউট অব ফরেস্টি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সস- এর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মোজাফফর হোছাইন, প্রধান হিসাব নিয়ামক পদে মোহাম্মদ আবদুল মোনায়েম, নিরাপত্তা দপ্তর প্রধান পদে মোহাম্মদ বজল হক, গ্রন্থাগারিক পদে এসএম আবু তাহের, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন কার্যালয়ের পরিচালক পদে আবু সাঈদ হোসেন, বিশ^বিদ্যালয় প্রেসের পরিচালক পদে সহকারী রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ সেকান্দার আলম। তাছাড়া পরিবহন এবং তথ্য ও ফটোগ্রাফি এই দুই দপ্তর প্রধানের পদে ডেপুটি রেজিস্ট্রার মোঃ ফরহাদ হোসেন খান ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।

এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ পরিদর্শক, কলেজের অধ্য এমনকি বিভাগীয় সভাপতি পদেও ভারপ্রাপ্তদের বসানোর নজির রয়েছে চবিতে।

দীর্ঘদিন ধরে গুরুত্বপূর্ণ এসব দপ্তর ভারপ্রাপ্তদের দিয়ে পরিচালিত হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক-শিার্থীরা এখন ভারপ্রাপ্ত বিশ^বিদ্যালয় বলে উপহাস করছে চবিকে। তাদের মতে সুষ্ঠু পরিচালনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ এসব দপ্তর ভারপ্রাপ্তদের কবল থেকে মুক্ত হওয়া দরকার। আর তা না হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের নামের আগে ‘ভারপ্রাপ্ত’ শব্দটি যোগ করে দেওয়া যেতে পারে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন অধ্যাপক বাংলানিউজকে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় চালাতে হচ্ছে তাই চলছে। এভাবে আল্লাহর ওয়াস্তে চালাতেই আমরা অভ্যস্ত। উপাচার্য ও রেজিস্ট্রারসহ প্রধান ১০টি পদের সবগুলোই যেখানে ভারপ্রাপ্ত সে বিশ্ববিদ্যালয়কে তো একটি আদর্শ ‘ভারপ্রাপ্ত’ বিশ^বিদ্যালয় বললে ভুল হবে না। বিশ^বিদ্যালয়ের সার্বিক সাফল্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এসব পদ থেকে ভারপ্রাপ্তদের সরিয়ে সরাসরি দায়িত্বপ্রাপ্ত নিয়োগ করা দরকার। ’

বাংলাদেশ সময় : ১৮২৭ ঘণ্টা, মার্চ ২৩, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।