ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

শিক্ষা

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে আল্পনায় রঙিন নববর্ষ উৎসব

এম.আব্দুল্লাহ আল মামুন খান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৪, ২০১৪
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে আল্পনায় রঙিন নববর্ষ উৎসব ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টফোর.কম

ময়মনসিংহ: শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অংশগ্রহণে বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনায় সোমবার ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ ক্যাম্পাসে উদযাপিত হচ্ছে নববর্ষ বরণ অনুষ্ঠান।

সকালে কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অংশগ্রহণে ক্যাম্পাসে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়।

বাঙালির সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রতীক বিভিন্ন ধরনের মুখোশ পরে প্ল্যাকার্ড-ফেস্টুন হাতে নিয়ে শোভাযাত্রায় অংশ নেন নানা শ্রেণী-পেশার মানুষ।

শোভাযাত্রা শেষে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। পাশাপাশি চলে পান্তা-ইলিশ উৎসবও। সাংস্কৃতিক পরিবেশনা চলবে সন্ধ্যা পর্যন্ত।

তবে কলেজ ক্যাম্পাসে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানকে রঙিন করে তোলে ভবিষ্যৎ চিকিৎসকদের রাতভর আঁকা আল্পনা।

রোববার দিনগত রাত ধরে কলেজ গেইট থেকে ক্যান্টিন পর্যন্ত সড়কের বিভক্তি রেখার উভয় পাশে কলেজের শিক্ষার্থীরা বাঙালি সংস্কৃতির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ আলপনা আঁকেন। প্রায় ৪’শ মিটার দীর্ঘ এ আল্পনায় রঙিন করে তুলেছে মেডিকেল কলেজের পথ।

আনন্দঘন উৎসবমুখর পরিবেশে আর মুগ্ধ বিস্ময়ে রং তুলির আঁচড়ে শিক্ষার্থীরা ফুটিয়ে তোলেন আবহমান গ্রাম বাংলা ও বাঙালি সংস্কৃতির সুবিশাল ঐতিহ্য। প্রায় দু’শতাধিক শিক্ষার্থীর অনন্য এ কর্মযজ্ঞ বাঙালির প্রাণের উৎসবের আবহে যোগ করেছে ভিন্ন মাত্রা। নবীন প্রজন্মের উদ্যমী আঁকিয়েরা তাদের অঙ্কিত আলপনাকে ময়মনসিংহের ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘ আল্পনা হিসেবেও দাবি করেছেন।

বাংলা নববর্ষ পহেলা বৈশাখ বাংলাদেশে আবহমান কালের এক সাংস্কৃতিক উৎসব। তবে, ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে প্রথমবারের মতো এ উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। নতুন বাংলা বছরকে স্বাগত জানিয়ে কলেজের প্রায় দু’শতাধিক শিক্ষার্থী স্ব-প্রণোদিত হয়ে শনিবার সন্ধ্যা থেকে শুরু করে আল্পনা আঁকা। তারা কলেজের প্রবেশ পথের চারশ’ মিটার এলাকাজুড়ে রঙিন আলপনা আঁকার নব আনন্দে জেগে ওঠে।

অসাম্প্রদায়িক সাংস্কৃতিক চেতনায় নতুন করে উজ্জীবিত হতে মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীদের এ আলপনা আঁকার কাজের নেতৃত্ব দেন আব্দুল্লাহ আল নোমান, রেজা, তাইফ, সিয়াম, সোহাগ, রাসেল, শিবানন্দ, অনিন্দ্য, শাকিল, ফরহাদ সজিব, সেলিম, আশিক, রাবেয়া, সঞ্চিতা, সঙ্গীতা, লুৎফা ও মৈত্রিসহ অনেকেই।

মেডিকেল কলেজ সড়কের বিভক্তি রেখার দু’পাশ জুড়েই তারা রঙ তুলিতে আঁকেন ময়ূর, ইলিশ, বাঘ, কুলা, একতারা, হাতপাখা, ঢোল, কলসী, নৌকা, পাখি, শাপলা ফুলসহ অনেক কিছুই। ১০ থেকে ১২ জন করে কমপক্ষে ২০ টি দলে ভাগ হয়ে আঁকাজোকার কাজ করেন।

উদ্যমী এসব ভাবী চিকিৎসকরা বলেন, পুরনো বছরের জের ধরেই নতুন বছর পল্লবিত হবে নতুন বাস্তবতার পত্রপল্লবে। বছরের প্রথম দিন আমাদের জন্য বয়ে আনবে নতুন বার্তা। এ কারণেই বাঙালির সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে রঙিন আলপনায়।

ময়মনসিংহ জেলা ছাত্রলীগের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ও চিকিৎসক রুহুল আমিন তুহিন বাংলানিউজকে বলেন, দেশের সবচেয়ে বড় অসাম্প্রদায়িক চেতনার উৎসব হচ্ছে পহেলা বৈশাখ। এ উৎসবে ময়মনসিংহের ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘতম আল্পানা এঁকে মেডিকেলের শিক্ষার্থীরা প্রমাণ করেছেন তারা শুধু পড়াশোনা নিয়েই ব্যস্ত নয়, তাদের অন্তর্নিহিত সুপ্ত প্রতিভা রয়েছে।

বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) ময়মনসিংহ জেলা শাখার প্রচার সম্পাদক ডা. সারোয়ার জাহান জুয়েল জানান, নিজের হাতে, নিজের অঙ্গণে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীদের দীর্ঘতম আল্পানা আঁকার এ আয়োজন ইতিহাস হয়ে থাকবে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৪, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।