ঢাকা, শনিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

শিক্ষা

শিক্ষক সংকটে বিপর্যস্ত একাউন্টিং ও বিজনেস স্টাডিজের শিক্ষা

ওয়ালিউল্লাহ, জাবি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৪৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ২, ২০১৪
শিক্ষক সংকটে বিপর্যস্ত একাউন্টিং ও বিজনেস স্টাডিজের শিক্ষা

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের একাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের প্রথম বর্ষসহ দুইশ’ শিক্ষার্থীর বিপরীতে শিক্ষক রয়েছেন মাত্র ১ জন। বিভাগে নেই পর্যাপ্ত শ্রেণিকক্ষ, সেমিনার, কম্পিউটার ল্যাবসহ প্রয়োজনীয় শিক্ষা উপকরণ।



শুধু একাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগেই নয়, বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের অন্তর্ভুক্ত ফিন্যান্স অ্যন্ড ব্যাংকিং বিভাগ, মার্কেটিং বিভাগ ও ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগেরও অবস্থা একই। এসব বিভাগেও নেই পর্যাপ্ত শ্রেণিকক্ষ, শিক্ষক, সেমিনার, কম্পিউটার ল্যাবসহ শিক্ষা উপকরণ।

অনুষন্ধানে জানা যায়, ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগে প্রথম বর্ষসহ শিক্ষার্থী সংখ্যা ২৫০ জন ও শিক্ষক সংখ্যা ৫ জন এবং মার্কেটিং বিভাগে প্রথম বর্ষসহ শিক্ষার্থী সংখ্যা ২৫০ জন, শিক্ষক সংখ্যা ৫ জন। এ ২টি বিভাগে ৫টি করে ব্যাচ রয়েছে। ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগে প্রথম বর্ষসহ শিক্ষার্থী সংখ্যা ২০০ জন ও শিক্ষক সংখ্যা ৪ জন এবং একাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের প্রথম বর্ষসহ শিক্ষার্থী সংখ্যা ২০০ জন ও শিক্ষক সংখ্যা ১ জন। এই ২টি বিভাগে ৪টি করে ব্যাচ রয়েছে।

শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এই ৪টি বিভাগের কোনোটিরই সুনির্দিষ্ট কোনো শ্রেণিকক্ষ নেই। প্রথম বর্ষ ছাড়া এই ৪টি বিভাগের মোট ১৪টি ব্যাচের জন্য রয়েছে মাত্র ৮টি শ্রেণিকক্ষ। বিভাগের শিক্ষকরা মাস্টারপ্ল্যান করে ৮টি কক্ষেই ১৪টি ব্যাচের শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন। কিন্তু ভর্তিকৃত প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের ক্লাস শুরু হলে বাড়বে আরো ৪টি ব্যাচ। ফলে ৮টি কক্ষে মোট ১৮টি ব্যাচের ক্লাস নেওয়া সম্ভব হবে না বলে জানিয়েছেন শিক্ষকরা।

এদিকে প্রথম বর্ষসহ ২ বিভাগে ৫টি ও ২ বিভাগে ৪টি করে ব্যাচ থাকলেও নেই পর্যাপ্ত সংখ্যক অভিজ্ঞ শিক্ষক। বিভাগগুলোতে শিক্ষক সংকট থাকায় এক বিভাগের শিক্ষক অন্য বিভাগের বিভিন্ন কোর্স পড়াচ্ছেন যদিও তারা সেসব কোর্সে বিশেষ অভিজ্ঞ নন। এছাড়া একজন শিক্ষককে একই ব্যাচে একাধিক ক্লাস নিতে হচ্ছে।

কোর্সভিত্তিক অভিজ্ঞ শিক্ষক ক্লাস না নেওয়ায় শিক্ষার্থীরা মেজর বিষয়গুলোতে যথাযথ জ্ঞান পাচ্ছে না বলে মনে করছেন ঐ অনুষদভুক্ত বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকরা।

একাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগে সভাপতি সহকারী অধ্যাপক প্রবাল দত্ত বলেন, একজন শিক্ষক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও একজন শিক্ষক চাকরি ছেড়ে বিদেশে চলে যাওয়ায় বিভাগে শিক্ষক সংকট দেখা দিয়েছে। তাই আমরা আপাতত অতিথি শিক্ষক দিয়ে ক্লাস পরিচালনা করছি। আমরা ইতোমধ্যে দু’জন শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার কথা প্রশাসনকে বলেছি। এর মধ্যে ১জন শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে আর একজনের নিয়োগ প্রক্রিয়া দু’এক দিনের মধ্যে হয়ে যাবে।

বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের ডিন অধ্যাপক আব্দুল বায়েস বলেন, নতুন উপাচার্য দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই আমরা তার সাথে দেখা করে আমাদের সমস্যাগুলোর কথা জানিয়েছি। আশা করছি তিনি ব্যবস্থা নেবেন।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলাম বলেন, আমরা চেষ্টা করছি তাদের শ্রেণিকক্ষ সংকট দূর করতে। কোথায় তাদের শ্রেণিকক্ষ দেওয়া যায় তা আমরা খুঁজছি। শুধু ঐ ৪ বিভাগই নয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আরো কয়েকটি বিভাগের শ্রেণিকক্ষ সংকট আছে। আমরা তাদের বিষয়েও চিন্তা করছি।

শিক্ষক সংকটের বিষয়ে তিনি বলেন, নতুন করে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে শিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে। আমি যখন দায়িত্ব নেই তখন ভর্তি পরীক্ষা বেশি জরুরি ছিল। এটা শেষ হলেই শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করা হবে।

অধ্যাপক ড. শরীফ এনামুল কবির উপাচার্য থাকাকালীন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে এই চারটি বিভাগ চালু করা হয়েছিল।

বাংলাদেশ সময়: ১৩২৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ০২, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।