ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

শিক্ষা

মীর কাশেম আলীর বিরুদ্ধে ২১তম সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ ৬ এপ্রিল

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৫৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ১, ২০১৪
মীর কাশেম আলীর বিরুদ্ধে ২১তম সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ ৬ এপ্রিল ছবি: মীর কাশেম আলী

ঢাকা: একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত দিগন্ত মিডিয়া কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান ও জামায়াতের নির্বাহী সদস্য মীর কাশেম আলীর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের ২০তম সাক্ষী লুৎফর রহমান ফারুককে আসামিপক্ষের জেরা সম্পন্ন হয়েছে। আগামী ৬ এপ্রিল রোববার ২১তম সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২।

 

বুধবার সাক্ষী লুৎফর রহমান ফারুককে জেরা শেষ করেন মীর কাশেম আলীর আইনজীবী অ্যাডভোকেট মিজানুল ইসলাম। সোমবার তিনি সাক্ষ্য দেওয়ার পর জেরা শুরু করেছিলেন মীর কাশেম আলীর কনিষ্ঠ এক আইনজীবী। আগামী ৬ এপ্রিল রোববার মীর কাশেম আলীর বিরুদ্ধে ২১তম সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য করেন চেয়ারম্যান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল।

গত বছরের ১১ ডিসেম্বর শুরু হয়ে মীর কাশেম আলীর বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছেন আরও ১৭ জন সাক্ষী। তারা হলেন সৈয়দ মো. এমরান, মো. সানাউল্লাহ চৌধুরী, মুক্তিযোদ্ধা সাংবাদিক নাসিরুদ্দিন চৌধুরী, সুনীল কান্তি বর্ধন দুলাল, শহীদপুত্র শিবু দাস, মৃদুল কুমার দে, প্রদীপ তালুকদার, মুক্তিযোদ্ধা এস্কান্দার আলম চৌধুরী, মো. সালাহউদ্দিন ছুট্টু মিয়া, মো. জাকারিয়া, নাজিমুদ্দিন, মো. হাসান (১), মো. হাসান (২), ফয়েজ আহমেদ সিদ্দিকী, জুলেখা খান, মুক্তিযোদ্ধা জাহাঙ্গীর চৌধুরী, হাসিনা খাতুন, এসএম জামাল উদ্দিন এবং এস এম সরওয়ার ঊদ্দিন।

এর আগে ১৮ নভেম্বর মীর কাশেমের বিরুদ্ধে সূচনা বক্তব্য (ওপেনিং স্টেটমেন্ট) উপস্থাপন করেন প্রসিকিউটর সুলতান মাহমুদ সিমন ও রেজিয়া সুলতানা চমন।

গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর মীর কাশেমের মামলা দ্বিতীয় ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করেন ট্রাইব্যুনাল-১।

৫ সেপ্টেম্বর হত্যা, নারী নির্যাতন, অগ্নিসংযোগ ও লুন্ঠনের ১৪টি মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত করে মীর কাশেম আলীর বিরুদ্ধে অভিযোগ (চার্জ) গঠন করেন ট্রাইব্যুনাল-১।

এর আগে ২১ আগস্ট অভিযোগ গঠনের শুনানি শেষ হয়।

১৬ মে প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মালুমসহ প্রসিকিউশন ১৪টি অভিযোগে মীর কাশেম আলীর বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) ট্রাইব্যুনালে দাখিল করেন। ২৬ মে এ অভিযোগ আমলে নেন ট্রাইব্যুনাল।

গত বছরের ৬ মে মীর কাশেম আলীর বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের ১৪টি অভিযোগে তদন্তের চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রসিকিউশনের কাছে জমা দেন তদন্ত সংস্থা। এ তদন্ত প্রতিবেদন তৈরি করতে মীর কাশেম আলীকে দু’দফা সেফ হোমে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন তদন্ত সংস্থা।

২০১২ সালের ১৭ জুন মীর কাশেম আলীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করলে ওইদিন বিকেলে মতিঝিলে দৈনিক নয়া দিগন্ত কার্যালয়ের (দিগন্ত মিডিয়া কর্পোরেশন) থেকে তাকে গ্রেফতার করে বিকেল সোয়া চারটার দিকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।

ট্রাইব্যুনাল মীর কাশেম আলীকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিলে ওইদিন রাত সাড়ে আটটার দিকে তাকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

এরপর ১৯ জুন মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে মীর কাশেমের জামিন আবেদন খারিজ করে দেওয়া হয়।

কাশেম আলীর বিরুদ্ধে অভিযোগে বলা হয়েছে, ১৯৭১ সালে মীর কাশেম আলী ইসলামী ছাত্রসংঘের চট্টগ্রাম অঞ্চলের সভাপতি ছিলেন। তার নেতৃত্বে আলবদর, আলশামস ও রাজাকার বাহিনী হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে।

১৪টি অভিযোগের মধ্যে চট্টগ্রামের আসাদনগর ও পাঁচলাইশ এলাকায় আটজনকে নির্যাতনের পর হত্যা ও লাশ গুম এবং ৩৪ জনকে অপহরণের পর চট্টগ্রামের ডালিম হোটেলে আটকে রেখে নির্যাতনসহ মানবতাবিরোধী বিভিন্ন ঘটনার অভিযোগ উল্লেখ করা হয়েছে। এসব অভিযোগের মধ্যে ১১ ও ১২ নম্বর অভিযোগ ছাড়া বাকি সব কটি অভিযোগেই অপহরণ এবং নির্যাতনের বর্ণনা রয়েছে।

মীর কাশেম জামায়াতের অন্যতম প্রধান অর্থ যোগানদাতা হিসেবে পরিচিত। তিনি ইসলামী ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান এবং রাবেতা আল ইসলামী নামে একটি এনজিও’র সাবেক আবাসিক প্রতিনিধি।

জামায়াত সমর্থক বলে পরিচিত দিগন্ত মিডিয়া কর্পোরেশনেরও চেয়ারম্যান তিনি। ওই প্রতিষ্ঠানেরই সংবাদপত্র দৈনিক নয়া দিগন্ত এবং টেলিভিশন চ্যানেল দিগন্ত টেলিভিশন।

১৯৭৭ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি ছাত্রসংঘ নাম বদলে ইসলামী ছাত্রশিবির নামে বাংলাদেশে রাজনীতি শুরু করলে মীর কাশেম আলী তার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হন।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫০ ঘণ্টা, এপ্রিল ০১, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।