ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

শিক্ষা

শিক্ষকের জন্য শিক্ষকদের আবেদন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৩৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২২, ২০১৪
শিক্ষকের জন্য শিক্ষকদের আবেদন ফারহানা হক

ঢাকা: দুরারোগ্য ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছেন বিয়াম ল্যাবরেটরি স্কুলের সহকারী শিক্ষক ফারহানা হক। দেশে যার চিকিৎসা সম্ভব হচ্ছে না।

সিঙ্গাপুরে তার চিকিৎসায় প্রায় দুই কোটি টাকা প্রয়োজন। বিপুল অংকের এই টাকা সংগ্রহে সকলের প্রতি সহায়তার আবেদন জানিয়েছেন বিয়াম ল্যাবরেটরি স্কুলে তার সহকর্মী শিক্ষকরা।

স্কুলের অধ্যক্ষ শাহনা হক বলেছেন, ব্যয়বহুল এই চিকিৎসার খরচ এককভাবে পরিবারের পক্ষে বহন করা সম্ভব হচ্ছে না।

আর ভারতের মুম্বাইয়ে একটি হাসপাতাল থেকে নিজেই সবার প্রতি সাহায্যে আবেদন জানিয়েছেন ফারহানা।

স্কুলের শিক্ষক, অভিভাবকসহ সবার প্রতি এই শিক্ষকের জন্য সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন অধ্যক্ষসহ অন্য সহকর্মী শিক্ষকরা।

বিয়াম ল্যাবরেটরি স্কুলে নিজ কক্ষে বাংলানিউজের সঙ্গে কথা বলেন অধ্যক্ষ ফারহানা হক।

গত নভেম্বরের ঘটনা। ক্লাসে শিশুদের পড়াতে পড়াতেই হঠাৎ অসুস্থ্য পড়েন ফারহানা হক। বুকের ব্যাথা অনুভব করছিলেন। ক্লাস ছেড়ে টিচার্স রুমে সহকর্মীরা বললেন বাসায় চলে যেতে। বিকেলে চিকিৎসকের কাছে গেলে তিনি দ্রুতই রক্তের বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষা করানোর পরামর্শ দিলেন। রিপোর্ট জানালো ফারহানা হকের ব্লাড ক্যান্সার। ক্যান্সার যতটা ছড়িয়েছে তাতে ঢাকায় চিকিৎসকরা তার চিকিৎসা শুরু না করে দেশের বাইরে নেওয়ার পরামর্শ দিলেন। দ্রুতই তাকে নিয়ে যাওয়া হলো সিঙ্গাপুরে। সেখানে দুই দফা কেমো থেরাপী দিয়ে তার শরীরকে বোনম্যারো ট্রান্সপ্লান্টের উপযোগী করে তোলা হলো। কিন্তু সিঙ্গাপুরের আকাশ ছোঁয়া চিকিৎসা ব্যয় বহন করা আর সম্ভব হলো না। ফারহানা হককে নিয়ে যাওয়া হলো ভারতের মুম্বাইয়ে। সেখানে এসএল রাহিজা হাসপাতালে চললো মাসাধিককালের চিকিৎসা। ততদিনে চিকিৎসার পেছনে পরিবারের খরচ হয়ে গেছে এক কোটি টাকারও বেশি। এভাবে পরিবারটি তার সহায়-সম্পদ বিক্রি করে যখন নিঃস্ব তখন রাহিজা হাসপাতাল বলছে, রোগীর অবস্থা এতটাই জটিল তাদের পক্ষে এই বোনম্যারো ট্রান্সপ্ল্যান্ট করা ঝুঁকিপূর্ণ। সিঙ্গাপুরের চিকিৎসা ব্যবস্থা অপেক্ষাকৃত উন্নত সেখানেই তা করতে হবে। আর এতে এখন খরচ হবে আরও আড়াই লাখ ডলার। বাংলাদেশি টাকায় তা প্রায় দুই কোটি টাকা।

একজন শিক্ষকের জন্য এই অর্থ একটি পর্বতের মতো। আর টাকার অভাবেই হয়তো আমরা হারাতে বসেছি আমাদের প্রিয় এক সহকর্মীকে, বাকরুদ্ধ কণ্ঠে বলছিলেন বিয়াম ল্যাবরেটরি স্কুলের প্রিন্সিপ্যাল শাহনা হক।

একজন শিক্ষককে বাঁচাতে সকলের প্রতি এগিয়ে আসার আহ্বান জানান স্কুলের অধ্যক্ষ।

ফারহানা হকের সহায়তার জন্য জনতা ব্যাংকের বাংলামটর শাখায় একটি সঞ্চয়ী হিসাব খোলা হয়েছে। সঞ্চয়ী হিসাব নং- ৭৬৩১। এই ব্যাংকে সহায়তা দেওয়া যাবে। আর সরাসরি কেউ সহায়তা দিতে চাইলে বিয়াম ল্যাবরেটরি স্কুল অফিস কক্ষে যোগাযোগ করতে পারবেন। মোবাইল ফোনে বিয়াম ল্যাবরেটরি স্কুলের অধ্যক্ষ শাহানা হকের সঙ্গে যোগাযোগ করা যেতে পারে ০১১৯১১৪০৫৫১ এই নম্বরে। অথবা ফারহানা হকের নিকট আত্মীয়কে পেতে ০১৭৮২২৬৪৫২২ নম্বরে।

ই-মেইল করতে পারেন: [email protected] এ।

শাহনা হক বলেন, অত্যন্ত দায়িত্বশীল ও শিশুদের কাছে অত্যন্ত প্রিয় একজন শিক্ষক ফারহানা হক। তাকে আমরা আবার আমাদের মাঝে ফিরে পেতে চাই।

বাংলাদেশ সময় ১৩৩৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২২, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।