ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

শিক্ষা

শিক্ষাঙ্গনকে সন্ত্রাসমুক্ত রাখার প্রতিশ্রুতি এবারও

আল-আমিন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৮, ২০১৩
শিক্ষাঙ্গনকে সন্ত্রাসমুক্ত রাখার প্রতিশ্রুতি এবারও

ঢাকা: গতবারের নির্বাচনী ইশতেহারের মতো এবারের ইশতেহারেও ক্ষমতায় আসলে শিক্ষাঙ্গনকে সন্ত্রাস, অপরাজনীতি, দলীয়করণ এবং সেশনজটমুক্ত রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে আওয়ামী লীগ।

শনিবার বিকেলে ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগের ইশতেহার পাঠ করে এ প্রতিশ্রুতি দেন দলের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।



ইশতেহার পাঠকালে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রশাসনিক ও পরিচালনা ব্যবস্থাকে অধিকতর গণতান্ত্রিক, স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক করার পাশাপাশি শিক্ষকদের দলাদলির কারণে শিক্ষা কার্যক্রম যাতে ব্যাহত না হয় সেই লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশগুলো পুনর্মূল্যায়ন এবং প্রয়োজনীয় সংশোধন করা হবে বলে।

এছাড়া স্কুল ও কলেজের পরিচালনা ব্যবস্থাকেও দলীয়করণমুক্ত, অধিকতর গণতান্ত্রিক, স্থানীয় জনগণের অংশগ্রহণমূলক, দায়িত্বশীল এবং স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক করা হবে বলেও আওয়ামী লীগের এবারের নির্বাচনী ইশতেহারে বলা হয়েছে।

অবশ্য বিশ্লেষকদের মতে, ২০০৮ সালের ৯ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ইশতেহারে দেওয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী গত পাঁচ বছরের শাসনামলে শিক্ষাঙ্গনকে সন্ত্রাস, অপরাজনীতি, দলীয়করণ ও সেশনজটমুক্ত রাখার ক্ষেত্রে ব্যর্থতার পাশাপাশি কিছু সফলতাও ছিলো আওয়ামী লীগ সরকারের।

ইশতেহার অনুযায়ী সরকারের কার্য মূল্যায়ন করলে দেখা যায়, ছাত্রলীগের দু’পক্ষের সংঘর্ষ, হত্যা, চাঁদাবাজি, ছাত্র-শিক্ষক নির্যাতনসহ একের পর এক অপকর্মের কারণে একাধিকবার বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখে পড়তে হয় আওয়ামী লীগ সরকারকে।

আওয়ামী লীগের এবারের সরকারের শুরুর দিকে অন্তঃকোন্দলের জের ধরে ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের সংঘর্ষে নিহত হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু বকর সিদ্দিক। দু’গ্রুপের সংঘর্ষে নিহত হন ঢাকা মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ‍আবুল কালাম ‍আজাদ ওরফে রাজীব।

সর্বশেষ, গত ২৯ নভেম্বর ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায়ও নিহত হন ঢাকা কলেজের ছাত্র আসাদুজ্জামান আল ফারুক।

এছাড়া, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিরোধী ছাত্রসংগঠনগুলোসহ আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে নিজ দলের বিরোধী পক্ষের সঙ্গেও সংঘর্ষে জড়িয়েছে ছাত্রলীগ।

পাশাপাশি সরকারের মেয়াদকালে শিক্ষকদের আন্দোলনের ফলে উত্তপ্ত ছিল জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর বিশ্ববিদ্যালয়সহ একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। শিক্ষক আন্দোলনসহ বিভিন্ন কারণে বন্ধ থাকার ফলে এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সেশনজট বৃদ্ধি পেয়েছে।

বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক-কর্মকর্তা নিয়োগের ক্ষেত্রে দলীয়করণ, স্বজনপ্রীতি ও দুর্নীতির অভিযোগও ওঠে অনেক।

তবে, অনেক অভিযোগ থাকলেও দর্জি দোকানী বিশ্বজিৎ হত্যা মামলায় দোষী সাব্যস্ত করে নিজ ছাত্রসংগঠনের ৮ কর্মীর ফাঁসি ও ১১৩ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদানের ক্ষেত্রে আইনি লড়াই করায় শেষ দিকে ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছে আওয়ামী লীগ সরকার।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, শিক্ষাখাতে আওয়ামী লীগের এই প্রতিশ্রুতিকে জনগণ কীভাবে গ্রহণ করে এবং ক্ষমতায় যাওয়ার পর সরকার তাদের প্রতিশ্রুতির কতটুকু বাস্তবায়ন করে সেটাই এখন দেখার বিষয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৯২৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৮, ২০১৩
সম্পাদনা: মিলিতা বাড়ৈ ও হুসাইন আজাদ, নিউজরুম এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।