ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

শিক্ষা

জাবি রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে আইন ভঙ্গের অভিযোগ

ওয়ালিউল্লাহ, জাবি প্রতিনিধি | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩০৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৪, ২০১২
জাবি রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে আইন ভঙ্গের অভিযোগ

জাবি: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) রেজিস্ট্রার আবু বকর সিদ্দিকের বিরুদ্ধে জাতীয় সংসদ কর্তৃক গৃহীত আইন ভঙ্গের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

‘পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকগ ৬৫ বছর বয়স পূর্তিতে চাকুরি হইতে অবসর গ্রহণ করিবেন’ জাতীয় সংসদ এই সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশ করলেও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে তা কার্যকর হচ্ছে না।



উপরোন্তু, বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানিয়েছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ওইসব বিশ্ববিদ্যালয়ে আইনটি বাস্তবায়ন না হওয়ায় এই বিশ্ববিদ্যালয়েও আইনটি এখনও বাস্তবায়ন হয়নি। আইনটি এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট নয়, বিধায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে অফিস আদেশও জারি করা হয়নি।

চলতি বছরের ১০ জুলাই জাতীয় সংসদ একটি আইন পাস করে তা গেজেট আকারে প্রকাশ করে। আইনের ৩ ধারায় বলা হয়, “পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের চাকরি থেকে অবসরগ্রহণ। -- আপাততঃ বলবৎ অন্য কোন আইন, অধ্যাদেশ, রাষ্ট্রপতির আদেশ, বিশ্ববিদ্যালয় সংবিধি, বিধি, প্রবিধি, উপ-আইন, অথবা আইনের ক্ষমতাসম্পন্ন কোন দলিল যাহা কিছুই থাকুক না কেন, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক ৬৫ বছর বয়স পূর্তিতে চাকুরি হইতে অবসর গ্রহণ করিবেন। “

গেজেটে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়সহ বাংলাদেশের ৩৪টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম উল্লেখ করা হয়।

এদিকে, ২৬ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আবু বকর সিদ্দিক কতৃর্ক স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ১০ জুলাই গেজেট বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সরকার এই মর্মে একটি আইন জারি করেছেন, ‘৩। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকগণের চাকুরি হইতে অবসর গ্রহণ। --আপাততঃ বলবৎ অন্য কোন আইন, অধ্যাদেশ, রাষ্ট্রপতির আদেশ, বিশ্ববিদ্যালয় সংবিধি, বিধি, প্রবিধি, উপ-আইন, অথবা আইনের ক্ষমতাসম্পন্ন কোন দলিল যাহা কিছুই থাকুক না কেন, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক ৬৫ বছর বয়স পূর্তিতে চাকুরি হইতে অবসর গ্রহন করিবেন। ’
বিষয়টি ১১ আগষ্ট অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেট সভায় উপস্থাপন করা হলে এ ব্যাপারে বিকল্প নেই বিধায় তা গৃহীত হয়। কিন্তু পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী ওইসব বিশ্ববিদ্যালয়ে আইনটি বাস্তবায়ন না হওয়ায় এই বিশ্ববিদ্যালয়েও আইনটি এখনও বাস্তবায়ন হয়নি। আইনটি এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট নয় বিধায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে অফিস আদেশও জারি করা হয় নি।
এমতাবস্থায়, অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তথ্য সংগ্রহ করে বিষয়টি পর্যালোচনার জন্য পরবর্তীতে সিন্ডিকেট সভায় উপস্থাপনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।

এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষকের চাকরির বয়সসীমা পেরিয়ে গেলেও তারা এখনও চাকরিতে বহাল আছেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষককে যা সুবিধা দেওয়া হয়, তা ভোগ করছেন।

এতে করে একদিকে যেমন বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ ব্যয় হচ্ছে, অন্যদিকে আইন লঙ্ঘনের মতো একটি বড় ধরনের অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে বলে মনে করছেন সচেতন মহল।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আবু বকর সিদ্দিক বাংলানিউজকে বলেন, “অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে আইনটি কার্যকর না হওয়ায় এই বিশ্ববিদ্যালয়েও কার্যকর করা হয় নি। তবে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে খোঁজখবর রাখা হচ্ছে। অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে আইনটি কার্যকর হয়েছে কিনা এই সংক্রান্ত তথ্যদিসহ পরবর্তী কোনো এক সিন্ডিকেট সভায় তোলা হবে এবং সেখানেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। ”

বাংলাদেশ সময়: ০২৫৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৪, ২০১২
সম্পাদনা: আশিস বিশ্বাস, অ্যাসিস্ট্যান্ট আউটপুট এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।