ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

শিক্ষা

টাঙ্গাইলে সরকারি শিশু পরিবার ২টি নানা সমস্যা-সংকটে

সুমন কুমার রায়, জেলা প্রতিনিধি | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮০৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৭, ২০১২
টাঙ্গাইলে সরকারি শিশু পরিবার ২টি নানা সমস্যা-সংকটে

টাঙ্গাইল: টাঙ্গাইলের ২টি সরকারি শিশু পরিবার নানা সমস্যা-সংকটে জর্জরিত। এর ফলে স্বস্তিতে নেই এখানে বসবাসকারী ২শ ১৭ জন অনাথ বালক-বালিকা।



শিশু পরিবার ২টিতেই রয়েছে জনবলের অভাব রয়েছে। তার পরে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পর্যাপ্ত আবাসিক সুবিধা না থাকা, শিশুদের জন্য মাসিক অর্থ বরাদ্দ কম থাকা, নিরাপদ খাবার পানিসহ পানির সংকট এবং চিত্তবিনোদনের অভাবসহ নানা সমস্যা এখানকার নিত্য সমস্য। এছাড়াও নেই পর্যাপ্ত চিকিৎসা সুবিধা।

এসব অসুবিধার কারণে শিশু পরিবার দুটিতে আসন সংখ্যার চাইতে কম শিশু ভর্তি হয়। অনেক সময় আসন সংখ্যার সমান শিশু ভর্তি হলেও নানা অসুবিধার কারণে ভর্তি হওয়ার অল্প কয়েকদিন পরেই অনেক শিশু, শিশু পরিবার ছেড়ে চলে যায়।

বর্তমানে টাঙ্গাইল সরকারি শিশু পরিবারে (বালক) মোট নিবাসীর সংখ্যা ১শ ২৩ জন। অথচ এখানে আসন সংখ্যা ১শ ৭৫টি। ৫২টি আসনই শূন্য। টাঙ্গাইল সরকারি শিশু পরিবারে (বালিকা) ১শ আসনের মধ্যে বর্তমান নিবাসী সংখ্যা ৯৪ জন। ৬টি আসন শূন্য।

সরকারি শিশু পরিবার (বালিকা) প্রতিষ্ঠাকাল

টাঙ্গাইল জেলা শহরের কেন্দ্রের ঢাকা রোডে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সরকার এক দশমিক ৫১ একর জমির ওপর ১৯৭২ সনের ১ জুলাই সরকারি শিশু পরিবার (বালিকা) প্রতিষ্ঠা করে। মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশে অবস্থিত এ প্রতিষ্ঠানের রয়েছে পাঁচতলা বিশিষ্ট নিবাসীদের বসবাসের অত্যাধুনিক ভবন।

সরকারি শিশু পরিবারের (বালিকা) সদস্য সংখ্যা

নবনির্মিত সুরম্য ভবনের নিচতলায় শিশুদের তৃতীয় শ্রেণী পর্যন্ত পাঠদান এবং মিলনায়তন। দুইতলা থেকে ৫ তলা পর্যন্ত প্রতি তলায় ২৫ জনের একটি শিশু পরিবার হিসেবে ৪টি শিশু পরিবার বাস করে। সব শিশুই পড়ালেখা করে। এর মধ্যে শিশু শ্রেণীতে ১১ জন, প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণীতে ৩০ জন, চতুর্থ শ্রেণীতে ৯ জন, পঞ্চম শ্রেণীতে ১৯ জন, ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে ৫ জন, সপ্তম শ্রেণীতে ৪ জন, অষ্টম শ্রেণীতে ৩ জন, নবম শ্রেণীতে ৭ জন, দশম শ্রেণীতে ৫ জন এবং এইচএসসিতে একজন বালিকা পড়ালেখা করে।
 
সরকারি শিশু পরিবার (বালিকা) পুনর্বাসন

এ শিশু পরিবারে ভর্তি হয়েছে ৯শ ৫০ জন বালিকা। অব্যাহতি নিয়েছে ৬শ ২ জন, পুনর্বাসন করা হয়েছে ২শ ৪৮ জনকে। এসএসসি পাস করেছে ২৮ জন এবং এইচএসসি একজন। জানা গেছে, এ শিশু পরিবারের সদস্যরা বিয়ের পর প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আর কোনো যোগাযোগ রাখে না।

প্রতিষ্ঠানটিতে কর্মকর্তা-কর্মচারীর সংকট চরমে

এখানকার সবচেয়ে বড় সমস্যা জনবল সংকট। এখানে ১৭টি পদের মধ্যে মাত্র ৮টি পদে কর্মচারী আছেন। উপ-তত্ত্বাবধায়ক, সহকারী তত্ত্বাবধায়ক, ২ জন সহকারী শিক্ষক, ১টি খালাম্মা এবং ৪টি এমএলএসএস পদ শূন্য। উপ-তত্ত্বাবধায়কের পদে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের সমাজ সেবা কর্মকর্তা সরকার নাসিমা বেগম অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন। কর্মকর্তা এবং কর্মচারীদের বেশির ভাগ পদ শূন্য থাকায় দিনে-রাতে প্রহরাসহ দৈনন্দিন কর্মকাণ্ডে অনেকটা স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। তবে এ নাগাদ কোনো অঘটন ঘটেনি।

সরকারি শিশু পরিবার (বালিকা) সদস্যদের দাবি

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিশু পরিবারের কয়েকজন বালিকা শূন্য পদগুলো অবিলম্বে পূর্ণ করার দাবি জানিয়েছে। তারা অতিরিক্ত আইরনযুক্ত পানির বদলে নিরাপদন পানি সরবরাহ এবং সুষ্ঠু ড্রেনেজ ব্যবস্থার মাধ্যমে বর্জ্য নিষ্কাশনেরও দাবি করেছে। এ ব্যাপারে তারা কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি কামনা করেছে। বালিকারা তাদের খাদ্যের মান উন্নত করার জন্যও দাবি জানিয়েছে।

তারা বাংলানিউজকে জানায়, ১৬ই ডিসেম্বর বিজয় দিবস এবং ২৬ মার্চ স্বাধীণতা দিবসে শিশু পরিবারের সদস্যদের উন্নতমানের খাদ্য দেওয়া হয় এবং বিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত বালিকারা উপবৃত্তির টাকাও নিয়মিত পায়।

কিন্তু সরকার থেকে বিশেষ বরাদ্দ দেওয়া হয় কিনা জিজ্ঞাসা করলে তা পায়না বলে জানায়। তারা সপ্তাহে এক দিনের পরিবর্তে দুইদিন পরিবারের সঙ্গে দেখা করার নিয়ম করার জন্যও দাবি জানায়।

সরকারি বিশেষ বরাদ্দ

সরকার থেকে শিশু পরিবারের অনাথ শিশুদের জন্য বেশ কয়েকটি বিশেষ বরাদ্দ থাকে। কিন্তু এগুলো কী কী খাতে বরাদ্দ, তা অনাথ শিশুরা জানে না। যেমন, ক্রীড়া, বনভোজন, সাংস্কৃতিক, খেলাধুলার জন্য বিশেষ একটি অর্থ বরাদ্দ দিয়ে থাকে সরকার। কিন্তু আজ পর্যন্তও এ ধরনের কোনো সুবিধাও তারা পায়নি।

নিবাসী অনাথ শিশুদের পাঠদান

সেতু নামে একটি এনজিও শিশু শ্রেণী থেকে তৃতীয় শ্রেণী পর্যন্ত বালিকাদের শিক্ষা দেয়। এরপর ৪র্থ শ্রেণী থেকে বালিকাদের নিকটবর্তী রহিমা মেমোরিয়াল উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে ভর্তি করা হয়।

রহিমা মেমোরিয়াল উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা ইয়াসমিন আক্তার বাংলানিউজকে জানান, শিশু পরিবারের ছাত্রীদের মধ্যে কিছু ছাত্রী মেধাবী। তবে সঠিক পরিচর্যার অভাবে বেশির ভাগ ছাত্রীই পরীক্ষায় ভালো ফল করতে পারে না।

সরকারি শিশু পরিবার (বালক):

সমাজ সেবা দফতরের অধীন টাঙ্গাইল শিশু পরিবার (বালক) প্রতিষ্ঠানটি তৎকালীন পাকিস্তান আমলে বর্তমানে যেস্থানে শিশু পরিবার (বালিকা) অবস্থিত ওই জায়গায় ১৯৫৯ সনের ১৪ জানুয়ারি সরকারি উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৭২ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সরকারের আমলে শহরর বেপারী পাড়া এলাকায় ২০ একর ৪৬ শতাংশ জমির ওপর সরকারি শিশু সদন (বালক) নামে প্রতিষ্ঠানটি স্থানান্তর হয়। ১৯৮৮ সনে এ প্রতিষ্ঠানের নামকরণ করা হয়- সরকারি শিশু পরিবার (বালক)।

সরকারি শিশু পরিবারের (বালক) সদস্য সংখ্যা

টাঙ্গাইল সরকারি শিশু পরিবার (বালক) ও শিশু ভর্তির অনুমোদিত আসন সংখ্যা ১শ ৭৫ জন। বর্তমানে নির্বাসীর সংখ্যা ১শ ২৩ জন। অর্থাৎ ৫২টি আসন শূন্য। এর মধ্যে প্রথম শ্রেণীতে ৪৩ জন, দ্বিতীয় শ্রেণীতে ১১ জন, তৃতীয় শ্রেণীতে ১১ জন, চতুর্থ শ্রেণীতে ২২ জন, পঞ্চম শ্রেণীতে ১৫ জন, ষষ্ঠ শ্রেণীতে ১৩ জন, সপ্তম শ্রেণীতে ১১ জন, অষ্টম শ্রেণীতে ১৪ জন, নবম শ্রেণীতে ৯ জন, দশম শ্রেণীতে ৭ জন, একাদশ শ্রেণীতে ৮ জন ও দ্বাদশ শ্রেণীতে ৪ জন পড়ালেখা করছে। এ প্রতিষ্ঠান থেকে এ পর্যন্ত মোট ১শ ৭৪ জন এসএসসি এবং ৩৫ জন এইচএসসি পাস করেছে। ২০১২ সনে এখান থেকে ৪ জন এসএসসি পরীক্ষা দেয়। এরা ৪ জনই উত্তীর্ণ হয়। এর মধ্যে ১ জন এ+ গ্রেড, ২ জন এ-গ্রেড, ১ জন বি গ্রেড পায়। ২০১২ সনে ২ জন এইচএসসি পরীক্ষা দেয়। এর মধ্যে ১ জন এ মাইনাস এবং অপরজন সি গ্রেড পেয়ে উত্তীর্ণ হয়।

সরকারি শিশু পরিবার (বালক) পুনর্বাসন

এ নাগাদ প্রতিষ্ঠানটিতে মোট ১ হাজার ৪শ ৭৩ জন অনাথ শিশু ভর্তি হয়েছে। এ পর্যন্ত এ প্রতিষ্ঠান থেকে বেরিয়ে যাওয়া ১ হাজার ৩শ ৫০ জনকে পুনর্বাসিত করা হয়েছে। এর মধ্যে সরকারি চাকরি করছে ৪৫ জন, বেসরকারি চাকরিতে আছে ১শ ২৬ জন, আত্মকর্মসংস্থান করেছে ১শ ১৮ জন, ব্যবসায় নিয়োজিত আছে ১শ ৩৫ জন এবং অভিভাবকের মাধ্যমে পুনর্বাসিত হয়েছে ৯শ ২৬ জন।

প্রতিষ্ঠানটিতে কর্মকর্তা-কর্মচারীর পদ সংখ্যা

প্রতিষ্ঠানটিতে কর্মকর্তা-কর্মচারীর পদ সংখ্যা ২২ জন। এর মধ্যে প্রতিষ্ঠান প্রধান এবং উপপ্রধান অর্থাৎ উপতত্ত্বাবধায়ক ও সহকারী তত্ত্বাবধায়ক এ দুই কর্মকর্তার পদই শূন্য। বাসাইল উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা জহিরুল ইসলাম অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে সাময়িকভাবে উপতত্ত্বাবধাকের কাজ চালাচ্ছেন। এমএলএসএসের ৬টি পদের মধ্যে ৩ জন কর্মরত, ২টি পদ শূন্য, ১ জন সাময়িক বরখাস্ত। প্রশিক্ষকের ৩টি পদের মধ্যে ২ জন কর্মরত, ১ জন প্রেষণে মধুপুর উপজেলায় কাজ করছেন। কম্পাউন্ডারের ১টি পদও শূন্য।

সহকারী শিক্ষক তথা ‘বড় ভাইয়া’র ৮টি পদে ৮ জন, ১ জন অফিস সহকারী কর্মরত আছেন। খণ্ডকালীন একজন চিকিৎসক থাকলেও প্রায় ৮০ বছর বয়স্ক এই চিকিৎসক নিজেই অসুস্থ। তাকে দিয়ে চিকিৎসা কার্যক্রম চলছে না।

নিবাসী অনাথ শিশুদের পাঠদান

শিশু শ্রেণী থেকে তৃতীয় শ্রেণী পর্যন্ত নিবাসীদের শিশু পরিবারেই পাঠদান করানো হয়। ‘সেতু’ নামে একটি এনজিও এ পাঠদান করে থাকে। এরপর চতুর্থ শ্রেণী থেকে নিবাসীদের কাছের বিদ্যালয়ে ভর্তি করা হয়। স্টার প্রাথমিক বিদ্যালয়, হাজী আবুল হোসেন উচ্চ বিদ্যালয় এবং ইবি টেক কলেজে এই প্রতিষ্ঠানের বালকরা পড়ালেখা করে।

নিবাসী অনাথ শিশুদের (বালক) সুবিধা-অসুবিধা

প্রায় সাড়ে ২০ একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত সরকারি শিশু পরিবার, টাঙ্গাইলের রয়েছে প্রচুর জায়গা জমি। আছে পুকুর ও খেলার মাঠ। থাকার জন্য রয়েছে ৩ তলা ভবন। কিন্তু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আবাসিক সুবিধা নেই। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মর্যাদা অনুযায়ী আবাসিক সুবিধার ব্যবস্থা করা হলে তারা সবসময় এখানে উপস্থিত থাকতে পারবেন। এতে নিবাসীদের যে কোনো সমস্যা হলে তা দ্রুত সমাধান সম্ভব হবে। চারদিকে দেওয়াল থাকলেও পশ্চিম দিকের দেয়াল ভেঙে যাওয়ায় বিভিন্ন সময় সমস্যা দেখা দেয়। এ ভবনের বাথরুম ও ল্যাট্রিনের অবস্থা ভালো নয়। তাই, এগুলোও নতুন কর সংস্কার দরকার।
 
নিবাসী অনাথ শিশুদের (বালক) অর্থ বরাদ্দ

প্রতিমাসে নিবাসীদের জন্য মাথাপিছু ২ হাজার টাকা অর্থ বরাদ্দ আছে। এর মধ্যে খাদ্য, জ্বালানি ও দুধ বাবদ ১ হাজার ৬শ টাকা, শিক্ষার জন্য ১শ ৬০ টাকা, প্রশিক্ষণ বাবদ ৫০ টাকা, পোশাক বাবদ ১শ ৫০ টাকা, চিকিৎসা ৩ ০টাকা, তেল, সাবান, ফিনাইল, ব্লিচিং পাউডার বাবদ ৬০ টাকা মিলিয়ে সর্বমোট ২ হাজার টাকা ব্যয় করা হয়। এছাড়া ঈদ, ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস এবং ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসে নিবাসীদের উন্নত খাবার দেওয়া হয় সরকারিভাবে।

নিবাসীদের অভিযোগ (বালক)

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন নিবাসী বাংলানিউজকে জানায়, বর্তমান বাজারে তাদের জন্য মাসিক ২ হাজার টাকা বরাদ্দ যথেষ্ট নয়। তারা মাসিক বরাদ্দ অন্তত ৩ হাজার টাকা করার দাবি জানায়।

শিশুরা অভিযোগ করে, তাদের দেওয়া খাদ্যের মান ভালো নয়। প্রতিদিন এক বেলা সবজি, দুই বেলা মাছ ও সপ্তাহে এক বেলা মাংশ। এই খাদ্য খেতে অরুচি হয়। নানা রোগ দেখা দেয়। চিকিৎসার ব্যবস্থাও তেমন নেই। তারা নিবাসীদের ভালো চিকিৎসার দাবি জানায়। তাদের বাথরুম এবং ল্যাট্রিনের সমস্যাও রয়েছে বলে জানায়। তারা অভিযোগ করে, বহিরাগতদের সঙ্গে কর্মকর্তা কর্মচারীদের সখ্যতা থাকায় তারাও মাঝে মাঝে এখানে ২/৩ দিন থাকে। খাওয়া-দাওয়া ও রাত্রিযাপন করে।

এ বিষয়ে কোনো অনাথ শিুশু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ভয়ে কিছু বলতে সাহস পায় না।

রাজনৈতিক নেতাদের তদারকি

কোনো রাজনৈতিক নেতারা এ দুই সরকারি শিশু পরিবারের শিশুদের কোনো খোঁজখবর নেয় না বলে দুই প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বাংলানিউজকে জানান।
এ ব্যাপারে সরকারি শিশু পরিবার (বালক) ভারপ্রাপ্ত উপতত্ত্বাবধায়ক জহিরুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, কর্তৃপক্ষ সব সময় নিবাসীদের যে কোনো সমস্যা সমাধানে নজর দিচ্ছে। সমাধানও করছে।

তিনি জানান, জেলা প্রশাসককে সভাপতি করে উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে গঠিত শিশু পরিবারের ব্যবস্থাপনা কমিটি নতুন নিবাসী ভর্তি থেকে শুরু করে এখানকার সব কার্যক্রম পরিদর্শন করে এবং যে কোনো সমস্যা-সমাধানে উদ্যোগ নেয়। জেলা প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা মাঝে মাঝেই শিশু পরিবার সরেজমিন দেখা শোনা করেন।

এ ব্যাপারে টাঙ্গাইলের জেলা সমাজ সেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক নিখিল চন্দ্র মজুমদার বাংলানিউজকে জানান, টাঙ্গাইলের বালক ও বালিকা-দুই শিশু পরিবারের কার্যক্রম সন্তোষজনক। তিনি স্বীকার করেন, দুই শিশু পরিবারেরই উপতত্ত্বাবধায়ক ও সহকারী তত্ত্বাবধায়ক পদসহ গুরুত্বপূর্ণ অনেক পদ শূন্য থাকায় কিছু অসুবিধা হচ্ছে। এই অসুবিধা দূর করার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

এ বিষয়ে সরকারি শিশু পরিবার (বালিকা) উপতত্ত্বাবধায়ক পদে অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা সরকার নাসিমা বেগম বাংলানিউজকে জানান, জেলা প্রশাসককে সভাপতি করে শিশু পরিবার ব্যবস্থাপনা কমিটি রয়েছে। কমিটির সদস্যরা প্রতিমাসে একবার করে শিশু পরিবার পরিদর্শন করেন। তবে কোনো রাজনৈতিক নেতারা কোনো খোঁজখবর নেয় না। সরকারি কোনো বিশেষ বরাদ্দ দেওয়াও হয়না বলেও জানান তিনি।

এ বিষয়ে টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সামছুল আলম তোফা বাংলানিউজকে জানান, বিশেষ কোনো দিনে জেলা বিএনপির উদ্যোগে ওই সব অনাথ শিশুদের উন্নত খাবার পরিবেশন করা হয়।

এ বিষয়ে টাঙ্গাইল সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল রশীদ লেবু বাংলানিউজকে বলেন, “শিশু পরিবারের ব্যাপারে আমি কিছুই জানি না। ” কোনো খোঁজখবর নেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, “কোনো অনুষ্ঠানে যদি দাওয়াত দেওয়া হয় তাহলে সেখানে যাওয়া হয়। এ ছাড়া যাওয়ার সময় পাই না। ”

এ বিষয়ে টাঙ্গাইল জেলা পরিষদের প্রশাসক ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফজলুর রহমান খান ফারুকের সঙ্গে মুঠোফনে যোগাযোগ করে তাকে পাওয়া যায়নি।

তবে টাঙ্গাইলের বিদায়ী জেলা প্রশাসক এম বজলুল করিম বাংলানিউজকে জানান, সরকারি ২ শিশু পরিবারে তেমন কোনো সমস্যা নেই। তবে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পদ শূন্য থাকায় একটু অসুবিধা হচ্ছে। কবে নাগাদ এই পদগুলো পূরণ করা হবে এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য দিতে পারেননি তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৭, ২০১২
সম্পাদনা: শাফিক নেওয়াজ সোহান, নিউজরুম এডিটর, আশিস বিশ্বাস, অ্যাসিস্ট্যান্ট আউটপুট এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।