ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

শিক্ষা

পাঠ্যপুস্তকে অর্ন্তভুক্ত হচ্ছে অটিজম

ইসমাইল হোসেন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২৬ ঘণ্টা, আগস্ট ৩, ২০১২
পাঠ্যপুস্তকে অর্ন্তভুক্ত হচ্ছে অটিজম

ঢাকা: অটিস্টিক শিশুদের জন্য একটি বিশেষায়িত অটিজম একাডেমি প্রতিষ্ঠাসহ এসব শিশুদের সমাজের মূল ধারায় আনতে এ সংক্রান্ত অ্যাকশন প্ল্যান চূড়ান্ত করেছে সরকার। এতে পাঠ্যপুস্তকে অটিজম সংক্রান্ত বিষয়ও অর্ন্তভুক্ত করার কথা বলা হয়েছে।



সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের চূড়ান্ত করা এ অ্যাকশন প্ল্যানে বলা হয়েছে, অটিস্টিক শিশুদের উপযোগী ছাত্রাবাস, শিক্ষা উপকরণ, আসবাবপত্র, একাডেমিক কাম প্রশাসনিক ভবন দ্রুত প্রতিষ্ঠা করা হবে।

এছাড়া সারাদেশের ১৫ হাজার শিক্ষককে অটিজম শিশুদের বিষয়ে বিশেষ প্রশিক্ষণ প্রদান, মা-বাবাদের প্রশিক্ষণ প্রদানসহ সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে শিগগিরই একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হবে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে বুধবার এক সভায় এ অ্যাকশন প্ল্যান চূড়ান্ত কর হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন শিক্ষাসচিব ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী।

শিক্ষাসচিব জানান, ২০১৩ সালের তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির পাঠ্য পুস্তকে অটিজম সংক্রান্ত বিষয় থাকবে এবং পরবর্তীকালে নবম ও দশম শ্রেণির পাঠ্যক্রমেও যুক্ত করা হবে।

অটিজম বিষয়ে সচেতনতা প্রকল্প গ্রহণের পূর্বে শিগগিরই অটিজম বিষয়ক একটি কর্মসূচি প্রণয়ন করার কথাও জানান তিনি।

সভায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং গ্লোবাল অটিজম অ্যান্ড পাবলিক হেলথ’র (জিএপিএইচ-বাংলাদেশ) কো-চেয়ারপারসন ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মোস্তফা কামালউদ্দিন, জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থাপনা একাডেমির (নায়েম) মহাপরিচালক প্রফেসর শেখ ইকরামুল কবীর, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী আব্দুল্লা হিল আজাদ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব (মাধ্যমিক), দেশের ১৪টি শিক্ষক প্রশিক্ষণ কলেজের অধ্যক্ষ, ৫টি উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের পরিচালক এবং বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ বুধবারের সভায় উপস্থিত ছিলেন।

শিক্ষা সচিব জানান, সকল প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানে অটিজমের ওপর কোর্সে এক বা একাধিক ক্লাস নেওয়া বাধ্যতামূলক করা হবে।

জিএপিএইচ-বাংলাদেশ এর সহায়তায় জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থাপনা একাডেমি শিগগিরই অটিজমের ওপর একটি ক্লাস হ্যান্ড আউট প্রণয়ন করবে। অটিজমের বিষয়ক প্রণীত শিক্ষা আইনে অন্তর্ভুক্ত করা হবে বলেও তিনি জানান।

দেশে অটিস্টিক শিশুর সংখ্যা কত, তার নির্দিষ্ট পরিসংখ্যান না থাকলেও গত বছর জুলাই মাসে ঢাকায় অনুষ্ঠিত অটিজম সম্মেলনে জানানো হয়, দেশের শতকরা ১০ ভাগ মানুষ প্রতিবন্ধকতার শিকার। যার মধ্যে ১ শতাংশ অটিজম আক্রান্ত। এ হিসাবে দেশে প্রায় দেড় লাখ অটিস্টিক শিশু রয়েছে।

ওই সম্মেলনে বিশ্ব স্বাস্থ্যসংস্থা ও কমিউনিক্যাবল ডিজিজ কন্ট্রোলের বরাত দিয়ে আমেরিকায় কর্মরত শিশু মনোবিজ্ঞানী ড. এম হক জানান, বিশ্বে শতকরা ১ জন অটিস্টিক শিশু রয়েছে।

অটিজম একটি মানসিক ও শারীরিক প্রতিবন্ধকতা। এ শ্রেণীর শিশুদের জন্য এটা চ্যালেঞ্জিং বিষয়। এই শিশুদের যথাযথ যত্ন নিলে তারাও মূল জনস্রোতে মিশে দেশ ও জাতির জন্য অনেক অবদান রাখতে পারে।

বর্তমান সরকার প্রতিবন্ধী ও অটিস্টিক শিশুদের জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে সেন্টার ফর নিউরো ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড অটিজম চালু করেছে।

এছাড়া নির্মাণাধীন শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মেমোরিয়াল বিশেষায়িত হাসপাতালে দরিদ্র শিশু-নারী, প্রতিবন্ধী ও অটিস্টিক শিশুদের জন্য স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে।

অটিজম একাডেমি প্রতিষ্ঠা এবং সিলেবাসে অটিজম বিষয় অর্ন্তভুক্ত হলে অটিস্টিক শিশুদের প্রতবন্ধকতা অনেকটা হ্রাস করা যাবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

অটিজম বিষয়ে প্রকল্প বা কর্মসূচি প্রণয়নের পূর্বে এখন থেকেই সচেতনতা সৃষ্টি ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানগুলোতে পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্টদের পরামর্শ দিয়ে শিক্ষাসচিব ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী বলেন, “সকলের আন্তরিক প্রচেষ্টায় অটিস্টিক শিশুদের সমাজের মূল জনস্রোতে নিয়ে আসা সম্ভব। ”

বাংলাদেশ সময়: ১৬১৭ ঘণ্টা, আগস্ট ০৩, ২০১২
এমআইএইচ/সম্পাদনা: আবু হাসান শাহীন, নিউজরুম এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।