ঢাকা, রবিবার, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫

শিক্ষা

সালথায় স্কুলের সীমানা প্রাচীর নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট     | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৩৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ৫, ২০২৩
সালথায় স্কুলের সীমানা প্রাচীর নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ

ফরিদপুর: ফরিদপুরের সালথা উপজেলা সদরে অবস্থিত সালথা সরকারি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সীমানা প্রাচীর নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

সীমানা প্রাচীর নির্মাণে রডের রিং ছাড়াই রাতের আঁধারে বেজ, শর্ট কলাম, বিম ও পিলার ঢালাই দেওয়া হয়েছে।

এ কাজে ব্যবহার করা হয়েছে নিম্নমানের রড, খোয়া ও বালি। ব্যাপক অনিয়মের এ দৃশ্য মোবাইলের ক্যামেরায় ধারণ করে স্থানীয়রা ফেসবুক পেজে আপ দিয়ে প্রতিকার চেয়েছেন। এভে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। এমন অবস্থায় কাজের গুণগতমান বিরূপ হওয়া কাজটি বন্ধ করে দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

জানা গেছে, শিক্ষার অবকাঠামো উন্নয়ন ও সড়কের পাশেই এ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যাতে দুর্ঘটনার শিকার না হয়, সেজন্য সীমানা প্রাচীর নির্মাণের উদ্যোগ নেয় সরকার। এরই ধারাবাহিকতায় শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের অধীনে সালথা সরকারি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৭৪ মিটার সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করা হচ্ছে। এতে বরাদ্দ ধরা হয়েছে ৮ লাখ টাকা। টেন্ডারের মাধ্যমে কাজটি পেয়েছেন ‘আফরিন এন্টারপ্রাইজ’ নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

সালথা উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক ও বিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র জাহিদ হাসান এমিলি অভিযোগ করে বলেন, গত শুক্রবার (৩ নভেম্বর) আমরা স্কুলে মাঠে ক্রিকেট খেলতে এসে দেখি সীমানা প্রাচীর নির্মাণে ব্যাপক অনিয়ম হচ্ছে। বেজ, বিম ও পিলার ঢালাইয়ে রড কম দেওয়া হয়েছে। এছাড়া এ কাজে রডের রিং ছাড়াই চারটি চিকন রড দিয়ে দেওয়া হচ্ছে ঢালাই। পরে আমি মোবাইলে এসব দৃশ্য ভিডিও করে ফেসবুকে আপ করি এবং সালথা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আনিচুর রহমান বালি স্যারকে বিষয়টি জানাই।

অভিযোগের ব্যাপারে সালথা সরকারি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) মো. খায়রুল বাসার বলেন, আমাদের উপস্থিতিতে কাজ করার কথা থাকলেও ঠিকাদারের লোকজন তা করেনি। আমরা যখন উপস্থিত থাকি, তখন তাদের কাজের গতি কম থাকে। আর আমরা সরে গেলেই বেড়ে যায় কাজের গতি। পরে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়।  

কাজের ঠিকাদার আফরিন এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মো. মিঠু বলেন, কাজটি আমি দেড় বছর আগে পেয়েছিলাম। আগের রেটে কাজটি হওয়ায় লাভ হবে না।  তাই কাজটি আমি রাজবাড়ীর এক ঠিকাদারের কাছে বিক্রি করে দেই। তবে কাজে অনিয়মের বিষয়টি শুনেছি।  

আরও অভিযোগ রয়েছে শিক্ষা অধিদপ্তরের কিছু অসাধু কর্মকর্তা ও ঠিকাদার যোগসাজশে অনিয়মের মাধ্যমে কাজটি শেষ করার পরিকল্পনা করেছিলেন। সেই অনুযায়ী কাজের সময় শিক্ষা অধিদপ্তরের কোনো তদারকি কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন না।  

এদিকে অনিয়মের বিষয় জানতে পেরে শনিবার (৪ নভেম্বর) সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন ফরিদপুর শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী সামচুদ্দিন তালুকদার। পরে পরিদর্শনের সময় তিনি নির্মাণ করা বিম ও পিলার ভেঙে রড বের করে অনিয়মের সত্যতা পান।  

এ ব্যাপারে সহকারী প্রকৌশলী সামচুদ্দিন তালুকদার বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর আমি এসে দেখতে পেলাম, ঠিকাদার রাতের অন্ধকারে কাজ করেছে। কাজের বিষয় আমাকে অবগতও করেনি। তারা চুরি করে কাজ করেছে। তাই অনিয়মে সম্পন্ন কাজগুলো ভেঙে ফেলে নতুন করে ও সঠিকভাবে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করা হবে।  

স্কুলের সীমানা প্রাচীর নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ বিষয়ে সালথার ইউএনও মো. আনিচুর রহমান বালি বলেন, অনিয়ম বিষয়টি জানার পর কাজটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ঠিকাদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া জন্য জেলা অফিসে একটি প্রতিবেদন পাঠানো হবে।

বাংলাদেশ সময়: ২১৩০ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৫, ২০২৩
এসএম/এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।