ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

শিক্ষা

সৃজনশীল প্রশ্নপদ্ধতিতে নোট-কোচিং কাজে আসেনি

মাজেদুল নয়ন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪০ ঘণ্টা, মে ৭, ২০১২

ঢাকা: কোচিং ব্যবসায়ী এবং নোট ও গাইড বই ব্যবসায়ীদের জন্যে এবারের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল দুঃসংবাদ বয়ে এনেছে। পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে আসেনি কোচিংয়ের শিক্ষকদের দেওয়া সাজেশনস।

এছাড়াও নোট বইয়ে দেওয়া মডেল প্রশ্নপত্রের ধরনও পরীক্ষায় আসেনি। তবে প্রশ্নপত্রের ধরন এমন ছিল যে শিক্ষার্থীদের উত্তর প্রদানে কোন সমস্যাই হয়নি।

সোমবার এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী বাংলানিউজকে এ তথ্য জানান।  

২০১২ সালের এসএসসি ও সমামেনর পরীক্ষায় বাংলা ২য় পত্র, ইংরেজি ১ম ও ২য় পত্র এবং গণিত বিষয় ছাড়া আর সব বিষয়ে সৃজনশীল প্রশ্ন পদ্ধতিতে পরীক্ষা হয়েছে। এবার সৃজনশীল পদ্ধতির প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা হয়েছে ২১টি বিষয়ে।

ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ফাহিমা খাতুন বাংলানিউজকে বলেন, ‘সৃজনশীল পদ্ধতিতে নোট ও গাইড বই কাজে লাগেনি। গত বছরও সৃজনশীলে সাফল্য এসেছে ব্যাপক। শিক্ষার্থীরা এখন মূল বই পড়ছে। তারা বুঝতে পেরেছে, মুখস্ত জ্ঞানের দিন শেষ হয়ে আসছে। নিম্নমানের গাইড বই পড়ে কিছু হবে না। সাজেশন নির্ভর পড়া দিয়েও চলবে না। ’

তিনি বলেন, ‘টাকা দিয়ে নোট-গাইড না কিনে বিনা মূল্যে দেওয়া সরকারের বই পড়লে ভালো নম্বর পাওয়া যায়- এটা এখন বুঝতে পারছেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। ’

শিক্ষার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, ‘শিক্ষকদের একটি বড় অংশ এখনো সৃজনশীল প্রশ্নপদ্ধতি আয়ত্ত করতে পারেননি। এ ধরনের প্রশ্ন করার জন্য যে ধরনের পড়াশোনা ও পরিশ্রম করতে হয়, তা অনেকেই করতে চান না। তাছাড়া সরকারি উদ্যোগে শিক্ষকদের যে ধরনের প্রশিক্ষণ দেওয়ার কথা ছিল, তা হয়নি। যেটা হয়েছে, তা সামান্য এবং আংশিক।
এ প্রসঙ্গে ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান বলেন, ‘সৃজনশীল প্রশ্নপদ্ধতি সফল করতে শিক্ষক প্রশিক্ষণ আরও নিবিড়ভাবে করতে হবে। ’

মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের মহাপরিচালক অধ্যাপক নোমান-উর-রশীদ বাংলানিউজকে বলেন, ‘মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষকের সংখ্যা অনেক। তাঁরা এখন বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণ পাচ্ছেন। ’

তিনি আরও বলেন, ‘মাধ্যমিক স্তরে পর্যায়ক্রমে নতুন পাঠ্যক্রম হচ্ছে এবং ওই পাঠ্যক্রমের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ সৃজনশীল প্রশ্ন চালু হলে তা শিক্ষার গুণগত মান বাড়াতে ভূমিকা রাখবে। ’

প্রকাশিত ফল পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, সৃজনশীল প্রশ্নপত্রের অধীনে নেওয়া বিষয়গুলোর ফল আগের তুলনায় ভালো হয়েছে অথবা ফল একই রকম আছে। ’
 
উল্লেখ্য, সৃজনশীল পদ্ধতিতে একজন শিক্ষার্থীর জ্ঞান স্তর, অনুধাবন স্তর, প্রয়োগ স্তর ও উচ্চতর দক্ষতা যাচাই করা হয়।

প্রশ্নপত্রে তুলে দেওয়া একটি অনুচ্ছেদের ভিত্তিতে ১০ নম্বরের একটি প্রশ্ন থাকে। এর চারটি অংশ তথা ক, খ, গ, ঘ এবং মানবণ্টন হয় যথাক্রমে ১, ২, ৩, ৪। মোট ছয়টি প্রশ্নে ৬০ নম্বর, বাকি নম্বর নৈর্ব্যক্তিক বা ব্যবহারিক প্রশ্নে বরাদ্দ থাকে। প্রতিটি প্রশ্ন হয় মৌলিক, অর্থাৎ একবার কোনো প্রশ্ন ব্যবহূত হলে তা পুনরায় ব্যবহার করা যায় না। এরইমধ্যে ষষ্ঠ শ্রেণী থেকে সৃজনশীল প্রশ্নে পরীক্ষা নেওয়া শুরু হয়েছে। এসব শিক্ষার্থী ধাপে ধাপে যখন মাধ্যমিক পরীক্ষায় অংশ নেবে, তখন এই প্রশ্নপদ্ধতি তাদের কাছে আরও বেশি সহজবোধ্য হয়ে উঠবে।

২০১০ সালের এসএসসি পরীক্ষায় বাংলা প্রথম পত্র ও ধর্ম শিক্ষা বিষয়ে (চারটি) সৃজনশীল প্রশ্নপদ্ধতি চালু করা হয়। ২০১১ সালে এর সঙ্গে যুক্ত হয় আরও পাঁচটি বিষয়। এগুলো হলো- সাধারণ বিজ্ঞান, সামাজিক বিজ্ঞান, ভূগোল, রসায়ন ও ব্যবসায় পরিচিতি। গণিত, ইংরেজি ও বাংলা দ্বিতীয় পত্র ছাড়া ২০১২ সালের এসএসসি পরীক্ষায় সবগুলো বিষয়ে সৃজনশীল প্রশ্ন চালু হয়।

বাংলাদেশ সময় : ১৯২৯ ঘণ্টা, মে ৭, ২০১২
এমএন/ সম্পাদনা: জাকারিয়া মন্ডল, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad