ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১, ০২ মে ২০২৪, ২২ শাওয়াল ১৪৪৫

শিক্ষা

ইবি ভিসির কণ্ঠে অডিও ছড়ালো কে, খুঁজবে কমিটি

ইবি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩২ ঘণ্টা, মার্চ ১৩, ২০২৩
ইবি ভিসির কণ্ঠে অডিও ছড়ালো কে, খুঁজবে কমিটি

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, (ইবি): সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আব্দুস সালামের কণ্ঠের মতো একটি কণ্ঠে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত অডিও ফাঁস হয়। কে বা কারা এ অডিও ছড়িয়েছে তা অনুসন্ধান করা হবে।

এ লক্ষ্যে একটি কমিটি গঠন করেছে ইবি প্রশাসন।

এসব অডিও কীভাবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়ালো, কারা প্রশাসন ভবনের সামনে জোরে এ অডিও বাজিয়েছে- তাদের চিহ্নিত করবেন কমিটির সদস্যরা। রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা যায়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত দুই-তিন সপ্তাহ যাবত এবং ইতোপূর্বেও বিভিন্ন সময়ে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ প্রশাসন, শিক্ষকসহ বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সদস্যদের নামে অনেক ক্ষেত্রে অডিও, ভিডিও ধারণ করে ফেসবুকে আইডি খুলে তা গণমাধ্যমসহ বিভিন্ন ডিজিটাল মিডিয়া ও পত্র-পত্রিকায় প্রচার করা হচ্ছে। কখনও কখনও বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে মাইক বাজিয়েও এ ধরনের প্রচারণা চালানো হচ্ছে। এসব বিষয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি চরমভাবে ক্ষুণ্ণ করছে। বিষয়গুলো সামগ্রিকভাবে খতিয়ে দেখে এসবের নেপথ্যের মানুষদের চিহ্নিত করে যথাশীঘ্র একটি প্রতিবেদন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নিকট জমা দেওয়ার লক্ষ্যে মাননীয় ভাইস-চ্যান্সেলর নিম্নোক্ত কমিটি গঠন করেছেন।

অনুসন্ধান কমিটির আহ্বায়ক হলেন বায়োটেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. রেজওয়ানুল ইসলাম। সদস্যরা হলেন- আইআইইআর’র পরিচালক অধ্যাপক ড. মামুনুর রহমান, গণিত বিভাগের অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান, আইসিটি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. সাদেক আলী। এছাড়া আইসিটি সেলের সিস্টেম অ্যানালিস্ট ড. নাঈম মোরশেদ কমিটির সদস্য সচিব করা হয়েছে।

গত ১৬ ও ১৭ ফেব্রুয়ারি ফারহা জেবিন ও মিসেস সালাম নামে দুটি ফেসবুক আইডি থেকে সাতটি অডিও পোস্ট করা হয়। অডিওর কথোপকথনটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আব্দুস সালামের বলে দাবি করা হয়। এসব অডিওয় নিয়োগ নিয়ে ও নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন নিয়ে উপাচার্যকে বিভিন্ন কথা বলতে শোনা যায়। তবে অডিওটিতে অন্য প্রান্তের কোনো কথা শোনা যায়নি।

অডিওতে একটি বিভাগের শিক্ষক নিয়োগ বোর্ড বাতিল হওয়ার কারণ ও আগামীতে বোর্ড অনুষ্ঠিত হওয়া সম্পর্কে বিভিন্ন কথা বলা হয়েছে। এছাড়াও নিয়োগ প্রার্থীকে বিভিন্ন প্রশ্ন বলে দেওয়া হয়। গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের নিয়োগ বোর্ড স্থগিতের ঘটনা নিয়ে এ আলোচনা করা হয়। অডিওতে ওই বিভাগের অলি নামে (সংক্ষিপ্ত নাম) এক শিক্ষক প্রার্থীর নাম ধরে সম্বোধন করতে শোনা যায়।

এ ঘটনায় গত ১৭ ফেব্রুয়ারি রাতে উপাচার্যের নির্দেশে ইবি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসান।

বিষয়টি নিয়ে দৈনিক মজুরিভিত্তিক কর্মচারী ও চাকরি প্রত্যাশী সাবেক ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা উপাচার্যের কার্যালয়ে তালা দিয়ে তার বিরুদ্ধে শ্লোগান দিতে থাকে। টানা কয়েকদিন উপাচার্যের কার্যালয়ে তালা দিয়ে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। পরে গত ২০ ফেব্রুয়ারি প্রশাসন ভবনের সামনে মাইকে উচ্চ আওয়াজে অডিও বাজানো হয়।

অডিও ফাঁসের ঘটনায় উপাচার্যকে নিয়ে নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতিশীল শিক্ষকদের সংগঠন শাপলা ফোরাম। একই অভিযোগে ক্ষুব্ধ ও হতাশা ব্যক্ত করে উপাচার্যের অবস্থান জানানোর দাবি জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি।

এসব ঘটনার পর গত ২৩ ফেব্রুয়ারি থেকে ৩ মার্চ পর্যন্ত ছুটি নিয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আব্দুস সালামে সপরিবারে ঢাকায় চলে যান। গত ৪ মার্চ তার বিশ্ববিদ্যালয়ে ফেরার কথা ছিল।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৩০ ঘণ্টা, মার্চ ১৩, ২০২৩
এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।