ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

সম্পাদকীয়

বিশেষ সম্পাদকীয়: শিক্ষকের মুখোশে ঘাতকের করাল চেহারা!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৫৮ ঘণ্টা, আগস্ট ৭, ২০১৬
বিশেষ সম্পাদকীয়: শিক্ষকের মুখোশে ঘাতকের করাল চেহারা! ছবি: সংগৃহীত

সবার ধারণা ও অনুমানই সত্য হতে চলেছে। গুলশানের হলি আর্টিজানে বর্বরোচিত হামলা-রহস্যের জট খুলতে শুরু করেছে।

নর্থসাউথের সাবেক শিক্ষক হাসনাত করিমের সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি স্পষ্টতর এবার। ‘হাসনাত করিমই গুলশান হামলার নাটের গুরু!’—শিরোনামে বাংলানিউজের প্রতিবেদনে সে তথ্যই উঠে এসেছে। অর্থাৎ, গোয়েন্দারা এখন প্রায় নিশ্চিত, হাসনাতই নাটের গুরু। হত্যাযজ্ঞটি নিখুঁতভাবে সম্পন্ন করতেই এই শিক্ষক নামধারী ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন সপরিবারে। হামলা পরিচালনা ও মনিটরিং করেছিলেন। তিনিই হামলার আপডেট দিয়েছেন, বিভিন্ন ছবি ও ভিডিও পাঠিয়েছেন দেশ ও দেশের বাইরে। তার এসব দুষ্কর্মের সঙ্গী কানাডাপ্রবাসী ছাত্র তাহমিদ খান। নিজে অস্ত্র চালিয়ে তাহমিদও এই নৃশংস হত্যাযজ্ঞে অংশ নেয়।

নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করা আর ধোপে টিকছে না হাসনাতের। দুটি স্থিরচিত্র এবং তারই মোবাইল ফোনের ফরেনসিক রিপোর্টই বলে দিচ্ছে তার আসল পরিচয়।

একটি ছবি বা ভিডিও যে হাজার শব্দের কথা বলে তা আবারও প্রমাণিত। অপরাধী সব সময়ই অপরাধের ছাপ রেখে যায়। এবারও সেটাই ঘটেছে।

হস্তক্ষেপহীনভাবে কাজ করার সুযোগ পেলে আমাদের গোয়েন্দারা নিজেদের যোগ্যতা প্রমাণে সক্ষম-- গুলশানের ঘটনা তারই প্রমাণবাহী। তারা চৌকস, যোগ্য ও মেধাবী। দেশপ্রেম ও প্রশংসনীয় পেশাদারিত্ব দেখিয়েছে তারা। পুলিশ ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনির সদস্যরা গুলশান ও শোলাকিয়ায় নিজেদের জীবন পর্যন্ত বিসর্জন দিয়েছেন। এর পরপরই কল্যাণপুরে জঙ্গি আস্তানা গুঁড়িয়ে দিয়ে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। ঠেকিয়ে দিয়েছেন সম্ভাব্য আরও নারকীয় হামলার ছক। সরকারের ভূমিকাও প্রশংসার্হ। সরকার জঙ্গি দমন ইস্যুতে সবাইকে জাগিয়ে তুলতে পেরেছে। সরকার-পুলিশ ও জনগণ এখন সারাদেশে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এক কাতারে। বার্তা একটাই, বাঙ্গালিকে ভয় ও সন্ত্রাস দিয়ে কখনো দমিয়ে রাখা যায়নি, যাবে না। এই ঐক্য অভূতপূর্ব।

এখন দরকার এই ঐক্যকে ধরে রাখা। জঙ্গি দমন ও নির্মূলে যার যার অবস্থান থেকে অবদান রাখা। সেইসঙ্গে দরকার নিজেদের প্রাযুক্তিক সক্ষমতা বাড়ানো, আরও বেশি জনসম্পৃক্ততা বাড়ানো, বিভিন্ন বাহিনির মধ্যে নিবিড় সমন্বয় এবং ঢিলেমির অবকাশ না রাখা।

নিম্ন মধ্য আয়ের দেশের তকমা অর্জন করে মিনি অর্থনৈতিক পরাশক্তি হিসেবে আবির্ভূত বাংলাদেশ জঙ্গি নির্মূলেও সারাবিশ্বের কাছে মডেল হয়ে উঠবে অচিরেই। আয়তনে ছোট হলেও আমাদের অর্জনের পাল্লা বড়। যেমন অর্থনীতিতে, সামাজিক সূচকে, তেমনি অশান্তি ও হিংসার দমনেও। ভয়ের কাছে মাথা নত আমরা করবো না। ভয়কে করবো জয়। আমাদের সম্মিলিত উদ্যম হিংসা ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে আমাদের জয়ী করবেই।

হাসনাত করিমই গুলশান হামলার নাটের গুরু!

বাংলাদেশ সময়: ১৩২৮ ঘণ্টা, আগস্ট ৭, ২০১৬
জেএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad