ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

শুধু লাভের জন্য ব্যাংকের অনুমোদন দেওয়া হয়নি: মন্ত্রী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩৪ ঘণ্টা, আগস্ট ১৪, ২০২২
শুধু লাভের জন্য ব্যাংকের অনুমোদন দেওয়া হয়নি: মন্ত্রী

ঢাকা: শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেছেন, শুধু ডলার বিক্রি করে লাভ করার জন্য এতোগুলো ব্যাংকের অনুমোদন দেওয়া হয়নি। এটা নৈতিকতার মধ্যে পড়ে না।

রোববার (১৪ আগস্ট) রাজধানীর মতিঝিলে এফবিসিসিআই আইকন ভবনে জাতীয় শোক দিবস ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মরণে দ্য ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) উদ্যোগে ‘বঙ্গবন্ধুর এসএমই উন্নয়ন ভাবনা ও বর্তমান প্রেক্ষাপট’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ব্যাংকগুলোর প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেন, শুধু মুনাফা করাই ব্যাংকের কাজ নয়। তাদের অবশ্যই জাতীয় দায়িত্ব পালন করতে হবে। সেজন্যই তাদের লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে। নগরাঞ্চলে বড় গ্রাহকদের ঋণ দিয়ে শহর-গ্রামের মধ্যে বৈষম্য বাড়ানো ব্যাংকের কাজ নয়। বরং উন্নয়ন সুষম করার দায়িত্ব।

তিনি বলেন, শিল্প উন্নয়নের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিতে টেকসই ও শক্তিশালী করার লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে ১৯৭৩ সালের ৭ জানুয়ারি ক্ষুদ্র, মাঝারি ও বৃহৎ শিল্পের উন্নয়নকে গুরুত্ব দিয়ে ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইনভেস্টমেন্ট পলিসি, ১৯৭৩ প্রণীত হয়। এটিই মূলত: এদেশের শিল্প উন্নয়নের প্রথম পরিকল্পনা দলিল। বঙ্গবন্ধুর নেওয়া উদ্যোগের ধারাবাহিকতায় সরকারি ও বেসরকারি খাতে দক্ষতা ও গতিশীলতা বাড়ানোর মাধ্যমে একটি শিল্পসমৃদ্ধ উন্নত দেশ বিনির্মাণে শিল্প মন্ত্রণালয় নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ‘সমতাভিত্তিক অর্থনীতি’ তৈরি করার উদ্দেশ্যে নারী উন্নয়ন, যুব সমাজের উন্নয়ন এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প উন্নয়নসহ গ্রাম উন্নয়নের মাধ্যমে এ দেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের জন্য নানামুখী পরিকল্পনা গ্রহণ করেন।

নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেন, স্বাধীনতার মহানায়ক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৫৬ সালে শিল্প, বাণিজ্য, শ্রম, দুর্নীতি দমন ও গ্রাম সহায়তা দপ্তরের মন্ত্রী ছিলেন। কোয়ালিশন সরকারের শিল্পমন্ত্রী থাকাকালীন অর্থনৈতিক বৈষম্য নিরসনকল্পে তৃণমূল পর্যায়ে শ্রমঘন শিল্পায়নের মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নকে এগিয়ে নেওয়ার সূচনা করেন। বঙ্গবন্ধু ১৯৫৭ সালে দেশের ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের উন্নয়নে সংসদীয় আইনের মাধ্যমে পূর্ব পাকিস্তান ক্ষুদ্র শিল্প করপোরেশন (ইপসিক) প্রতিষ্ঠা করেন। স্বাধীনতার পর ইপসিককে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) এ রূপান্তর করা হয়।

তিনি বলেন, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পখাত বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের মূল চালিকাশক্তি। রপ্তানি প্রবৃদ্ধি, পণ্য বৈচিত্র্যকরণ, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, দারিদ্র্য বিমোচনসহ সার্বিক আর্থ-সামাজিক অগ্রগতিতে এখাতের গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে। অথচ এসএমই উদ্যোক্তাদের ব্যাংক থেকে প্রয়োজনীয় ঋণ পেতে যথেষ্ট বেগ পেতে হয়। বিভিন্ন কাগজপত্র সরবরাহ করতে বলা হয়; যা ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের জন্য জোগাড় করা কষ্টকর। এসএমই উদ্যোক্তাদের জন্য ব্যাংক থেকে ঋণ দেওয়ার প্রক্রিয়া সহজ করা দরকার।

সেমিনারে বক্তারা এসএমইখাতে বিদ্যমান বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়ার জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

এফবিসিসিআইয়ের প্রেসিডেন্ট মো. জসিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ড. মো. মাসুদুর রহমান। এতে প্যানেল আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তারিক মোর্শেদ, এফবিসিসিআই এর উপদেষ্টা মঞ্জুর আহমেদ এবং এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মো. মফিজুর রহমান প্রমুখ।

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এফবিসিসিআই এর প্যানেল অ্যাডভাইজার এবং সিপিডির গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৪ ঘণ্টা, আগস্ট ১৪, ২০২২
জিসিজি/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।