ঢাকা, মঙ্গলবার, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২১ মে ২০২৪, ১২ জিলকদ ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

কোরবানির সংগ্রহকৃত মাংসে ফড়িয়াদের থাবা!

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৫০ ঘণ্টা, জুলাই ১০, ২০২২
কোরবানির সংগ্রহকৃত মাংসে ফড়িয়াদের থাবা!

রাজশাহী: সাধারণ সময়ে রাজশাহীর বাজারে গরুর মাংসের কেজি ৬৭০ টাকা। তবে সেই দামের তেমন তফাৎ নেই কোরবানির ঈদেও! আজ রোববার (১০ জুলাই) বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কোরবানির সংগ্রহ করা মাংসের দাম হাঁকা হয়, ৬২০ টাকা থেকে ৬৫০ টাকা!

প্রতিবছরের ন্যায় কোরবানির সংগ্রহকৃত মাংসের বাজার বসেছিল আজও।

কিন্তু ফড়িয়া ব্যবসায়ীদের থাবায় কোরবানির সংগ্রহকৃত মাংসের বাজারও ছিল চড়া। মৌসুমি এই ব্যবসায়ীরা ভিক্ষুক ও ছিন্নমূল মানুষদের কাছ থেকে ৪৫০ টাকা কেজি দরে কোরবানির সংগ্রহকৃত মাংস কিনে নেন। এরপর ভ্যানে করে বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে তারা এই মাংস চড়া দামে বিক্রি করেন। আর নানান কারণে যারা এবার কোরবানি দিতে পারেননি তারা এক রকম বাধ্য হয়েই ভিড় করেন এসব মাংসের ভ্রাম্যমাণ দোকানে। বিকেলে তাই জমে ওঠে ভাসমান এই কোরবানির মাংসের বাজারে। প্রতিবছরই কোরবানির শেষে বিকেল হলেই এই সংগ্রহকৃত মাংসের বাজার বসে রাজশাহী মহানগর এলাকায়। বিকেল থেকে সন্ধ্যা নেমে আসার সঙ্গে সঙ্গে মহানগরীর বিভিন্ন স্থান থেকে ভিক্ষুক ও খেটে খাওয়া মানুষ বাড়ি-বাড়ি গিয়ে মাংস সংগ্রহ করে নিয়ে আসতে এই বাজারে। কিন্তু এবার তাদের কাছ থেকে হাত বদল করে প্রায় বাজারমূল্যেই সংগ্রহকৃত মাংস বিক্রি করেন সাধারণ মানুষের কাছে।

রোববার বিকেলের পর শহর ঘুরে দেখা গেছে, রাজশাহী রেলস্টেশন, শিরোইল বাস টার্মিনাল, শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামান চত্বর, দড়িখড়বোনা, লক্ষ্মীপুর, হড়গ্রাম, সরকারি মহিলা কলেজের মোড়সহ মহানগরীর বিভিন্ন মোড়ে বসেছিল কোরবানির সংগ্রহকৃত মাংসের বাজার।  

যেখানে গত বছর কোরবানির মৌসুমেও ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকা কেজি দরে তারা সংগ্রহকৃত মাংস বিক্রি করছেন ক্রেতাদের কাছে। এবার দাম নিচ্ছেন ৬২০ টাকা থেকে ৬৫০ কেজি দরে। আর কোরবানির সংগ্রহকৃত খাসির মাংসের দর ছিল ৮২০ থেকে সাড়ে ৮০০ টাকা কেজি।

মহানগরীর শিরোইল কলোনি এলাকার মাংস বিক্রেতা শফিকুল বলেন, সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত তিনি প্রায় ৩০ কেজি মাংস কেনাবেচা করেছেন। এতে তার ভালোই লাভ হয়েছে। পাড়া-মহল্লা থেকে ভিক্ষুক ও দরিদ্র শ্রেণির মানুষ যেই মাংস সংগ্রহ করেছেন তা তারা কিনে নিয়েছেন। পরে সেই মাংস আবার ভ্যানে করে বিক্রি করে বেরিয়েছেন। বছরের এই একদিনই তিনি মাংসের ব্যবসা করেন। রেলওয়ে কলোনি এলাকার সাজ্জাদ আলী বলেন, যারা অর্থাভাবে অথবা সময়ের অভাবে কোরবানি দিতে পারেননি এবং যাদের এই মহানগরে বড় খাবারের হোটেল আছে তারাই মূলত এ মাংসের ক্রেতা। পারিবারিক প্রয়োজনে ২/৩ কেজি করে কোরবানির সংগ্রহকৃত মাংস কিনে বাড়ি নিয়ে গিয়ে ঈদের আনন্দ উপভোগ করেন। আর হোটেল ব্যবসায়ীরা কিনে যান মজুদের জন্য।

তবে কোরবানির সংগ্রহকৃত মাংসের দাম বেশি হওয়া বিরূপ মন্তব্য করেন মহানগরীর শালবাগান এলাকার ক্রেতা বাবুল মিয়া।  

তিনি বলেন, প্রতিবছর এভাবে কোরবানির সংগ্রহকৃত মাংসের দাম বাড়লে সাধারণ মানুষ আর ভাসমান দোকান থেকে মাংস কিনতে আসবেন না। কোরবানির ঈদের দিন দোকানের দামেই যদি মাংস কিনতে হয় তাহলে ঈদের একদিন আগেই কেনা ভালো। অন্তত ভালো মানের মাংস পাওয়া যাবে। বেশি দাম দিয়ে এমন বাছাই করা মাংস কিনতে হবেন না।

বাংলাদেশ সময়: ২০৫০ ঘণ্টা, জুলাই ১০, ২০২২
এসএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।