ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

বগুড়ায় প্রস্তুত সোয়া ৪ লাখ কোরবানির পশু

কাওছার উল্লাহ আরিফ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০২৩ ঘণ্টা, জুন ১৫, ২০২২
বগুড়ায় প্রস্তুত সোয়া ৪ লাখ কোরবানির পশু খামারে কোরবানি পশু।

বগুড়া: প্রতিবছর কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে বগুড়া জেলার ১২টি উপজেলায় ব্যক্তি পর্যায়ে ও খামারিরা গবাদিপশু পালন করে থাকেন। বাড়তি লাভের আশায় কেউ কেউ তিন মাস আবার অনেকেই ছয় মাস আগে থেকে গবাদিপশু পালন করেন।

এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি।  এরইমধ্যে খামারি ও ব্যক্তি পর্যায়ে কোরবানিযোগ্য করে তোলা হয়েছে প্রায় সোয়া ৪ লাখ গবাদিপশু। জেলায় ৪৬ হাজার খামারিসহ ব্যক্তি পর্যায়ে বাসাবাড়িতে এসব পশু পালন করা হচ্ছে।

মঙ্গলবার (১৪ জুন) জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়। বগুড়ায় ইতোমধ্যেই এসব পশু বিক্রির জন্য জেলার বিভিন্ন হাটবাজারে তোলা হচ্ছে। দামদরে মিলে গেলে বিক্রিও করা হচ্ছে। জেলার বাইরের ব্যাপারিরাও কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। আবার বাইরের জেলার পশুও এ জেলার ব্যাপারিরা কিনে আনছেন।  

সবমিলিয়ে এ জেলায় কোরবানির পশুর কোনো সঙ্কট পড়বে না। দেশীয় পশুতেই কোরবানি সম্পন্ন করতে পারবেন বগুড়াবাসী এমনটা দাবি সংশ্লিষ্টদের। এদিকে গবাদিপশু মোটাতাজাকরণে ক্ষতিকর রাসায়নিক দ্রব্যাদি ব্যবহার রোধে সংশ্লিষ্টদের পক্ষ থেকে নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। খামারি ও পশু পালনকারী ব্যক্তিদের মধ্যে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে সচেতনতামূলক বার্তা। পাশাপাশি তাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।

জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, আসন্ন ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে জেলার মোট ১২টি উপজেলার ৪৬ হাজার ১৫ জন খামারি মোট ৪ লাখ ২৭ হাজার ২শ’ ৯৫টি গবাদি পশু কোরবানিযোগ্য করে তুলেছেন। এ বছর জেলায় কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে পশুর চাহিদা রয়েছে ৩ লাখ ৫৯ হাজার ৩শ’ ৭৫টি। চাহিদার অতিরিক্ত পশু রয়েছে ৬৭ হাজার ৯শ’ ২০টি।  এর মধ্যে সদর উপজেলায় (৩৪২০ জন খামারি) ৪৪ হাজার ৯৩৯টি, গাবতলীতে (৩০৩৯ জন খামারি) ৪০ হাজার ৩৯৩টি, সারিয়াকান্দিতে (৪৪৪৩ জন খামারি) ৩৮ হাজার ৮০৭টি, সোনাতলায় (৩৭৭৮ জন খামারি) ২৯ হাজার ১৮৮টি, শিবগঞ্জে (৪৪৬০ জন খামারি) ৪৩ হাজার ৮৪৫টি, কাহালুতে (২৪৯৬ জন খামারি) ৩৫ হাজার ৩১২টি, দুপচাঁচিয়ায় (৫৬৩০ জন খামারি) ৩২ হাজার ১৯৭টি, আদমদীঘিতে (২৪৩৪ জন খামারি) ৩০ হাজার ৬২টি, নন্দীগ্রামে (২২৬০ জন খামারি) ২৪ হাজার ৩৫৭টি, শেরপুরে (৫৩০৪ জন খামারি) ৪১ হাজার ১৮০টি, ধুনটে (৩৮৪৪ জন খামারি) ৩৭ হাজার ৭০৫টি এবং শাজাহানপুর উপজেলায় (৪৯০৭ জন খামারি) ২৯ হাজার ৩১০টি গবাদিপশু রয়েছে।

এ পশুগুলোর মধ্যে গরু (ষাঁড়, বদল ও গাভি) ২ লাখ ৬৭ হাজার ৭শ’ ৯৮টি, মহিষ ১ হাজার ৭শ ৩৩টি, ছাগল ১ লাখ ২৯ হাজার ৫শ’ ৩৮টি এবং ভেড়া ২৮ হাজার ২শ’ ২৬টি। গেল ঈদে এ জেলায় প্রায় সাড়ে ৩ লাখ পশু জবাই করা হয়।

জানা গেছে, এ জেলায় স্থায়ী হাট রয়েছে ৪৪টির মতো। কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে স্থায়ী হাটসহ প্রায় ৫৫-৭০টির মতো পশুর হাট বসে। এসব হাটে কোরবানিযোগ্য পশুগুলো বিক্রির জন্য তোলা হবে। ইতোমধ্যেই স্থায়ীসহ অস্থায়ী হাটে বিক্রি শুরু করা হয়েছে।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ডা. মো. শহিদুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, জেলার কোরবানিযোগ্য গবাদি পশু ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে চলে যাবে। আবার বিভিন্ন জেলার পশুও এ জেলায় আসবে। তাই ঈদে কোরবানির পশুর কোনো সঙ্কট হবে না বরং চাহিদার অতিরিক্ত রয়েছে।

তিনি জানান, বগুড়ায় গবাদি পশু মোটাতাজাকরণে খামারি ও ব্যক্তি পর্যায়ে কেউ যেন ক্ষতিকর রাসায়নিক দ্রব্যাদি ব্যবহার না করেন সেজন্য ইতোপূর্বেই প্রচারণা চালানো হয়েছে। পুরোদমে হাট শুরু হলে সেসব স্থানে মেডিক্যাল টিম বসানো হবে। জেলা কার্যালয়ের পাশাপাশি উপজেলা পর্যায়ে স্ব স্ব প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তারা এ কাজের দেখভাল করবেন।

বাংলাদেশ সময়: ১০১৫ ঘণ্টা, জুন ১৫, ২০২২
এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।