ঢাকা, শনিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

ফি ছাড়াই সদস্য হওয়া যাবে বাজুসের

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২৭ ঘণ্টা, মে ১৫, ২০২২
ফি ছাড়াই সদস্য হওয়া যাবে বাজুসের

পিরোজপুর: বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) সদস্য ছাড়া কোনো দোকান বা প্রতিষ্ঠান থেকে সোনার গহনা না কেনার আহ্বান জানিয়েছেন বাজুসের সাবেক সভাপতি ও স্ট্যান্ডিং কমিটি অন ডিস্ট্রিক্ট মনিটরিংয়ের চেয়ারম্যান ডা. দিলীপ কুমার রায়।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সায়েম সোবহান আনভীরের নেতৃত্বে আগামীতে জুয়েলারি শিল্প আরও সমৃদ্ধ হবে।

স্বর্ণশিল্পের হারানো ঐতিহ্য আবারও ফিরে আসবে। ডিলারদের কাছ থেকে স্বর্ণের বার কিনে ব্যবসা করতে হবে স্বর্ণব্যবসায়ীদের।

‘মেড ইন বাংলাদেশ’ লেখা স্বর্ণালংকার বিদেশে রফতানি করে রাজস্ব আয়ে বাংলাদেশ গার্মেন্ট শিল্পকেও ছাড়িয়ে যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন দিলীপ কুমার রায়। আগামী ২ মাসের মধ্যে বিনামূল্যে বাজুসের সদস্য হওয়া যাবে বলেও জানান তিনি।

রোববার (১৫ মে) দুপুরে পিরোজপুর পৌরসভার এসবি কমিউনিটি সেন্টারে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন পিরোজপুর জেলা কমিটি আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন বাজুসের সাবেক সভাপতি।

দিলীপ কুমার রায় বলেন, দেশের সব স্বর্ণব্যবসায়ীকে এক কাতারে এনে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। বাজুসের সদস্য হলে সেই সকল স্বর্ণব্যবসায়ীর সকল দায়-দায়িত্ব নেবে বাজুস কেন্দ্রীয় কমিটি।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই বাজুস পিরোজপুর জেলা কমিটির পক্ষ থেকে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সায়েম সোবহান আনভীরকে সম্মাননা ক্রেস্ট দেওয়া হয়। সভাপতি সায়েম সোবহান আনভীরের পক্ষে সম্মাননা ক্রেস্ট গ্রহণ করেন দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিনের বিজনেস এডিটর রুহুল আমিন রাসেল।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে দিলীপ কুমার রায় বলেন, বাংলাদেশের স্বর্ণ ব্যবসা একেবারে তলানিতে চলে গিয়েছিল। স্বর্ণ ব্যবসায় সুদিন ফিরিয়ে আনতে ব্যবসায়ীদের অনুরোধে দেশের শীর্ষ শিল্প পরিবার বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীর বাজুসের দায়িত্ব নিয়েছেন। ঠিকানাবিহীন বাজুসকে সারা দেশে ছড়িয়ে দিয়েছেন। বসুন্ধরার মধ্যে সুপরিসর দৃষ্টিনন্দন অফিস দিয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, দেশের স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের দীর্ঘদিন ধরে একটি স্বর্ণ নীতিমালার দাবি ছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সময়োপযোগী স্বর্ণ নীতিমালা করেছেন। স্বর্ণ শিল্পের হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে এই নীতিমালা সময়োপযোগী। আমাদের দেশের স্বর্ণকাররা বিদেশে গিয়ে স্বর্ণ তৈরি করে সুনাম কুড়িয়েছেন। আগামীতে মেড ইন বাংলাদেশ লেখা স্বর্ণালংকার বিদেশে রফতানি হবে। গার্মেন্ট শিল্পের অনেকেই এখন স্বর্ণ শিল্পে বিনিয়োগ করছে। আগামীতে ডিলারদের কাছ থেকে স্বর্ণের বার কিনে অলংকার বানাবেন ব্যবসায়ীরা। এতে সারা দেশে এক দরে স্বর্ণ বিক্রি হবে। প্রধানমন্ত্রী এই শিল্পকে গুরুত্ব দিয়েছেন। বাণিজ্যমন্ত্রী স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের ৫% ভ্যাট কমিয়ে ২% করার জন্য এনবিআরকে অনুরোধ করেছেন।

দিলীপ কুমার রায় বলেন, বাংলাদেশে জুয়েলারি মেলা কল্পনায়ও ছিল না। সায়েম সোবহান আনভীর বাজুসের দায়িত্ব নেওয়ার পর দেশে প্রথমবারের মতো মেলা করে দেশ-বিদেশে প্রসংশা কুড়িয়েছেন। এর ফলে দেশের স্বর্ণ শিল্প জেগে উঠেছে। স্বর্ণ ব্যবসা সুসংহত করতে চলতি বছরের শেষের দিকে ঢাকায় স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের মহাসম্মেলন হবে। স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা সিআইপি মর্যাদা পাবে। আগামী ২ মাসের মধ্যে বিনামূল্যে বাজুসের সদস্য হওয়া যাবে। ৩ মাসের মধ্যে জেলায় বাজুসের নতুন কমিটি গঠনের নির্দেশনা দেন তিনি।

অনুষ্ঠানের অতিথি বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন ল’ মেম্বরশিপের ভাইস চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমান বলেন, স্বর্ণ ব্যবসা বিশ্ব অর্থনীতির সাথে সম্পৃক্ত। বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীরের নেতৃত্বে স্বর্ণ ব্যবসা আলোর মুখ দেখেছে। তার আহ্বানে সারা দেশের স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা এক কাতারে শামিল হচ্ছে। ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে ঐক্যবদ্ধতার বিকল্প নেই নেই।

অতিথির বক্তব্যে বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন ডিস্ট্রিক্ট মনিটরিংয়ের সদস্য সচিব জয়নাল আবেদীন খোকন বলেন, সকল স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে বাজুসের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। স্বর্ণ ক্রয়-বিক্রয়ের সময় গ্রাহকের জাতীয় পরিচয়পত্র, ছবি এবং মুঠোফোন নম্বর মেমোতে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। স্বর্ণশিল্পের উন্নয়নে আগামীতে গোল্ড ব্যাংক প্রতিষ্ঠার দাবি জানান তিনি।

অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে বাজুস পিরোজপুর জেলার উপদেষ্টা দেলোয়ার হোসেন সকল স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে ঐক্যবব্ধ হওয়ার আহ্বান জানান। তিনি স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সুরক্ষায় বাজুস কেন্দ্রীয় নেতাদের সহযোগিতা কামনা করেন।

বাজুস জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক রিপন দত্তের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে আরও বক্তব্য দেন বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন ল’ মেম্বরশিপের সদস্য সচিব মো. রিপনুল হাসান, বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন ডিস্ট্রিক্ট মনিটরিংয়ের সদস্য পবিত্র চন্দ্র ঘোষ প্রমুখ।

পরে উন্মুক্ত আলোচনায় স্থানীয় স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা তাদের নানা সমস্যা তুলে ধরে সেগুলো সমাধানের জন্য কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে অতিথিদের ক্রেস্ট দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয়। পিরোজপুর জেলা এবং জেলার ৭ উপজেলার প্রায় ১০০ জন স্বর্ণব্যবসায়ী এই মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৮২৩ ঘণ্টা, মে ১৫, ২০২২
এনটি/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।