ঢাকা, রবিবার, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৯ মে ২০২৪, ১০ জিলকদ ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

সোনালী ব্যাংকের সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপিত

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৪০ ঘণ্টা, মার্চ ২৪, ২০২২
সোনালী ব্যাংকের সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপিত

ঢাকা: রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সোনালী ব্যাংকের যাত্রা শুরুর ৫০ বছর পূর্তি উৎসব উদযাপন করা হয়েছে।

ব্যাংকটির সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (২৪ মার্চ) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনর ফজলে কবির, অর্থ বিভাগের সচিব আব্দুর রউফ তালুকদার, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গর্ভনর ড. আতিউর রহমান।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে অতিথিরা কেক কাটেন এবং সোনালী প্রয়াস নামের একটি ম্যাগাজিনের মোড়ক উন্মোচন করেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার একজন এজেন্টের সঙ্গে অনলাইনে যুক্ত হয়ে এজেন্ট ব্যাংকিং কার্যক্রম উদ্বোধন করেন অর্থমন্ত্রী।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী বলেন, অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়েই আমি আস্থা রেখেছি দেশের ব্যাংকিংখাতের ওপর। প্রথমেই কমানো হয়েছে সুদের হার। কারণ দক্ষিণ এশিয়ার উন্নয়নশীল দেশগুলোর তুলনায় আমাদের দেশে সুদের হার ছিল অনেক বেশি। ওই সব দেশগুলোর সঙ্গে তুলনা করেই সুদ কমানো হয়েছে। ১৮-২০ শতাংশ সুদে ঋণ নিয়ে ব্যবসা করা খুব কঠিন। তাই ঋণের সুদহার কমানোর উদ্যোগ নিয়েছিলাম। সুদ না কমলে গত দুই বছরে করোনার কারণে কোনো ব্যবসায়ীকে খুঁজে পাওয়া যেত না। ১৮-২০ শতাংশ সুদ বিশ্বের কোথাও নেই। এত বেশি সুদের কারণে খেলাপি বেড়ে যায়।

মুস্তফা কামাল বলেন, সোনালী ব্যাংক মাত্র ২৬৭টি শাখা নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিল। এখন এক হাজার দুইশোর বেশি শাখা রয়েছে। সোনালী ব্যাংক অনেক ভালো জায়গায় আছে। ব্যাংক বাদ দিয়ে দেশের উন্নয়ন হয় না। সোনালী ব্যাংক দেশের উন্নয়নের অংশীদার।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির বলেন, ২০০০ সালে সোনালী ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ছিল ৪০ দশমিক ৮৫ শতাংশ। ২০২১ সালে এসে তা কমে দাঁড়িয়েছে ১৭ দশমিক ৭৬ শতাংশে। সোনালী ব্যাংক নিয়ে অনেকেই নেতিবাচক মন্তব্য করে। আমার মনে হয় সোনালী ব্যাংক নিয়ে মন্তব্য করা এখন অপ্রাসঙ্গিক হয়ে গেছে।

গর্ভনর বলেন, সোনালী ব্যাংকে ঋণ প্রসেসিং করতে অনেক সময় লাগে। যেটা আরও কমিয়ে আনতে হবে। সেবা দিতে গ্রাহককে অগ্রাধিকার দিতে হবে।  হলমার্কের ঘটনায় ঋণ বিতরণে কর্মকর্তাদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হওয়ার পরে ঋণ বিতরণ করতে অনীহা তৈরি হয়েছে। যেটা ঠিক না। ঋণ নিয়ে আদায় করে  ব্যবসা করতে হবে। সঠিকভাবে ঋণ দিলে কেউ বিপদে পড়বেন না। মামলাও হবে না, দুদক ডাকবে না। সোনালী ব্যাংকের এখনো ১৬টি লোকসানি শাখা রয়েছে। লোকসানি শাখা শূন্যতে নামিয়ে আনতে হবে।  

অর্থ বিভাগের সচিব আব্দুর রউফ তালুকদার বলেন, আমানত ও কর্মীর দিক দিয়ে সবচেয়ে বড় সোনালী ব্যাংক। খেলাপি ঋণ কমিয়ে অটোমেশনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে সোনালী ব্যাংককে। ৫ বছর পরে মানুষ আর ব্যাংকে আসবে না। এজন্য নতুন নতুন আর্থিক সেবা উদ্ভাবন করতে হবে। প্রয়োজনে একটি গবেষণা কেন্দ্র চালু করতে পারে সোনালী ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গর্ভনর ড. আতিউর রহমান বলেন, বেসরকারি ব্যাংকের উন্নয়ন যেভাবে প্রচার করা হয়, সরকারি ব্যাংকের উন্নয়ন সেভাবে প্রচার হয় না। সরকারি ব্যাংক নিয়ে প্রচার করা হলে মানুষের আগ্রহ আরও বাড়বে। ব্যাংকখাতের ওপর পুরো আস্থা ফিরে আসবে বলে আমার বিশ্বাস। সবকিছু মিলে সোনালী ব্যাংক অনেক ভালো করছে।

সমাপনী বক্তব্যে সোনালী ব্যাংকের চেয়ারম্যান জিয়াউল হাসান সিদ্দিকী সম্মেলনে উপস্থিত কর্মকর্তাদের আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করাার আহ্বান জানান। এ সময় কর্মীরা চেয়ারম্যানের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেন। আগামী ছয় মাসের মধ্যে সেবার মান উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দেন।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আতাউর রহমান প্রধান। অনুভুতি প্রকাশ করেন স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম অর্থসচিব মতিউল ইসলাম।

সোনালী ব্যাংকের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর, জেনারেল ম্যানেজার, ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার, শাখা ব্যবস্থাপকসহ অন্যান্য নির্বাহী এবং সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।

সোনালী ব্যাংকের কার্যক্রম শুরুর ৫০ বছর পূর্তি উৎসব উদযাপন করা হয়েছে দেশের সব জেনারেল ম্যানেজার অফিস, প্রিন্সিপাল অফিস ও শাখা কার্যালয়গুলোতে।

বাংলাদেশ সময়: ২০৩৬ ঘণ্টা, মার্চ ২৪, ২০২২
এসই/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।