ঢাকাঃ অবশেষে বুকবিল্ডিং পদ্ধতিতে পুঁজিবাজারে আসছে জনতা ব্যাংক লিমিটেড। প্রিমিয়াম নির্ধারণ নিয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত বিতর্ক এড়াতে গত বৃহস্পতিবার ফিক্সড প্রাইসের পরিবর্তে বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে জনতা ব্যাংকের শেয়ারের মূল্য নির্ধারণের নির্দেশনা দিয়েছে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (এসইসি)।
এসইসির সদস্য মোহাম্মদ ইয়াসিন আলী বাংলানিউজকে বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
এ ব্যাপারে জনতা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এসএম আমিনুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে পুঁজিবাজারে আসার জন্য এসইসি সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। তাই আপাতত আমরা বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে আসার কথা ভাবছি। তবে আগামী ২৩ সেপ্টেম্বর ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সভায় এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে। তিনি আরো বলেন, বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে বাজারে এলে আমরা হয়ত ৯০০ টাকার পরিবর্তে ১৫০০ টাকা প্রিমিয়াম পেতে পারি।
জানা গেছে, জনতা ব্যাংক লিমিটেড ১ কোটি সাধারণ শেয়ার ছেড়ে পুঁজিবাজার থেকে ১০০০ কোটি টাকা সংগ্রহের জন্য এসইসিতে আবেদন করেছে। ১০০ টাকা অভিহিত মূল্যের প্রতিটি শেয়ারের জন্য ৯০০ টাকা প্রিমিয়ামসহ ১০০০ টাকা সংগ্রহ করার প্রস্তাব করা হয়েছিল। মূলত প্রিমিয়ামের পরিমাণ বেশি দাবি করায় জনতা ব্যাংকের আইপিও প্রক্রিয়া বিলম্বিত হচ্ছিল।
জনতা ব্যাংক ২০০৮ সালের আর্থিক প্রতিবেদনের ভিত্তিতে সামগ্রিক বিবরণী তৈরি করে এসইসিতে জমা দিয়েছিল। পরে ওই হিসাব হালনাগাদ করে ২০০৯ সালের আর্থিক প্রতিবেদনের ভিত্তিতে গত ২৫ এপ্রিল বিবরণী জমা দেওয়া হয়। এর আগে ব্যাংকের পরিচালনা বোর্ড ২০০৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে আইপিও’র মাধ্যমে পুঁজিবাজারে শেয়ার ছাড়ার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়। পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির জন্য ব্যাংকটির ইস্যু ব্যবস্থাপকের দায়িত্ব পালন করছে আইসিবি ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড।
এ মুহূর্তে জনতা ব্যাংকের অনুমোদিত মূলধন ২০০০ কোটি টাকা। ব্যাংকটির বর্তমান পরিশোধিত মূলধন ৫০০ কোটি টাকা। ২০০৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত আর্থিক হিসাব অনুযায়ী ব্যাংকের শেয়ারপ্রতি আয় ১০০ টাকা ৬২ পয়সা। শেয়ারপ্রতি সম্পদের পরিমাণ ২৭৭ টাকা ২০ পয়সা।
২০০৮ সালে জনতা ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা ছিল ৭০০ কোটি টাকা ও নিট মুনাফা ৩১৯ কোটি টাকা। অপরদিকে ব্যংকের আমানতের পরিমাণ ২২ হাজার ১৩৩ কোটি টাকা ও বিতরণকৃত ঋণের পরিমাণ ১৪ হাজার ৪৬৭ কোটি টাকা হয়েছে । ২০০৮ সালে খেলাপি ঋণ আদায়ের পরিমাণ ছিল ৯২৪ কোটি টাকা।
উল্লেখ্য, স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে তৎকালীন ইউনাইটেড ব্যাংক ও ইউনিয়ন ব্যাংককে একত্রিত করে জনতা ব্যাংক নামে নতুন ব্যাংক চালু করা হয়। বর্তমানে সারা দেশে ব্যাংকটির প্রায় ৮৮০টি শাখা এবং ১৩ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন। বিশ্বব্যাংকের পরামর্শে ২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর জনতা ব্যাংককে পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিতে রূপান্তর করা হয়।
স্থানীয় সময়ঃ ১৬৫৩ ঘন্ট্২০ সেপ্টেম্বর ২০১০