ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

বিদেশি ঋণের চেয়ে রেমিটেন্সকে প্রাধান্য দেওয়ার তাগিদ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৫৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২০, ২০১০
বিদেশি ঋণের চেয়ে রেমিটেন্সকে প্রাধান্য দেওয়ার তাগিদ

ঢাকা: বিদেশি অর্থ সহায়তার চেয়ে প্রবাসী বাংলাদেশিদের পাঠানো রেমিটেন্সকে কাজে লাগাতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন দেশের অর্থনীতিবিদরা।

বিদেশি সহায়তার ব্যবহার ও জবাবদিহিতা বিষয়ক সোমবার এক আলোচনা সভায় তারা এ অভিমত দেন।



রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়নে এইড অ্যাকাউন্টিবিলিটি গ্র“প ‘যৌথ সহযোগিতা কৌশল: সাহায্য ও উন্নয়নের কার্যকারিতা’ শীর্ষক এ আলোচনা সভাটির আয়োজন করে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ)’র চেয়ারম্যান অর্থনীতিবিদ ড. কাজী খলীকুজ্জামান আহমদ জানান, বাংলাদেশের জাতীয় আয়ের মাত্র ২ শতাংশ বৈদেশিক ঋণ বা অর্থ সহায়তা হিসেবে আসে। অন্যদিকে, জাতীয় আয়ের ১০ থেকে ১১ শতাংশ আসে প্রবাসী বাংলাদেশিদের পাঠানো রেমিটেন্স থেকে।

তিনি আক্ষেপ করে বলেন, ‘প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্সকে কাজে না লাগিয়ে আমরা বিদেশ থেকে ঋণ গ্রহণ করি। ’

বিপুল পরিমাণ রেমিটেন্সকে কাজে লাগাতে সরকারকে ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি বিদেশি ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে চুক্তির সময় সরকার সংশ্লিষ্টদের আরও বেশি সতর্ক হওয়ারও পরামর্শ দেন তিনি।

এ ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘ঋণদাতাদের সঙ্গে যারা আলোচনা করবেন তাদের আরও বেশি দ হতে হবে। ’   

তিনি বলেন, ‘ঋণ যদি নিতেই হয় তবে তা অবশ্যই জাতীয় স্বার্থের অনুকূলে হতে হবে। ’

আলোচনা সভায় অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ অভিযোগ করে বলেন, ‘কোনো দাতা সংস্থা ১০০ টাকা ঋণ দিলে এর ৯০ টাকাই বাংলাদেশে আসে না। ’

বিদেশি ঋণের ‘পেছনের কথা’ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘পরামর্শক, বিমান ভাড়া, যন্ত্রপাতি, কম্পিউটার ও অফিস সরঞ্জামাদিসহ বিভিন্ন কিছু কিনতেই ঋণের বেশিরভাগ টাকা চলে যায়। ’

তিনি আরও বলেন, ‘বিদেশি ঋণের প্রক্রিয়ায় দুর্নীতি ও অপচয়ই প্রধান বিষয়। ’

আনু মুহাম্মদ আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে বছরে গড়ে ১ বিলিয়ন ডলার বিদেশি ঋণ আসে এবং প্রবাসীরা রেমিটেন্স পাঠায় প্রায় ১০ বিলিয়ন ডলার। ’

তিনিও আক্ষেপ করে বলেন, ‘১০ বিলিয়ন ডলার দেশে পাঠানোদের কোনো সম্মান দেওয়া হয় না, তারা এয়ারপোর্টসহ বিভিন্ন স্থানে হয়রানির শিকার হন। সেখানে ওই ১ বিলিয়ন প্রদানকারীরা এ দেশের নীতি নির্ধারণে অংশ নেন এবং তাদের দাপটই বেশি। ’

তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্সকে কাজে লাগাতে সরকারকে আগ্রহী হতে হবে। ’

তবে সভাপতির বক্তব্যে বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক অর্থ উপদেষ্টা ড. মিজ্জা এবি আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘দেশের জাতীয় বাজেটে বিদেশি ঋণকে অস্বীকার করার সময় এখনও হয়নি। ’

তিনি বলেন, ‘জাতীয় বাজেটের প্রায় ৪০ শতাংশ এখনও বিদেশি সহায়তা থেকেই আসে। ’

আলোচনা সভায় আরও অংশ নেন সাংসদ আনিছুল ইসলাম মণ্ডল, সাবেক অর্থ সচিব সিদ্দিকুর রহমান চৌধুরী, বেসরকারি সংস্থা ‘নিজেরা করি’র চেয়ারপারসন খুশি কবির প্রমুখ।  

বাংলাদেশ সময়: ১৩১০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২০, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।