ঢাকা, শুক্রবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

মুনাফা অর্জন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মূল লক্ষ্য নয় : বাংলাদেশ ব্যাংক

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৩৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৬, ২০১০
মুনাফা অর্জন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মূল লক্ষ্য নয় : বাংলাদেশ ব্যাংক

ঢাকা : কোনো দেশেরই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মূল লক্ষ্য মুনাফা অর্জন নয়। তাই মুনাফা বেশি হলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পারফরমেন্স ভালো, আর মুনাফা কম হলে খারাপ-এ ধারণা মোটেও ঠিক নয়।



‘বাংলাদেশ ব্যাংকের আয় বনাম ম্যাক্রো অর্থনীতির পারফরমেন্স’ শীর্ষক কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক সংক্ষিপ্ত মূল্যায়ন প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সফলতা ও ব্যর্থতা নির্ভর করে সঠিক মুদ্রানীতি প্রণয়ন ও এর সুষ্ঠু বাস্তবায়নের ওপর।

তাই সরকার ঘোষিত আর্থিক নীতি (ফিসকেল পলিসি) এবং দেশের সামষ্টিক অর্থনীতিকে সামনে রেখে সঠিক মুদ্রানীতি প্রণয়ন ও এর সুষ্ঠু বাস্তবায়ন নিশ্চিত করাই যে কোনো দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অন্যতম প্রধান কাজ।

সামষ্টিক অর্থনৈতিক উন্নয়নে সঠিক মুদ্রানীতি বাস্তবায়নের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংককে অনেক মূল্যও দিতে হয়, যা লাভ লোকসানের মাপকাঠিতে বিচার করা ঠিক নয় বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।    

প্রতিবেদনে বলা হয়, বিগত দু’বছর ধরে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা চলতে থাকায় বাংলাদেশ ব্যাংকের মুনাফা কম হয়েছে। কিন্তু মুনাফা কম হলেও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ, বিনিয়োগের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ও আর্থিক খাতের শৃঙ্খলা বজায় রাখার পাশাপাশি মুদ্রা নীতির সফল বাস্তবায়নের মাধ্যমে মূল্যস্ফীতিকে সহনীয় পর্যায়ে রেখে সামষ্টিক অর্থনৈতিক উন্নয়নে বাংলাদেশ ব্যাংক বেশ দক্ষতার পরিচয় দিয়েছে।

আর এ কারণে জিডিপি প্রবৃদ্ধি, মূল্যস্ফীতি, অভ্যন্তরীণ বাজেট ঘাটতি, ব্যাংকিং খাতের শৃঙ্খলা, টাকার বিনিময় হার, রিজার্ভ স্থিতি, ব্যালেন্স অব পেমেন্ট ও সর্বশেষ কান্ট্রি রেটিংসহ সার্বিক বিবেচনায় দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক অবস্থান অন্য যে কোনো সময়ের তুলনায় বেশ শক্তিশালী বলে প্রতিবেদনে দাবি করা হয়।

উল্লেখ্য, প্রতিবেশী ভারত, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার মুদ্রাস্ফীতির হার ডাবল ডিজিটে থাকলেও বাংলাদেশে তা ৮ শতাংশের নিচে।

এছাড়া কান্ট্রি রেটিং-এ সার্কভুক্ত দেশের মধ্যে ভারতের পরেই বাংলাদেশের অবস্থান।
 
প্রতিবেদনে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুনাফা কম হওয়ার কারণ সম্পর্কে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের আয়ের প্রধান দু’টি খাত হচ্ছে স্থানীয় মুদ্রায় অভ্যন্তরীণ বিনিয়োগ ও রিজার্ভের বৈদেশিক বিনিয়োগ।


এর মধ্যে সঠিক মুদ্রানীতি প্রণয়ের কারণে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে কোনো তারল্য সঙ্কট না থাকা, কলমানি হার স্বাভাবিক থাকা, রাজস্ব আয় বৃদ্ধির কারণে সরকারের ব্যাংক ঋণ নেওয়া কমে যাওয়া ইত্যাদি কারণে আভ্যন্তরীণ বাজার থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের আয় বেশ কমেছে।

অন্যদিকে দু’বছর ধরে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা চলমান থাকায় উন্নত দেশগুলোর কেন্দ্রীয় ব্যাংক তাদের নীতি নির্ধারণী সুদের হার সর্বকালের সর্বনিম্নে নামিয়ে আনে। ফলে রিজার্ভের বৈদেশিক বিনিয়োগের ক্ষেত্রেও সুদের হার অস্বাভাবিক হারে হ্রাস পায়।

এ পরিস্থিতিতে বৈদেশিক বিনিয়োগ অধিকতর ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় বিদেশে রাখা বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার তহবিল নিরাপত্তার স্বার্থে তুলে এনে তা শূন্য সুদে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে জমা রাখা হয়।
 
বাংলাদেশ সময় : ১৯৪৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৬, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।