ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

রাজশাহীর বাজারে সময়ের আগেই গোপালভোগ!

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩৯ ঘণ্টা, মে ৮, ২০২১
রাজশাহীর বাজারে সময়ের আগেই গোপালভোগ! সময়ের আগেই বাজারে বিক্রি হচ্ছে গোপালভোগ। ছবি: বাংলানিউজ

রাজশাহী: রাজশাহীর বাজারে সময়ের আগেই উঠেছে জাতআম খ্যাত ‘গোপালভোগ’। তবে, এই আম নামানোর কথা আগামী ২০ মে থেকে।

অর্থাৎ সময়েরও প্রায় দুই সপ্তাহ আগে এই আম গাছ থেকে ভাঙা হয়েছে। আর তাই বাজারেও মিলছে পাকা রঙের গোপালভোগ আম।

এতে আমের রাজধানীতে থাকা মানুষের মধ্যে এই আম নিয়ে দেখা দিয়েছে মিশ্র-প্রতিক্রিয়া। এখনই বাজারে এই আম খাবেন না খাবেন না; তা নিয়ে দ্বিধা-দ্বন্দ্বে ভুগছেন অনেকেই।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, প্রচণ্ড গরমের কারণে অনেকটা আগেই পেকে গেছে গোপালভোগ আম। তাই কোনো রকম রাসায়নিক ছাড়াই বিক্রি করার জন্য তারা পাকা আম বাজারে তুলেছেন। এটি নিঃসন্দেহে স্বাস্থ্যসম্মত। রাজশাহী জেলা প্রশাসন বলছে, সাধারণত ২০/২৫ মে মাসের আগে গোপালভোগ খাওয়ার জন্য উপযুক্ত হয় না। যে কারণে তারা এবছর গোপালভোগ আম নামানোর জন্য ২০ মে তারিখ নির্ধারণ করে দিয়েছেন। এই সময়ের আগে এই আম পরিপক্ক হয় না। তাই বাজারে অপরিপক্ক আম পেলে যাচাই-বাছাই করে শিগগিরই এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  

এদিকে শনিবার (৮ মে) দুপুরে রাজশাহী মহানগরীর সাহেব বাজার জিরোপয়েন্ট, বড় মসজিদের সামনে এবং সাহেব বাজার কাঁচাবাজারের সামনে এই গোপালভোগ আম বিক্রি করতে দেখা গেছে।

অনেকে ভ্যানে করে আম বিক্রি করছেন। অনেকেই আবার অন্যান্য ফলের সঙ্গেও আম বিক্রি করছেন। ১০০ থেকে ১২০ টাকা কেজি দরে এই আম বিক্রি হচ্ছে। বলা চলে তারা কেউই জেলা প্রশাসনের ‘ম্যাংগো ক্যালেন্ডার’ মানছেন না। অনেক চাষি ও ব্যবসায়ী আম পাকার নির্দিষ্ট সময়ের আগেই আম ভাঙছেন। ফলে এই অপরিপক্ক আমই এখন খেতে হচ্ছে ভোক্তাদের। মনের মধ্যে নানান দ্বিধা-দ্বন্দ্ব থাকলেও নতুন ফল হিসেবে অনেকেই শখ করে ছেলে-মেয়ের জন্য এই আম কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। রাজশাহী সাহেববাজার এলাকার ফল ব্যবসায়ী শাহীন আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, এখন যে আম নামছে আর যা বিক্রি হচ্ছে তা কেমিক্যাল বা রাসায়নিক মেশানো। গোপনে গাছ থেকে পাড়া হচ্ছে। এরপর তা গ্রাম থেকে রাজশাহী শহরে চলে আসছে। এজন্য প্রকৃত ফল ব্যবসায়ীরা প্রশাসনের ভয়ে সময়ের আগে আম বাজারে উঠাচ্ছেন না। কারণ ধরা পড়লে জরিমানা গুনতে হবে।  

এর আগে অনেকের জরিমানা হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

রাজশাহীর সাহেববাজারে ভ্যান করে আম নিয়ে আসা শাজাহান বাংলানিউজকে বলেন, এই আমি কোনো কেমিক্যাল বা রাসায়নিক মেশানো হয়নি। এবার রাজশাহীতে প্রচণ্ড তাপদাহ বয়ে যাচ্ছে। এ কারণে সময়ের আগেই পেকে যাচ্ছে আম। আবার আগাম জাতের আম রয়েছে। সেগুলো এখন পাকতে শুরু করেছে। এই আমগুলো গাছপাকা এবং সম্পূর্ণ স্বাস্থ্যসম্মত বলেও তিনি দাবি করেন। রাজশাহী ফল গবেষণাকেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আব্দুল আলিম বাংলানিউজকে বলেন, ভালো আম পেতে আরও একটু অপেক্ষা করতে হবে। আমচাষি, ব্যবসায়ী, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও ফল গবেষণাকেন্দ্রের সংশ্লিষ্ট সবাই বসে একমত হওয়ার পরই রাজশাহী জেলা প্রশাসন এবছরও গাছ থেকে আম ভাঙার সময় বেঁধে দিয়েছে। সেই সময় অনুযায়ী গাছ থেকে আম ভাঙা হলে এবং সেই আম বাজারজাত এবং খাওয়া হলে কোনো ঝুঁকি নেই বলেও মন্তব্য করেন এই বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা।

এদিকে বাজারে সময়ের আগেই আম বিক্রির ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অভিজিত সরকার বলেন, বেঁধে দেওয়া সময়ের আগে কোনোভাবেই আম নামানো যাবে না। যদি কেউ সময়ের আগে গাছ থেকে অপরিপক্ক আম ভাঙেন এবং বাজারে বিক্রি করেন তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শিগগিরই তারা বাজার মনিটরিং করে এ বিষয়টি দেখবেন বলেও উল্লেখ করেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৯ ঘণ্টা, মে ০৮, ২০২১
এসএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।