ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

সেরা করদাতা ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও সংস্থাকে সম্মাননা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১১, ২০২১
সেরা করদাতা ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও সংস্থাকে সম্মাননা

ঢাকা: ২০১৯-২০ অর্থবছরের সেরা করদাতা হিসেবে ১৪১ ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও সংস্থাকে ট্যাক্স কার্ড ও সম্মাননা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ব্যক্তিপর্যায়ে ৭৬ জনকে, কোম্পানি পর্যায়ে ৫৩টি ও অন্যান্য ক্যাটাগরিতে ১২টি ট্যাক্সকার্ড দেওয়া হয়।

‘জাতীয় ট্যাক্স কার্ড নীতিমালা-২০১০ (সংশোধিত)’ এর বিধান অনুযায়ী এই ট্যাক্সকার্ড দেওয়া হলো।

২০১৯-২০ অর্থবছরের সেরা করদাতা হিসেবে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া ক্যাটাগরিতে সম্মাননা পেয়েছে ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপ।

বৃহস্পতিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে জাতীয় রাজস্ব ভবনের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত ট্যাক্সকার্ড প্রদান ও সম্মাননা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

এ সময় বিশেষ অতিথি হিসেবে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন এবং সভাপতি হিসেবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, দেশের জনগণ কর দিতে চায়। কিন্তু আমরা সেগুলো নিতে পারি না। সেগুলো আমাদের নিতে হবে। আমরা ইনডিরেক্ট ট্যাক্সের তুলনায় ডিরেক্ট ট্যাক্স বেশি পাচ্ছি। ট্যাক্স আরও বেশি পাওয়ার জন্য আমাদের ব্যবস্থা নিতে হবে। আমাদের কর আদায় ব্যবস্থা আরও সহজ করতে হবে। আমরা এমনটা চাইছি যেন সবাই অনলাইনের মাধ্যমেই তাদের কর দিতে পারে। ডিজিটাল সিস্টেমে গেলে আমরা কর আরও বেশি পাব।

অর্থমন্ত্রী বলেন, আগে একটা রাস্তা-পুল-কালভার্ট করতে গেলে আমাদের বিদেশি অনুদানের দিকে তাকিয়ে থাকতে হতো। কিন্তু এখন আমরা নিজেদের টাকায় দেশের উন্নয়ন করছি। দেশের মানুষ চাইলে পারে না, এমন কিছু নেই। অনেকেই বলছেন আমাদের রেভিনিউ আদায় কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যের তুলনায় নিচে পড়ে আছে। আমরা মনে করি এটা আগের তুলনায় বৃদ্ধি পেয়েছে এবং আরও বাড়বে।

এনবিআর চেয়ারম্যানকে উদ্দেশ্য করে মুস্তফা কামাল বলেন, ট্যাক্স যদি বেশি থাকে তাহলে রেভিনিউটা সেভাবে আদায় হবে না। আপনারা আশেপাশের দেশগুলো দেখেন, সেটা দেখে ব্যবস্থা নিতে পারেন। আমি ওদের চাইতে বেশি নিতে চাই না, আবার কমও নিতে চাই না। রেট কমালে ট্যাক্স বাড়বে। আমরা রেভিনিউটা ব্যবসায়ী বান্ধব হিসেবে দেখতে চাই। ট্যাক্স নিয়ে দেশের মানুষের মধ্যে যে ভয়-ভীতি ছিল তা এখন আর নেই। এখন আমরা সিস্টেমেটিকভাবে এগোতে চাই।

জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেন, ২০১৯-২০ অর্থবছরে আয়করের পরিমাণ ৭৩ হাজার ৪২০ কোটি টাকা, যা মোট আহরিত রাজস্বের ৩৪ ভাগ। চলতি অর্থবছরে সরকারের ৩ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। এর মধ্যে আয়করের পরিমাণ ১ লাখ ৫ হাজার ৪৭৫ কোটি টাকা। আমরা দেখতে পারছি জনগণের মধ্যে কর দেওয়ার আগ্রহ বাড়ছে। এ জন্য কর পরিশোধ সংক্রান্ত সেবা আরও সহজ করা হয়েছে। এ বছর এনবিআরের সহযোগিতায় এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হবে বলে আমি আশা করি।

করোনা পরিস্থিতির কারণে জনগণের স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টি বিবেচনা করে একই স্থানে অতিরিক্ত লোক সমাগম পরিহার করে ট্যাক্সকার্ড প্রদান ও সম্মাননা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে ট্র্যাক্সকার্ড প্রাপ্ত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান পর্যায়ে ৫ জন করে মোট ১০ জন উপস্থিত ছিলেন।

কোম্পানি পর্যায়ে গ্রামীণ ফোন লিমিটেড, শেখ আকিজ উদ্দিন লিমিটেড, ব্রিটিশ আমেরিকান টোবাকো লিমিটেড ও স্ট্যান্ডার্ড চার্টাড ব্যাংক লিমিটেডের পাঁচজন। ব্যক্তি পর্যায়ে ছিলেন—আলহাজ সৈয়দ আবুল হোসেন, রুবাইয়াত ফারজানা হোসেন, হোসনে আরা হোসেন, লায়লা হোসাইন এবং হাজী মো. কাউস মিয়া। ট্যাক্সকার্ড প্রাপ্ত অন্যান্য ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছেও তাদের সম্মাননা পৌঁছে দেওয়া হবে।

এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, ব্যক্তিপর্যায়ে ট্যাক্সকার্ড প্রাপ্তদের মধ্যে বিশেষ শ্রেণিতে ক্যাটাগরি রয়েছে পাঁচটি। সেগুলো হলো- সিনিয়র সিটিজেন, গেজেটভুক্ত যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা, প্রতিবন্ধী, নারী ও তরুণ ক্যাটাগরি। এছাড়া আয়ের উৎস বা পেশার মধ্যে ক্যাট্যাগরি রয়েছে ১৩টি। এর মধ্যে আছে— ব্যবসায়ী, বেতনভোগী, ডাক্তার, সাংবাদিক, আইনজীবী, প্রকৌশলী, স্থপতি, হিসাববিদ, নতুন করদাতা, খেলোয়াড়, অভিনেতা-অভিনেত্রী, শিল্পী (গায়ক-গায়িকা) ও অন্যান্য।

ট্যাক্সকার্ড পাওয়া ব্যক্তি করদাতা, কোম্পানি বা অন্যান্য শ্রেণির করদাতারা ট্যাক্স কার্ডধারী হিসেবে বিবেচিত হবেন। এছাড়া, বিভিন্ন জাতীয় অনুষ্ঠান এবং সিটি করপোরেশন ও পৌরসভাসহ স্থানীয় সরকার আয়োজিত নাগরিক সংবর্ধনায় আমন্ত্রণ পাবেন। যেকোনো ভ্রমণে বিমান, রেল ও জলপথে সরকারি যানবাহনে টিকিটপ্রাপ্তিতে অগ্রাধিকার পাবেন। ট্যাক্স কার্ডধারীর স্ত্রী-স্বামী, নির্ভরশীল ছেলেমেয়ে ও নিজের চিকিৎসার জন্য সরকারি হাসপাতালের কেবিন সুবিধা প্রাপ্তিতে অগ্রাধিকার পাবেন। বিমানবন্দরে সিআইপি লাউঞ্জ ব্যবহারের সুবিধা পাবেন। তারকা হোটেলসহ সব আবাসিক হোটেলে বুকিং প্রাপ্তিতে অগ্রাধিকার পাবেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১১, ২০২১
এইচএমএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।